ঊষার আলো রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনার পরও উপজেলা নির্বাচনের মাঠ থেকে এখনই সরতে রাজি নন স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীর স্বজনরা। নানা কৌশলে ভোটের মাঠে থাকার চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। সংশ্লিষ্ট এমপি-মন্ত্রীরাও তাদের পক্ষে সামনে আনছেন নানা ‘যুক্তি ও অজুহাত’। দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলা বা সরাসরি তার কাছ থেকে নির্দেশনার অপেক্ষাও করছেন অনেকেই। এছাড়া নানাভাবে সময়ক্ষেপণ করতে চাইছেন তারা। বোঝার চেষ্টা করছেন দলের অবস্থান শেষ পর্যন্ত কতটা কঠোর হয়। এর পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চান তারা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে আওয়ামী লীগের। বিএনপির ভোটে না আসার ঘোষণার মধ্যে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের স্বার্থে ক্ষমতাসীন দল এমন সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এর পরই আলোচনায় আসে নির্বাচনে স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাব বিস্তার ও তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী করা নিয়ে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে যেতে হুমকি, তুলে নেওয়া এবং প্রচারণায় বাধা দেওয়াসহ নানা অভিযোগও ওঠে কয়েকজনের বিরুদ্ধে। শুরু থেকেই এমপি-মন্ত্রীদের নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার বা প্রার্থীদের সমর্থন না দেওয়ার নির্দেশনাও দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু দলের কোনো নির্দেশনাই তোয়াক্কা করছিল না তারা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আসেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এর পরই আসেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এমপি। পরে তাদের মধ্যে প্রায় দেড় ঘণ্টা চলে রুদ্ধদ্বার বৈঠক। এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।
দুপুর ১২টার দিকে মিটিং থেকে বেরিয়ে আসেন আব্দুর রাজ্জাক। বৈঠক থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিয়ে যাদের বিষয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। তারা একজন আমার মামাতো ভাই, আরেকজন আমার খালাতো ভাই। একজন রানিং চেয়ারম্যান, একজন মেয়র ছিল। আমরা স্থানীয়ভাবে তাদের সমর্থন দিয়েছি। তাদের জনপ্রিয়তাও আছে। এসব বিষয় দলের কাছে তুলে ধরেছি। তিনি আরও বলেন, এমপিরা নির্বাচন ও স্থানীয় প্রশাসনের ওপর হস্তক্ষেপ করুক, তা আওয়ামী লীগ পছন্দ করছে না। এটা নেত্রীর (আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার) সিদ্ধান্ত। তাই নির্বাচনে কারও পক্ষপাতিত্ব করার সুযোগ নেই। এলাকায় না গিয়েও ঢাকায় বসে ফোনে পক্ষপাতিত্ব করা যায়। কিন্তু আমরা সেটাও করব না। এ বিষয়েই কথা হয়েছে।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওবায়দুল কাদের বেরিয়ে যান। তার সঙ্গে সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় ত্যাগ করেন দলের বাকি নেতারা। এ সময় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, বৃহস্পতিবারের বিষয়গুলো নিয়ে আজকের বৈঠকে কথা হয়েছে।
মাদারীপুর সদর : প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনার পরও মাঠে আছেন মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাচনের দুই প্রার্থী। মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে যে দুজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন তাদের মধ্যে একজন আসিবুর রহমান খান মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ-সদস্য সাবেক নৌপরিবহণ মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খানের জ্যেষ্ঠপুত্র ও অপর প্রার্থী শাজাহান খানের চাচাত ভাই মাদারীপুর সদর উপজেলার দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পাভেলুর রহমান শফিক খান।
তবে প্রার্থী পাভেলুর রহমান শফিক খানের দাবি তিনি এমপি শাজাহান খানের স্বজন নন। তিনি এর আগে দু-দুবার উপজেলা নির্বাচনে নির্বাচিত চেয়ারম্যান এবং জেলা আওয়ামী লীগের মূলধারার সাংগঠনিক সম্পাদক। প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশের ব্যাপারে অপর প্রার্থী এমপিপুত্র আসিবুর রহমান খান বলেন, মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাচনে আমরা একই পরিবারের দুজন প্রার্থী, একজন আমার চাচা পাভেলুর রহমান শফিক খান আর আমি তার ভাতিজা আসিবুর রহমান খান। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা দুজন নির্বাচন না করলে তো সদরে চেয়ারম্যান পদে আর কোনো নির্বাচন হবে না।
কালিয়াকৈর : গাজীপুর-১ আসনের সংসদ-সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের ভাতিজা মুরাদ কবীর গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী। উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মুরাদ কবীর মন্ত্রীর স্বজন হয়ে নির্বাচনের ঘোষণায় কালিয়াকৈরে নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে মুরাদ কবীর বলেন, এমপি মন্ত্রীর স্বজন বলতে কী বুঝানো হয়েছে জানি না। আমি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর মামাত ভাইয়ের চাচাত ভাইয়ের ছেলে। এরই মধ্যে অনলাইলে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। যদি বাতিল করে মনোনয়ন তখন হয়তো নির্বাচন করব না। কিন্তু এরই মধ্যে প্রচারণা চালিয়েছি, নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা করছি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে। সারা বছর আওয়ামী লীগ করলাম এখন নির্বাচন করতে পারব না, এটা কেমন কথা?
উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও চেয়ারম্যান প্রার্থী কামাল উদ্দিন সিকদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা কঠোর বার্তা দিয়েছেন মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা উপজেলায় প্রার্থী হতে পারবেন না। অথচ মন্ত্রীর ভাতিজা নির্বাচন করছেন। তিনি প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি নির্বাচনি সভা করছেন।
পলাশ : নরসিংদীর পলাশ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী দুজন। বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দ জাবেদ হোসেন ও সাবেক মেয়র পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. শরীফুল হক। শরীফুল হক বলেন, আমি বরাবরই আমার দলের নেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি ১০ বছর মেয়র ছিলাম। গত বছর যখন মেয়র পদে মনোনয়ন পাই নাই তখন দলের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নির্বাচন থেকে বিরত ছিলাম। আগামী উপজেলা নির্বাচন প্রথম অবস্থায় দলীয় প্রতীকে হওয়ার ঘোষণা হলে যেহেতু আমি পৌরসভার উন্নয়নে কাজ করেছি পৌর এলাকার সর্বসাধারণের মতামতের ভিত্তিতে আমি প্রার্থী হয়েছি।
ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, হঠাৎ করে কোনো পদে আসিনি। নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে আজকের অবস্থানে এসেছি। এর মধ্যে বর্তমান এমপির সঙ্গে আমার ছোট বোনের বিয়ে হয়। অনেকেই প্রচার করে আমি এমপির আত্মীয়। কিন্তু আমাদের পারিবারিক ঐতিহ্য আছে। যে পরিবারে ৭০ বছরের আওয়ামী রাজনীতির ইতিহাস আছে, আমি সেই পরিবার থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। আমি এমপির ভরসায় নয় পলাশের জনগণের ভরসায় প্রার্থী হয়েছি। আমি আশাবাদী অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ইনশাআল্লাহ জয়লাভ করব।
রায়পুর : লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নানা কৌশলে পছন্দের প্রার্থী (এমপির ভগ্নিপতি) সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ মামুনুর রশীদকে ফের চেয়ারম্যান করার চেষ্টা চলছে। এজন্য তার পক্ষে দুই প্রার্থী নিয়ে পরোক্ষভাবে সমঝোতার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন এমপিসহ উপজেলার কয়েকজন সিনিয়র নেতার বিরুদ্ধে।
জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের এমপি গোলাম ফারুখ পিংকু বলেন, উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা ঘটবে না। দলের সভানেত্রীর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এমপির কোনো স্বজন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই ওই প্রার্থীকে সাংগঠনিক শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।
লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর ও সদরের একাংশ) আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন, শুধু আমার ভগ্নপতি নয়, কোন প্রার্থীর পক্ষেই আমার কোনো সুপারিশ নেই। আজকে দলের বর্ধিত সভায়ও বলে দিয়েছি আওয়ামী লীগের তিন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীই নির্বাচন করবেন। আমরা বিশ্বাস করি, শঙ্কা থাকলেও প্রতীক বরাদ্দের পর কোনো সংঘাতের ঘটনা ঘটবে না।
চুয়াডাঙ্গা সদর : চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের এমপি জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দারের ভাতিজা নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক। তিনি ২০১৯ সালে নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হন। এবারও তিনি চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আগামী ২১ এপ্রিল মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন। নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার বলেন, আমি বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। যেহেতু দলীয় প্রতীক থাকছে না তাই সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে নির্বাচনে আছি। যেহেতু মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি, পরবর্তী সিদ্ধান্ত এখনো নিইনি।
দামুড়হুদা : চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি আলী আজগার টগরের ছোট ভাই দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। তিনিসহ তার উপজেলায় মোট চারজন উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এমপির ছোট ভাই আলী মুনছুর বাবু দর্শনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান। তিনি ২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত হন। জানতে চাইলে আলী মুনছুর বাবু বলেন, আমি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। এখন আলাপ আলোচনা করে দেখি, দলীয় সিদ্ধান্ত শেষমেশ কী হয় তা দেখার প্রতীক্ষায় আছি।
বড়লেখা : মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় সংসদ-সদস্য শাহাব উদ্দিনের ভাগিনা এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোয়েব আহমদ নির্বাচনি প্রচারণার অংশ হিসাবে শুক্রবারও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেছেন। দুপুরে উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের গাংকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নির্বাচনি পথসভা করেছেন। পরে ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনি গণসংযোগ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরেও গণসংযোগ চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সোয়েব আহমদ বলেন, তিনি জনগণের ব্যাপক সাড়া পেয়ে মনোনয়ন দাখিল করেন। এমপি-মন্ত্রীর আত্মীয়-স্বজন প্রার্থী হতে পারবেন না এমন কোনো নির্দেশনা এর আগে তিনি পাননি। স্থানীয় সংসদ-সদস্য শাহাব উদ্দিন তার মামা হলেও দলের অন্য সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে তার যে সম্পর্ক তার (শাহাব উদ্দিন এমপি) সঙ্গেও ঠিক একই সম্পর্ক। ২০১৯ সালের নির্বাচনেও তিনি দলীয় নয়, সাধারণ মানুষের প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। এবারও জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে নির্বাচন করছেন।
ফুলবাড়ী : দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দিনাজপুর-৫ (ফুলবাড়ী-পার্বতীপুর) আসনের সংসদ-সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের ছোট ভাই উপজেলা নির্বাচন করার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন। ব্যাপক গণসংযোগ ও উঠোন বৈঠকও করছেন। তিনি জানান, সংসদ-সদস্যের ভাই হিসাবে নয়, তিনি নির্বাচন করবেন ফুলবাড়ীর সাধারণ মানুষের প্রার্থী হিসাবে। দীর্ঘ ৪০ বছর ফুলবাড়ীর রাজনীতিতে তার অবদানের পরিপ্রেক্ষিতে নিজস্ব ইমেজকে কাজে লাগিয়ে ২৯ মে তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে জয় নিয়ে ঘরে ফিরতে চান।
ঠাকুরগাঁও : প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনার পর ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ-সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম সুজনের পরিবারের সদস্যরা উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে এখনো মাঠে আছেন। এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও এমপি সুজনের চাচা মোহাম্মদ আলী বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আমার ছেলে আলী আসলাম জুয়েলের সঙ্গে বর্তমান এমপি সুজনের প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হয়। আমরা উপজেলা নির্বাচন যদি না করি তাহলে তো ভোটই হবে না। তবে দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নির্দেশ দিলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে জানান তিনি।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও এমপি সুজনের আরেক চাচা সফিকুল ইসলাম বলেন, এমপি পরিবারের সদস্যরা বা নিকট আত্মীয় প্রার্থী হতে পারবে না এ বিষয়ে দল থেকে আমরা কোনো নির্দেশনা পাইনি এখন পর্যন্ত। আমার বড় ভাই যিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, তিনি এখনো নির্বাচনের মাঠে আছেন। দলের আমি সহ-সভাপতি তাই এই বিষয়টি নিয়ে এখনো চিন্তা করছি না। তবে দলের চিঠিপত্র যদি আসে এ সম্পর্কিত তাহলে চিন্তাভাবনা করে দেখব।
বাকেরগঞ্জ : প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করে নির্বাচনি মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন সংসদ-সদস্যের আপন ছোট ভাই সালাম মল্লিক। তিনি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বাকেরগঞ্জে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন। সালাম মল্লিক বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) সংসদীয় আসনের সংসদ-সদস্য মেজর জেনারেল (অবসর) আবদুল হাফিজ মল্লিকের আপন ছোট ভাই। সালাম মল্লিক শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গণসংযোগ করেন। নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা আছে কিনা বা সরে দাঁড়াবেন কিনা এ বিষয়ে জানতে সালাম মল্লিকের ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তার আপন বড় ভাই বরিশাল ৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনের সংসদ-সদস্য মেজর জেনারেল (অবসর) আবদুল হাফিজ মল্লিক এমপির মোবাইলে কল দিলে তিনিও কল রিসিভ করেননি। যার ফলে এ বিষয়ে তার বক্তব্যও জানা যায়নি। সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন।
ঊষার আলো-এসএ