ঊষার আলো ডেস্ক : প্রিয় মানুষের মৃত্যু সহজে কেউ মেনে নিতে পারেননা। আর মৃতদেহের দ্রুত সৎকার করাই স্বাভাবিক ঘটনা। তবে এই স্বাভাবিক ঘটনার ব্যতিক্রম ঘটালেন এক ব্যক্তি। ২১ বছর ধরে মৃত স্ত্রীর সাথেই ঘর করছেন তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে থাইল্যান্ডের ব্যাংককের ব্যাং খেন শহরে। চার্ন জনওয়াটকাকাল নামের ৭২ বছরের এক ব্যক্তি তার মৃত স্ত্রীর সাথে ২১ বছর একই কক্ষে ঘুমিয়েছেন।
চার্ন একসময় রয়্যাল থাই আর্মির একজন ডাক্তার ছিলেন। তার স্ত্রী ছিলেন জনস্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী। ২০০১ সালে মৃত্যু হয় তার। তবে স্ত্রীকে তখনই বিদায় জানাতে প্রস্তুত ছিলেন না চার্ন। কাজে বাড়িতেই একটি কফিনে স্ত্রীর মৃতদেহ রেখে দিয়েছিলেন তিনি। কফিনবন্দি স্ত্রীর দেহের সাথে নিয়মিত কথাও বলতেন তিনি, যেন স্ত্রী বেঁচেই আছেন। আর স্ত্রীর কফিনের পাশেই ঘুমাতেন, এভাবেই কেটে গেছে ২১টা বছর। স্ত্রীকে শেষ বিদায় আর জানানো হয়নি তার। স্ত্রীর মৃত্যুর নিবন্ধিকরণ করিয়েছিলেন চার্ন কাজে কোনো আইনি জটিলতা ছিল না।
ডেইলি মেইলের খবরে বলা হয়েছে, মায়ের মৃতদেহের সাথে বাবার বসবাস করার বিষয়টি জানতেন চার্নের দুই ছেলে। তারা বাবাকে অনেক বোঝানোর চেষ্টাও করেছিলেন। তবে একমত হতে না পারায় দুজনেই সে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। মৃত স্ত্রীর দেহ বাড়িতে রাখার ঘটনাটি স্থানীয়রাও জানতেন, তবে বিষয়টিকে চার্নের অনন্ত প্রেমের প্রকাশ হিসেবেই দেখতেন তারা।
সম্প্রতি নতুন এক ভাবনা ভিড় করে চার্নের মাথায়। তার মৃত্যু হলে, স্ত্রীর দেহের যথাযথ সত্কার হবে না, এ চিন্তা থেকেই অবশেষে স্ত্রীকে শেষ বিদায় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চার্ন। এর জন্য একটি দাতব্য সংস্থার সাথে যোগাযোগ করার পর সেই সংস্থার কর্মীরা চার্নের বাড়ি গিয়ে প্রায় পঁচে যাওয়া কফিনটি উদ্ধার করে।
এই ঘটনার স্থিরচিত্র এবং ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যায়, দাতব্য সংস্থার কর্মীরা কফিনটি থেকে চার্নের স্ত্রীর কালো হয়ে যাওয়া কঙ্কালটি তুলেন ও সাদা কাপড়ে জড়িয়ে একটি নতুন কফিনে স্থানান্তরিত করছেন। এসময় আবেগে বিহ্বল হয়ে পড়তে দেখা যায় ৭২ বছরের চার্নকে।
(ঊষার আলো-এফএসপি)