UsharAlo logo
বুধবার, ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মোংলা বন্দর চ্যানেলের ১৯ কিলোমিটার ইনারবার ড্রেজিং কার্যক্রমের উদ্বোধন ১৩ মার্চ 

usharalo
মার্চ ১০, ২০২১ ৯:৩৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মোঃএরশাদ হোসেন রনি, মোংলা : মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের ১৯ কিলোমিটার ইনারবার ড্রেজিং কার্যক্রমের উদ্বোধন হবে ১৩ মার্চ শনিবার সকালে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ’র আয়োজনে জয়মনিরগোল ফুড সাইলোর পাশে ড্রেজিং সাইটে এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি থাকবেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ চৌধুরী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ’র চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ মুসা।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ’র প্রধান প্রকৌশলী ইনারবার ড্রেজিং এর প্রকল্প পরিচালক শেখ শওকত আলী জানান বন্দরের জেটিতে স্বাভাবিক জোয়ারে ৯.৫০ মিটারের অধিক ড্রাফটের জাহাজ আনার জন্য জয়মনিরগোল হতে বন্দর জেটি পর্যন্ত প্রায় ১৯ কিলোমিটার ব্যাপী ইনারবারে ২১৬.০৯ লক্ষ ঘনমিটার ড্রেজিং করা হবে। বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে এ প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৯৩ কোটি ৭২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে জুন ২০২২ সাল পর্যন্ত। ড্রেজিং কাজের ঠিকাদার হিসেবে চীনা কোম্পানি জেএইচসিইসি এবং সিসিইসিসি’র সাথে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ড্রেজিং এর মাটি ফেলার জন্য প্রায় ১৫শ একর জমির প্রয়োজন হবে। পশুর নদীর তীরবর্তী অল্প গভীরতা সম্পন্ন প্রায় ৫শ একর জমিতে জিওটেক্সটাইল টিউব দ্বারা ডাইক নির্মান করে মাটি ফেলা হবে। এছাড়া ব্যক্তি মালিকানাধীন ১ হাজার একর জমিতে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ প্রদান করে মাটি ফেলা হবে। ব্যক্তি মালিকানাধীন ১ হাজার একর জমির মধ্যে ইতিমধ্যে মোংলা উপজেলায় ৭শো একর জমি হুকুম দখল করা হয়েছে। তবে দাকোপ উপজেলার বাণিশান্তা, খাজুরা, আমতলা এবং ভোজনখালি গ্রামের ৩শো একর কৃষি জমির বিষয়ে জমির মালিকদের আপত্তি রয়েছে বলে জানা যায়। দাকোপ উপজেলায় জমি না পাওয়া গেলে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ’র জমিতে উচু করে মাটি ফেলা হতে পারে। প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তয়নের জন্য ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এর মাধ্যমে প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাই (ফিজিবিলিটি স্টাডি) করা হয়। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক পরিচালিত সমীক্ষা অনুযায়ি মোংলা বন্দরে ২০২৫ সালে ৮.৭২ লক্ষ টিইউজ কন্টেইনার এবং ২০৫০ সালে ৪৫.৩২ লক্ষ টিইউজ কন্টেইনার ও ৩০ হাজারের বেশী গাড়ী হ্যান্ডলিং এর সম্ভাবনা রয়েছে। রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মানের পর বার্ষিক ৪৫ লক্ষ মেট্রিক টন কয়লা কাঁচামাল হিসেবে এবং রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাঁচামাল মোংলা বন্দরের মাধ্যম আমদানী করতে হবে। ফলে ২০২১ সালের পর মোংলা বন্দরের ব্যবহার বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়। বর্ধিত চাহিদা সুষ্ঠু ভাবে মোকাবেলা করার জন্য মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। এ লক্ষ্যে বন্দরে অধিক ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডলিং এর জন্য পশুর চ্যানেলের ইনারবারে নাব্যতা বৃদ্ধি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা একান্ত জরুরী বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। প্রকল্পের পরামর্শক হিসেবে সিইজিআইএসকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ইনারবার ড্রেজিং বিষয়ে মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী খুলনা চেম্বার অব কমার্সের সদস্য এইচ এম দুলাল বলেন বাংলাদেশে যেসব কন্টেইনারবাহী জাহাজ আগমণ করে এসব জাহাজ পূর্ণ লোড অবস্থায় প্রায় ৯.৫০ মিটার ড্রাফটের হয়ে থাকে। মোংলা বন্দরের আউটারবার এবং ইনাবারে নাব্যতা সংকটের কারণে কন্টেইনারবাহী ৯.৫০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ মোংলা বন্দরে সরাসরি প্রবেশ করতে পারে না। মূলত এ কারনেই কন্টেইনারাইজড মালামাল আমদানি-রপ্তানীতে ব্যবসায়ীগণ মোংলা বন্দর ব্যবহারে উৎসাহী হয় না। ইনারবার ড্রেজিং সম্পন্ন হলে এ সংকট কেটে যাবে বলে আশাকরি।