UsharAlo logo
শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেলের সিগন্যাল ব্যবস্থা: সংস্কার ও উন্নয়ন জরুরি

usharalodesk
জুন ১০, ২০২৩ ১১:১০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট : রেলকে তুলনামূলক নিরাপদ বাহন হিসাবে গণ্য করা হয়। আর এ নিরাপত্তা নির্ভর করে মূলত রেলের সিগন্যাল ব্যবস্থার ওপর। সিগ্যনাল ত্রুটিপূর্ণ হলে বা সিগন্যালে সামান্য ভুল হলে ঘটে যেতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, যার সর্বশেষ উদাহরণ ২ জুন ভারতের ওড়িশা রাজ্যের বালেশ্বরে ঘটে যাওয়া রেল দুর্ঘটনা। ওই দুর্ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে রেলের সিগন্যাল ব্যবস্থার সংস্কার এবং সংশ্লিষ্টদের যথাযথ দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের তথ্য অনুযায়ী, এশিয়ার ঝুঁকিপূর্ণ রেল অবকাঠামোর দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। দেশে নামমাত্র স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল পয়েন্ট থাকলেও মূলত ‘ম্যানুয়ালি’ সিগন্যাল ব্যবস্থাই ভরসা। এ বাস্তবতায় রেলের সিগন্যাল ব্যবস্থার সংস্কার ও উন্নয়ন জরুরি হয়ে পড়েছে।

দেশে রেলের উন্নয়ন হচ্ছে না, তা বলা যাবে না। রেলব্যবস্থার পরিসর বাড়ছে। কাজ চলছে বড় বড় প্রকল্পের। গত এক যুগে চালু হয়েছে ১৫৪টি নতুন ট্রেন। অথচ ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে সিগন্যাল ব্যবস্থা, তা রয়ে গেছে সেই তিমিরেই। ফলে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। জানা যায়, রেলের সিগন্যাল বিভাগে লোকবলও সবচেয়ে কম।

এ বিভাগে অস্থায়ী ভিত্তিতে লোক নিয়োগ করা হলেও ঘাটতি থেকে যাচ্ছে ৭০ শতাংশের বেশি। যে ৩০ শতাংশ দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে, তারাও মূলত অদক্ষ। বস্তুত রেলের সিগন্যাল ব্যবস্থার উন্নয়নের বিষয়টি হচ্ছে উপেক্ষিত। এ অবস্থার পরিবর্তন জরুরি বলে মনে করি আমরা।

উন্নত দেশগুলোতে রেল ব্যবস্থার অকল্পনীয় উন্নতি হয়েছে। অথচ বাংলাদেশ জনবহুল দেশ হওয়া সত্ত্বেও গণপরিবহণের এই জনপ্রিয় মাধ্যমে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। একটি পরিবহণ ব্যবস্থা তখনই জনপ্রিয়তা পায়, যখন তার নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। নিরাপদ ট্রেন চলাচলে চালক (লোকোমাস্টার), স্টেশন মাস্টার, গার্ড (পরিচালক), পয়েন্টসম্যান-এ চারটি পদ খুবই জরুরি। এসব পদে নিয়োগপ্রাপ্তরাই মূলত ট্রেন পরিচালনা করেন। এর কোনো একটিতে ঘাটতি থাকলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

জানা যায়, দেশের রেলওয়েতে এসব পদের সব কটিতেই দক্ষ জনবলের ঘাটতি রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, রেলওয়ের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিদিন তিনবার পর্যায়ক্রমে পুরো লাইন, সিগন্যাল ও ব্রিজ পরিদর্শন করার কথা। একইসঙ্গে প্রতিটি ট্রেন ছাড়ার আগে ইঞ্জিন ও বগিগুলোর বিশেষ বিশেষ যন্ত্রাংশ ও চাকা পরীক্ষা করার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না।

তাই আমরা জোরের সঙ্গে বলতে চাই, রেলওয়েতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল নিয়োগ দেওয়া হোক। সিগন্যাল ব্যবস্থার সংস্কার ও আধুনিকায়ন করা হোক। সর্বোপরি রেললাইনগুলোর সংস্কার করে এবং নতুন ইঞ্জিন যুক্ত করে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিমুক্ত করা হোক।

ঊষার আলো-এসএ