UsharAlo logo
বৃহস্পতিবার, ১৩ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লকডাউনের তাড়ার সাথে নগরীতে ধুলি ঝড়ের দাপট

ঊষার আলো
এপ্রিল ৪, ২০২১ ১১:৩৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : করোনা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় দেশে দ্বিতীয় দফায় সোমবার (০৫ এপ্রিল) থেকে লকডাউন শুরু হচ্ছে। পরবর্তীতে ঘর থেকে বের হতে না পারার শঙ্কায় রবিবার (০৪ মার্চ) সকাল থেকেই খুলনার বাজারগুলোতে ছিল উপচে পড়া ভীড়। লকডাউনে সপ্তাহব্যাপী গৃহবন্দী থাকার লক্ষ্যে বড় বাজার, শপিংমল ও ওষুধের দোকানে কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করে নগরবাসী। তবে সন্ধ্যার ঝড়ে কর্ম ব্যস্ততায় অনেকটাই ছন্দপতন ঘটে। লকডাউনের ভয়ের সাথে যুক্ত হয় ঝড়ো হাওয়ার দাপট।
বড় বাজারের নিত্য প্রয়োজনীয় দোকানে সকাল থেকেই কেনাকাটার ধুম পড়ে। তবে সামাজিক দূরত্ব মানার ব্যাপারে অধিকাংশ ক্রেতার অনীহা লক্ষণীয়। মাস্ক ব্যবহারেও ছিল শিথিলতা। অধিকাংশ ক্রেতার মুখে ছিল না মাস্ক। দোকানদাররা বলছে, লকডাউনের ঘোষণাতে প্রতিটি দোকানে ক্রেতাদের চাপ বেড়েছে। লকডাউনের খবর প্রচারিত হওয়ার পর থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্য কিনতে ভিড় জমায় ক্রেতারা। সেই সাথে রমজান মাস আসন্ন হওয়ায় ক্রেতারা বেশি করে কেনাকাটা করছেন। তবে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে অনেকে চাহিদা মতো পণ্য না কিনেই বাড়ি ফিরেছেন।
কয়েকজন ক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, লকডাউনের ঘোষণা পেয়ে অন্যান্য মাসের থেকে অতিরিক্ত নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনে রাখছে। চাল ১ বস্তার জায়গায় ২ বস্তা, ডাল ৪-৫ কেজি, তেল ৫ লিটারের ১-২ বোতল, পেঁয়াজ, ছোলা, মুড়ি, খেজুরসহ অন্যান্য পণ্য স্বাভাবিক মাসের থেকে একটু বেশিই কিনছেন। আবার রমজান মাসের জন্যও অনেকে বাজারে এসেছেন। তারমধ্যে ব্যতিক্রমও ছিল কয়েকজন ক্রেতা। লকডাউনের আতঙ্কে অতিরিক্ত পণ্য না কিনে শুধু প্রয়োজনীয়টুক কিনেই বাড়ি ফিরেছেন। যেহেতু নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বাজার খোলা থাকবে তাই অতিরিক্ত কেনাকাটা করিনি।
এদিকে পাইকারি ওষুধের দোকানের অবস্থাও একইরকম। করেনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণায় ফার্মেসীগুলোতে ক্রেতাদের সমাগম ছিল চোখে পড়ার মতো। খুলনার ওষুধের পাইকারি বাজার হেরাজ মার্কেট ঘুরে দেখা যায় এ দৃশ্য। শ্বাসকষ্টের ওষুধের সাথেসাথে ওটিসি মেডিসিনগুলোও কিনছেন ক্রেতারা।
আবার লকডাউনের খবর শুনে অনেকেই তড়িঘড়ি করে খুলনায় এসে ডাক্তার দেখিয়ে গেছেন। সে কারণেও ছিল ওষুধ কেনার ধুম। শুধু ওষুধের দোকানেই নয় প্রচন্ড ভিড় লক্ষ করা যায় সার্জিক্যালের দোকানগুলোতেও। বিভিন্ন মানের ও দামের মাস্কের বিক্রি বাড়ায় সার্জিক্যাল দোকানের সামনে ক্রেতাদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এছাড়াও অক্সিজেন ফ্লোমিটার, হ্যান্ড সেনিটাইজারের বিক্রিও লক্ষণীয়।
হঠাৎ করেই বছরের প্রথম ঝড় খুলনা নগরীতে তার তান্ডব চালায়। ঘন্টাব্যাপী এ তান্ডব রবিবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাতটার দিকে ঘটে। প্রচন্ড গতির ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেলেও বৃষ্টি ছিল অনেক কম। বাতাসের তান্ডবে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফুটপাতের ভাসমান দোকানের কিছুটা ক্ষতি হলেও তেমন ক্ষয়-ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। তবে এ ঝড়ে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে নগরবাসী।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, খুলনা নগরসহ আশপাশের অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হয়েছে। তাই তাপমাত্রা কমবে কিছুটা। তবে বৃষ্টি না হলে তাপদাহ আগের মতোই থাকবে। রাতে কিছুটা কমতে পারে তাপমাত্রা। উত্তর আন্দামান সাগর ও মিয়ানমার উপকূলে অবস্থানরত নিম্নচাপটি উত্তর-উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে। এই লঘুচাপের প্রভাবে রংপুর, সিলেট, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের দুই এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।

(ঊষার আলো-এমএনএস)