ঊষার আলো প্রতিবেদক : খুলনায় লাফিয়ে-লাফিয়ে করোনা সংক্রমন বৃদ্ধিসহ মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়া দরুন খুলনা জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি পুনরায় ২৯ জুন হতে আবার ৭ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে। যদিও ২২ জুন হতে দেয়া সংক্রমন রোধে টানা ৭ দিনের কঠোর লকডাউন সংক্রমন রোধে তেমন কোন ফলপ্রসূ দিক পরিলক্ষিত হয়নি। তাছাড়া কেবল খুলনা নয় দেশের সার্বিক করোনা সংক্রমনের পরিস্থিতি উর্দ্ধমূখি হওয়ার দরুন ১ জুলাই হতে সারাদেশব্যাপী ৭ দিনের সর্বাত্বক কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সর্বাত্মক এ ৭ দিনের লকডাউনের আতংকের কারণে সাধারণ ক্রেতারা নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিশেষ করে চাল, ডাল, তৈল, আলু, লবন, পেয়াজ-রসুন, মাছ মাংশ কিনে ঘরে মুজুত করে রাখার জন্য বাজারমুখি হওয়ার কারণে বাজারে বেশ ভীড় পরিলক্ষিত হয়েছে। সকলের একটাই চিন্তা লকডাউনে যদি ঘর হতে সম্পূর্ন বের না হওয়া যায় তবে কি হবে? তাই প্রয়োজনীয় সওদা টুকু কিনে রাখি এমন একই উত্তর মিলেছে দৌলতপুর বাজারে আসা একাধিক ক্রেতার।
সরেজেমিনে দেখা যায়, বুধবার (৩০ জুন) দৌলতপুর পাইকারী কাঁচাবাজারে পেঁয়াজ, রসুন, আলুর বাজারে চরম কেনাবেচার ধুম পড়ে। বিশেষ করে মহিলাদের উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষিত হয়েছে। অনেকের ধারণা বাড়ী হতে বাইরে বেড়তে পারবেনা আর পরিবহন বন্ধ থাকবে। তাই আগে ভাগেই চাল,ডাল, তেল, পেয়াজ, রসুন আলুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো মজুদ করে রাখবে। এ কারণে বাজারে ব্যাপক সমাগম ঘটে। সর্বাত্বক লকডাউনের খবরে দৌলতপুর বাজারে অনেকটাই আগুন লাগার মতো অবস্থা বিরাজ করেছে।
লকডাউনে খবরে চাল, তেল, মাছ, মাংসের দোকানেসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করার জন্যও বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। বিশেষ করে সয়াবিন তেলের দোকানে উপরে পড়া ভীড় পরিলক্ষিত হয়েছে। সয়াবিন তেল বিক্রেতা জয়নাল বলেন, প্রতিদিন স্বাভাবিক কেনাবেচা করি। কিন্তু বৃহস্পতিবার হতে সর্বাত্বক কঠোর লকাডাউনের কারণে ক্রেতা হুড়মুড় খেয়ে তেল কিনতে আসে। ক্রেতারা তেল মজুদের উদেশে সর্বচ্চো ২০ লিঃ পর্যন্ত খুচরা তেল কিনেছে। বোরহান এন্টার প্রাইজের মালিক চাউল ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন বলেন, লকডাউনের ঘোষনায় দৌলতপুর প্রতিদিনের তুলনায় ক্রেতা সমাগম বেড়েছে। ক্রেতার প্রায় সকল পণ্য দিয়েই এক সপ্তাহের খাবার মজুদ করছে বলে জানান এ ব্যবসায়ী। মুরগী বিক্রেতা নয়ন জানান, মুরগীর বাজারে দামের কোন পরিবর্তন আসেনি।, কক, লেয়ার, প্যারিস মুরগী প্রতিদিনের তুলনায় লকডাউনের কারণে একটু বেচাবিক্রি ভালো হয়েছে।
খুচরা মুুুদি দোকানদার আজাদ বলেন, লকডাউনের কারনে অনেকেই এক সপ্তাহের নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্য সরবরাহ করার জন্য বাজারে এসেছে। পেয়াজ, রসুন, আলু বাজারে প্রতিদিনের ন্যায় দ্বিগুন বিক্রি হয়েছে। সবচেয়ে মহিলারা বেশি ভীড় করছে। লকডাউনের কথা শুনে বাজারে ভীড় সর্বস্তরের মানুষ।
চা বিক্রেতা মীর হোসেন বলেন, লকডাউনের কথা শুনে দৌলতপুর পাইকারী বাজারে যে পরিমানে মহিলাদের ভীড় আর যে পরিমানে পেয়াজ কেনাবেচা হয়েছে এমন খুব কমই হয়। সবমিলিয়ে লকডাউনের ঘোষনায় ক্রেতাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতংঙ্ক আর অস্থিরতার, যার প্রভাব পড়ে সমগ্র বাজার জুড়ে। ব্যবসায়ীরাও এ করোনার দূর্যোগময় মুহুর্তে কিছুটা ভালো কেনাবেচা করতে পেরে বেশ খুশি।
(ঊষার আলো-এমএনএস)