বিশেষ প্রতিনিধি : মহানগরী খুলনায় দিন দিন প্রসারের পাশাপাশি তৈরী হচ্ছে নতুন নতুন স্থাপনা। আর এসব স্থাপনার নির্মাণ কাজে কর্মরত রয়েছেন কয়েক হাজার শ্রমিক। তারপরও চাহিদার তুলনায় দক্ষ ও পর্যাপ্ত শ্রমিক পাচ্ছে না অবকাঠামো বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান। এতে করে বাড়তি সময় ও অর্থ নষ্ট হচ্ছে। আবার দক্ষ শ্রমিকদের অভাবে মানসম্মত কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
তবে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীকে এসব পেশায় দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে তারা যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবেন। তেমনি বিশাল সংখ্যক মানবসম্পদ গড়ে উঠবে।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, বিগত ১০ বছরে মহানগরী খুলনার চিত্র অনেটাই পাল্টে গেছে। হাতে গোনা কয়েকটি সুউচ্চ ভবন দেখা গেলেও এখন সে সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। মহানগরীর মেট্রোপলিটন থানার সংখ্যাও বেড়েছে ৮টি। আবার সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড সংখ্যা ৩১টি হলেও রাজনৈতিকদলগুলোর সাংগঠনিক ওয়ার্ড সংখ্যা ৩৬। খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী সংস্থাটি বিগত পাঁচ বছরে সাড়ে ৬ হাজারের বেশী ভবন বা স্থাপনা তৈরী ও নকশার অনুমোদন দিয়েছে। এছাড়া প্রতিবছর অনুমোদন ছাড়া ছোটখাট ব্যক্তিগত আধাপাকা স্থাপনা গড়ে উঠছে।
এসব স্থাপনা নির্মাণ কাজে রাজমিস্ত্রি, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি, টাইলস ফিটিংস, স্যানেটারি মিস্ত্রি, রংমিস্ত্রি, কাঠমিস্ত্রিসহ কমপক্ষে ১০/১২টি পেশার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ জড়িত। কিন্তু সামগ্রিক চাহিদার তুলণায় এই শ্রমিকের সংখ্যা অনেকটাই কম। কিন্তু দীর্ঘদিনে শ্রমিকদের প্রশিক্ষিত করতে তেমন উদ্যোগ নেই। একান্তই ব্যক্তিগতভাবে এসব শ্রমিকরা কাজ শিখছেন। তবে রিহ্যাবসহ কিছু ডেভলপার প্রতিষ্ঠানও নিজস্ব উদ্যোগে কিছু কর্মকান্ড পরিচালনা করলেও প্রয়োজনের তুলনায় কম।
গৃহনির্মাণ শ্রমিক মো: ইব্রাহিম বলেন, আমরা নিজে নিজেই কাজ শিখেছি। এই কাজ হাতে-কলমে শেখার। তাই লেখাপড়ার কম সময়ের ট্রেনিং হলে ভাল হতো। এখন যত কাজ তার চেয়ে শ্রমিকও কম।
খুলনার একাধিক ডেভলপমেন্ট প্রোপার্টিজের প্রতিনিধি জানান, তারা কেউ কেউ নিজস্ব উদ্যোগ ও নিয়মের মধ্যে থেকে কর্মরত শ্রমিকদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলেন। এতে কাজের মান অক্ষুন্ন থাকে। তবে এটি ব্যাপকভাবে করা হলে দেশে দক্ষ শ্রমিক গড়ে উঠবে।
জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সদস্য শ্রমিক নেতা খলিলুর রহমান বলেন, ‘শ্রমিক শ্রেণি সব সময়ই বঞ্চনার মধ্যে থাকে। গৃহনির্মাণ ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও গুরুত্বপুর্ণ। এখন এই খাতে কাজের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু দক্ষ শ্রমিক কম। আবার আমাদের খুলনা অঞ্চলে নানা দুর্যোগে মানুষ বেকার হচ্ছে। এসব মানুষের কর্মসংস্থানের সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভাবা উচিত।