ঊষার আলো ডেস্ক : ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে কলেজ শিক্ষক স্বপনকুমার বিশ্বাস ও ছাত্রের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনায় নড়াইলের জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) ও স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তাসহ দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করতে হবে। নড়াইলে শিক্ষক ও ছাত্রের গলায় জুতার মালা পরানোকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ রাষ্ট্রের গলায় জুতার মালা পরানো মনে করি। আমরা কি তবে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের নাগরিক হওয়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলছি? শিক্ষক লাঞ্ছনা এখন শিক্ষা ও শিক্ষক হত্যায় উপনীত হয়েছে। সাভারে একজন শিক্ষককেও সবার সামনে পিটিয়ে মারা হয়েছে। এসবের বিরুদ্ধে সকলকে রুখে দাঁড়াতে হবে। সাম্প্রদায়িকতা ও শিক্ষক হত্যা-নিপীড়নের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি। দ্রুত সব শিক্ষক ও পেশাজীবীদের সক্রিয়তায় সাম্প্রদায়িক দুষ্টচক্রকে রুখে দিতে হবে।
বুধবার (২৯ জুন) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিএমএ মিলনায়তনে সম্মিলিত নাগরিক উদ্যেগের আয়োজনে নড়াইল, বাগেরহাট, বরিশাল বিশ^বিদ্যালয় ও আশুলিয়ায় অব্যহত সাম্প্রদায়িক সহিসংতা প্রতিরোধে নাগরিক সমাজের করণীয় বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএমএর সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রায়ের মহল কলেজের ড. আবুল কালাম আজাদ, লেখক সাংবাদিক গৌরাঙ্গ নন্দী, খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল ফজল, গৈমন্তী শুক্লা কাবেরী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি হুমায়ুন কবির ববি, শরিফুল ইসলাম সেলিম, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার কুন্ডু, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বীরেন্দ্রনাথ ঘোষ, বাসদের সদস্য সচিব কোহিনুর আক্তার, ডা: শ্যামল চন্দ্র বড়াল, ক্ষুধা মুক্ত আন্দোলনের সভাপতি আহসান হাবিব, অধ্যক্ষ হারুণ আর রশীদ, নিরাপদ সড়ক চাই এর সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব, রতন কুমার নাথ, সাংবাদিক এম সাইফুল ইসলাম, মো: মফিজুল ইসলাম, হাজী আ: মালেক কলেজের প্রভাষক অনিরুদ্ধ , মো: ইমরান জাহান আরাফাত, ডা. সমিত রায়, পুষ্কর মন্ডল, মামুন আব্দুল্লাহ, আসাবুর রহমান, মো: মিল্লাত হোসেন, পার্থ প্রতীম সাহা, আব্দুল করিম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালি জাতি রাষ্ট্র। বারবার মার খাচ্ছে সাম্প্রদায়িকতার হাতে। বক্তারা বলেন, স্বপনকুমার বিশ্বাসের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বাংলাদেশকে একটা ধর্মতাত্ত্বিক মনোলিথিক রাষ্ট্র বানানোর চেষ্টা চলছে, যেখানে শুধু এক ধর্মের মানুষ বসবাস করবে। হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসবসহ অসংখ্য ম-পে হামলা হয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রের পক্ষ হতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এই অস্বীকৃতির রাজনীতি দেশের সনাতন বা অন্যধর্মের মানুষের নিরাপত্তার ঝুঁকিকে অনেকখানি বাড়িয়ে দিয়েছে। একটি ঘটনারও চুড়ান্ত বিচার হচ্ছে না। ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক শক্তির দীর্ঘ ছায়া আমাদেরকে ক্রমাগত গ্রাস করছে। আফগানিস্তান আমাদের ঘাড়ের পাশে শ্বাস ফেলছে। সভায় আগামী ২ জুলাই শনিবার খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সংবাদ সম্মেলনের মধ্যেদিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে।