এম এন আলী শিপলু : শীতের সময় সবজির মেলা হলেও দাম বাড়ছে। সব সবজিই এখন গত সপ্তাহের তুলনায় ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বেড়েছে মাছের দাম।
মাছ বিক্রেতারা বলছেন, মাছের খাবারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পর থেকেই দামে পরিবর্তন এসেছে। এছাড়া গ্রামাঞ্চলে অতিরিক্ত শীতের কারণে মাছ সরবরাহ কম হচ্ছে, ফলে মাছের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাজারে সরু চালের দামও বেড়েছে। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে তিন টাকা বাড়তি দামে। আমন মৌসুমেও বাজারে চালের দামে কোনো প্রভাব পড়েনি। শুধু মোটা চালের দাম সামান্য কমেছিল। তবে কয়েক দিনের ব্যবধানে সরু চালের দাম কেজিতে ৩ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
মিস্ত্রিপাড়া বাজারের চাল ব্যবসায়ী মো. আশিকুর বলেন, আমন মৌসুমের চাল বেশির ভাগই মোটা হয়। এজন্য এ সময় মোটা চালের দাম না বাড়লেও সরু চালের সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে। বাজার ও মান ভেদে সরু মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ভালো মানের নাজিরশাইল চালের কেজি ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা।
সবজির সরবরাহে ঘাটতির কথা বলে বাড়ানো হচ্ছে সবজির দাম। একই বাজারের সবজি বিক্রেতা ইনসান বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় পাইকারি বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। বেশি দামে কেনা বলে আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। যদিও শেষ কয়েক সপ্তাহ সবজির দাম অনেক কম ছিল।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবারের বাজারে কাতল মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩শ’ টাকায়, তেলাপিয়া ২শ’ ২০ টাকায়, পাবদা ৪শ’ ৫০ টাকা, মলা ৩শ’ ৬০ টাকা, শোল ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা, শিং মাছ ৫শ’ ৫০ থেকে ৬শ’ টাকা, পাঙাশ ১শ’ ৭০ থেকে ১শ’ ৮০ টাকা, কৈ ২শ’ ৬০ টাকা, বোয়াল ৫শ’ ৫০ থেকে ৬শ’ ৫০ টাকা, টেংরা ছোটগুলো ৫শ’ আর বড়গুলো ৬শ’ থেকে সাড়ে ৬শ’ টাকা, রুই ২শ’ ৬০ থেকে ২শ’ ৮০ টাকা, চিংড়ি ৬শ’ এবং গলদা চিংড়ি ৭শ’ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে শীতের অজুহাতে বেড়েছে সবজির দাম। বাজারে প্রতি পিস ফুল কপি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহেও ছিল ৩০ টাকা। একইভাবে বাঁধাকপিও প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, ব্রুকলি প্রতি পিস ৫০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৬০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ টাকা, গাঁজর প্রতি কেজি ৪০ টাকা, সিম প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৩০ টাকা, শালগম প্রতি কেজি ৩০, খিরা প্রতি কেজি ৩০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মৌসুম না হওয়ায় বরবটি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১শ’ টাকায় আর পটল প্রতি কেজি ১শ’ ২০ টাকা, নতুন আলু প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে সোনাডাঙ্গা ট্রাক স্ট্যান্ডের কাঁচাবাজার আড়তের ব্যবসায়ী মো. জুয়েল হাসান বলেন, গ্রামাঞ্চলে অতিরিক্ত শীত ও কুয়াশার কারণে কৃষকরা ফসল তুলতে পারছেন না। যে কারণে সরবরাহ কমেছে। তবে শীত কিছুটা কমলে আগের মতো প্রচুর সবজি সরবরাহ হবে। তখন দাম কিছুটা কমে আসবে।