ঊষার আলো রিপোর্ট : সব ধরনের ব্যাংক ঋণের সুদহার বাড়বে ১ জুলাই থেকে। তিনটি ক্যাটাগরিতে এ হার গড়ে বাড়ছে দেড় থেকে আড়াই শতাংশ। ফলে ঋণের সুদের হার বেড়ে দাঁড়াবে সাড়ে ১০ থেকে সাড়ে ১১ শতাংশ। কোনো কোনো খাতে তা পৌনে ১২ শতাংশেও উঠতে পারে।
এ বিষয়ে সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত অনুযায়ী ঋণের সুদহার বাড়ানো হচ্ছে।
এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক রোববার আগামী অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় সুদ আরোপের নতুন পদ্ধতির কথা ঘোষণা করে। সোমবার সার্কুলার জারির মাধ্যমে এ বিষয়টি আরও স্পষ্টীকরণ করা হয়। এতে ঋণের সুদহার আংশিকভাবে বাজারভিত্তিক করা হলো। তবে আইএমএফ’র শর্ত অনুযায়ী পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করা হয়নি।
ওই সার্কুলার জারির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের সুদের হারের ঊর্ধ্বসীমা ৯ শতাংশ ও পল্লি কৃষি ঋণের সুদের হার ৮ শতাংশের নির্দেশনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়, ১ জুলাই থেকে ঋণের সুদের হার নির্ধারিত হবে ৬ মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদ হারের ভিত্তিতে। বর্তমানে ওই বিলের গড় সুদের হার ৭ দশমিক ১২ থেকে ৭ দশমিক ৩৭ শতাংশে ওঠানামা করে। এর গড় সুদের হারের সঙ্গে ব্যাংক সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ যোগ করে ঋণের সুদের হার নির্ধারণ করবে। ফলে ঋণের সুদের হার দাঁড়াবে প্রায় সোয়া ১০ শতাংশ। আগে এসব খাতে ৮ থেকে ৯ শতাংশের মধ্যে ঋণ পাওয়া যেতে।
কৃষি ও পল্লি ঋণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ যোগ করা হবে। বর্তমানে কৃষি ও পল্লি ঋণের সুদের হার ৮ শতাংশ। নতুন পদ্ধতিতে এ খাতে সুদের হার দাঁড়াবে গড়ে সোয়া ৯ শতাংশ বা তার চেয়ে কিছুটা বেশি।
কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত ও ভোক্তা ঋণের আওতায় ব্যক্তিগত ঋণ এবং গাড়ি কেনার ঋণের সঙ্গে ব্যাংক বাড়তি খরচ মেটাতে আরও ১ শতাংশ যোগ করতে পারবে। ফলে এসব খাতে সুদ সোয়া ১১ শতাংশ হতে পারে।
সার্কুলারে বলা হয়, যে মাসের সুদহার নির্ধারণ করা হবে তার অব্যবহিত পূর্ববর্তী মাসে নতুন পদ্ধতিতে সুদহার নির্ধারণ করতে হবে। যেমন মার্চের সুদহার নির্ধারণে ফেব্র“য়ারির জন্য নির্ধারিত হারকে বিবেচনায় নিতে হবে। সুদ আরোপ করার পর ৬ মাসের মধ্যে সেটি পরিবর্তন করা যাবে না। এ সময়ে সুদহার বাড়লেও গ্রাহকের সুদ বাড়াতে পারবে না ব্যাংক। একইভাবে সুদহার কমলেও গ্রাহকের সুদ কমবে না।
আবার মেয়াদের আগে ঋণ সমন্বয় করতে চাইলে সিএমএসএমই ও ভোক্তা ঋণের আওতাধীন ব্যক্তিগত কিংবা গাড়ি ক্রয় ঋণের ক্ষেত্রে ১ শতাংশ তদারকি মাশুল আনুপাতিক হারে আদায় করতে হবে। এর ফলে বছরের মাঝখানে কেউ ঋণ পরিশোধ করতে চাইলে তার ঋণের ওপর দশমিক ৫০ শতাংশ হারে তদারকি মাশুল গুনতে হবে। ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোকেও একই নিয়মে মুনাফা হিসাব করতে হবে।
ঋণের হারে কোনো পরিবর্তন আসলে বা কিস্তি পুনর্বিন্যাস করতে হলে তা গ্রাহককে জানাতে হবে। সার্কুলার অনুযায়ী, ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার অপরিবর্তিত থাকবে।
এদিকে চলতি অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে সরকারি ঋণের হার বাড়ানো হয়েছে। সরকার বেশি ঋণ নিলে ট্রেজারি বিলের সুদের হারও বাড়বে। ফলে সার্বিকভাবে ঋণের সুদের হারও বেড়ে যাবে।
ঊষার আলো-এসএ