খবর বিজ্ঞপ্তি : জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল খুলনা জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ এম হুমায়ুন কবির, আনোয়ার হোসেন, সুভাষ সাহা, বরকত আলী, হংস শুভ্র হালদার, অপুবালা এক যৌথ বিবৃতিতে আগামী ৩০ মার্চ হতে সরকারি হাসপাতালে পরামর্শ ফি ৫০০ টাকা দিয়ে ডাক্তারদের রোগী দেখার সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান। পূর্বে হাসপাতালে ভর্তি ফি, বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা বিনামূল্যে করা হতো। সরকার ক্ষমতায় এসে ‘ইউসার ফি’ চালু করে হাসপাতালগুলোতে সকল সেবা বিনামূল্যের পরিবর্তে পয়সার বিনিময়ে গরীব রোগীদের সেবা নিতে বাধ্য করে। এমনিতে সরকারি হাসপাতালে অপ্রতুল চিকিৎসক সংকটে রোগীরা ঠিকমতো সেবা পায়না।
তাছাড়া অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালে যন্ত্রপাতি এবং টেকনিশিয়ানের অভাবে সাধারণ মানুষেরা বাইরের ডায়গনস্টিক সেন্টার থেকে বিপুল খরচে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়। সেই মুহুর্তে সরকার ডাক্তার এবং তাদের সহযোগীদের সুবিধার্থে নিজ কর্মস্থলে ৫০০/ বিনিময়ে রোগীদের চিকিৎসা করার অনুমতি দেয়ার মাধ্যমে স্বাস্থ্যখাতকে বেসরকারিকরণ করার সুযোগ তৈরি করছে। যেখানে একজন শ্রমিকের দিনমজুরি ৪০০/৫০০ টাকা পাটকল-চিনিকল বন্ধ করে দিয়ে লাখ লাখ শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। কোটি যুবক বেকার। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ দিশাহারা। সেই দেশে সরকারি হাসপাতালে গরীব মানুষদের সেবা বিনামূল্যে না দিয়ে সরকারি হাসপাতালগুলোকে প্রাইভেট হাসপাতালে রূপান্তরের পায়তারা করছে সরকার। সরকারি হাসপাতালগুলোতে গরীব মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে।
বাজেটে অনুৎপাদনশীল খাত, প্রতিরক্ষা, জননিরাপত্তা ইত্যাদি খাতে বিপুল টাকা বরাদ্দ থাকলেও, স্বাস্থ্য খাতে পর্যাপ্ত অর্থ প্রদানে অনীহা, দেশের সমগ্র স্বাস্থ্যখাতকে চরম বিপর্যয়ে ফেলে দিয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি, অপচয়, অব্যকস্থাপনা বন্ধ করে, দুর্নীতিবাজদের বিচার করে, আত্মসাৎকৃত টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফিরিয়ে আনতে হবে। পর্যাপ্ত সরকারি হাসপাতাল নির্মাণ, প্রয়োজনীয় ডাক্তার ও নার্স নিয়োগ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা যন্ত্রপাতি স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণে অর্থ প্রদান, বিনামূল্যে চিকিৎসা, ঔষধ সরবরাহ করে জনগণের স্বাস্থ্য রক্ষা ও সুচিকিৎসা পাওয়ার মৌলিক অধিকারকে বাস্তবায়ন করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার বিনিময়ে পরামর্শ ফি নেয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
সরকারের এই অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসক ও নার্সদের সংগঠনসহ সকল গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল মানুষদের সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান।