বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ খুলনায় অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের আর্থিক সুরক্ষা ও কল্যাণে নানা উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন যে সাংবাদিকতা একটি ঝুঁকিপূর্ণ পেশা হলেও অনেক সাংবাদিক মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট সেই সংকট উত্তরণে সহায়তা করছে।
মূল পয়েন্টসমূহ:
- শিক্ষা বৃত্তি ও ভাতা:
সাংবাদিকদের সন্তানদের জন্য শিক্ষা বৃত্তি চালু এবং অসচ্ছল প্রবীণ সাংবাদিকদের জন্য মাসিক ভাতা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। - আর্থিক সহায়তা:
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম কিস্তিতে খুলনা, বাগেরহাট এবং সাতক্ষীরার ১৩ জন সাংবাদিককে ৮ লাখ টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছে। - নীতিমালা প্রণয়ন:
প্রকৃত সুবিধাভোগীদের নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নীতিমালা তৈরি হচ্ছে। - ঐক্যের আহ্বান:
সাংবাদিকদের রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে শক্তিশালী করতে ঐক্যের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। - শহীদদের স্মরণ:
অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ:
অনুষ্ঠানে খুলনা প্রেসক্লাব, বিএফইউজে, এবং মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের সাংবাদিকরা অংশ নেন এবং তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, গণমাধ্যম হলো রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। জাতির বিবেক ও দিকনিদের্শক। ঝুঁকিপূর্ণ পেশা হিসেবে সাংবাদিকদের সহায়তা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কল্যাণ ট্রাস্ট সেই দায়িত্বটি পালন করে যাচ্ছে। সাংবাদিকদের সন্তানদের শিক্ষা বৃত্তি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। অসচ্ছল প্রবীণ সাংবাদিকদের মাসিক ভাতার আওতায় আনার কাজ চলছে। এ সম্পর্কিত নীতিমালা প্রনয়ণের উদ্যোগ নিচ্ছে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট। সাংবাদিকদের আর্থিক সুরক্ষা ও সার্বিক কল্যাণে বহুমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে কল্যাণ ট্রাস্ট। ট্রাস্টের সহায়তায় প্রকৃতপক্ষে প্রাপ্য তারাই পাবেন।
বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম কিস্তির চেক বিতরণ, ‘সাংবাদিকদের আর্থিক সুরক্ষার প্রত্যাশা ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে খুলনা সার্কিট হাউজের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপংকর দাশ।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, সাংবদিকতা পেশা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পেশা, অথচ এ পেশায় যারা এসেছেন তাদের মধ্যে অনেকেই আজ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বিগত ১৬ বছর সাংবাদিকদের একটি গোষ্ঠীকে বারবার অনুদান দেয়া হয়েছে। গণমাধ্যম রাষ্ট্রের মূল চালিকা শক্তি হলেও, এই শক্তিকে বিগত দিনে অথর্ব করে রাখা হয়েছিল। পরিণত করা হয়েছিল রুগ্ন প্রতিষ্ঠানে। আর সাংবাদিকদের বানানো হয়েছিল প্রান্তিক জনগোষ্ঠীতে।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের আর্থিক সুরক্ষা ও কল্যাণে সম্ভাব্য করণীয় সব কিছু করার চেষ্টা করা হবে। অচিরেই প্রবীণ সাংবাদিকদের জন্য মাসিক সম্মানি ভাতা দেওয়া হবে। তিনি দেশের বিরুদ্ধে যারা দেশে বিদেশে ষড়যন্ত্র করছে তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহবান জানান।
তিনি বলেন, জুলাই আগস্টের বিপ্লবে দেশে যে ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে, তা নজিরবিহীন। এই ঐক্যকে ধরে রাখতে হবে। তাহলে যেকোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা অত্যন্ত সহজ হবে। যেসব ছেলেরা রক্ত দিয়েছে তাদের জন্য আমরা কিছু করতে না পারলেও অন্তত সম্মান জানাতে কখনও কার্পণ্য করব না। অনুষ্ঠানে জুলাই-আগস্টে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার ১৩ জন গণমাধ্যমকর্মীদের মাঝে ৮ লাখ টাকার চেক বিতরণ করেন।
খুলনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দীপংকর দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহকারী মহাসচিব ও মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনার সহ-সভাপতি এহতেশামুল হক শাওন, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আনিসুজ্জামান, খুলনা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব রফিউল ইসলাম টুটুল, বিএফইউজের সাবেক সহ-সভাপতি মো. রাশিদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান হিমালয়।
এতে বক্তৃতা করেন দৈনিক পূর্বাঞ্চলের সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সনি, দৈনিক অনির্বাণের সম্পাদক মাহবুবা পারভীন, দৈনিক জনবার্তার সম্পাদক আব্দুল খালেক আজীজী, দৈনিক আমার একুশের সম্পাদক আতিয়ার পারভেজ, মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন খুলনার কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক রানা, নির্বাহী সদস্য মুহাম্মদ নুরুজ্জামান ও মো. সোহরাব হোসেন, সাবেক নির্বাহী সদস্য খলিলুর রহমান সুমন, খুলনা প্রেসক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য আশরাফুল ইসলাম নুর, এমইউজের সিনিয়র সদস্য এম হেফজুর রহমান ও মাকসুদ আলী, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্বল, ডুমুরিয়ার সাংবাদিক আব্দুস সালাম, বাগেরহাটের মো. মাহফুজুর রহমান খান।
ঊ/আ-এইচআর