UsharAlo logo
বৃহস্পতিবার, ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনস্রোতে পরিণত হবে খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশ : দুদু

koushikkln
অক্টোবর ২১, ২০২২ ৮:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

# পুলিশের সাড়াশি গ্রেফতার অভিযানে অর্ধশত আটক, # শাসক দলীয় ক্যাডারদের সশস্ত্র মহড়ায় ত্রাসের সৃষ্টি, # পরিবহন ও লঞ্চ ট্রলার বন্ধে জনদূর্ভোগ চরমে

ঊষার আলো ডেস্ক: খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় গণ সমাবেশ স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনস্রোতে পরিণত হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক শামসুজ্জামান দুদু। শান্তিপূর্ণ এই কর্মসূচি সফল করতে পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদেরকে উস্কানিমূলক আচরণ না করে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহবান জানান তিনি।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর কে ডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে বিএনপি খুলনা বিভাগ আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ আহবান জানান। ২২ অক্টোবর খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ বাঁধাগ্রস্ত করতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সম্মিলিতভাবে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। পুলিশের গণ গ্রেফতার অভিযানে নগরী থেকে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী হয়েছেন। পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সমাবেশে না যাওয়ার জন্য কঠোর হুমকি প্রদান করছে।
উদ্ভুত পরিস্থিতিতে এবং বিভাগীর গণ সমাবেশ আয়োজনের সর্বশেষ প্রস্ততি সম্পর্কে মিডিয়া কর্মীদের অবহিত করতে এই ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সমাবেশকে বানচাল করতে গোটা বিভাগ জুড়ে ভয়ের সংস্কৃতি সৃষ্টি করা হয়েছে। পরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। লঞ্চ ঘাট, ট্রলার চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তাহলে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, বাগেরহাট, নড়াইল থেকে কি বিএনপির নেতাকর্মীরা পায়ে হেটে আসবেন? নদী সাঁতরে খুলনায় আসবেন? এ কেমন মানসিকতা? স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধে এ দেশের নারী, পুরুষ, শিশু বুকের রক্ত দিয়েছিলেন। সেই দেশের এমন পরিস্থিতি হবে কেন?
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় একাত্তরে রণাঙ্গণের বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি যেখানে অবস্থান করছিলেন, পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে ১৩ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। একজন মহান মুক্তিযোদ্ধাকে পুলিশ রীতিমতো অপমান করেছে। এমন অপমানের মুখোমুখি তাকে হতে হবে কেন?
অন্য বিভাগীয় সমাবেশের অনুমতি প্রদানে প্রশাসন কালক্ষেপন করলেও খুলনার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটেছে জানিয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, খুলনায় অনুমতি চাওয়া মাত্র প্রশাসন তা দিয়েছে। এ জন্য দলের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। কিন্ত তারপর থেকে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে। প্রশাসনকে বলবো, যা হয়েছে হয়ে গেছে। এবার এসব বন্ধ করেন। আমাদেরকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে দিন। উস্কানি না দিয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করুন।
শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যরা এই শহরে থাকেন। এই শহর হবে শান্তির- মন্তব্য করেন দুদু।
তিনি বলেন, দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হয়ে চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এ সমাবেশ  দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য। জনদাবির সমর্থনে আন্দোলনে শহীদ পাঁচ সহকর্মী হত্যার বিচারের দাবিতে। এই সমাবেশ দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে, দেশনায়ক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে। জ্বালানী তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর দাবিতে। যে কোন মুল্যে এই কর্মসূচি সফল করার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান তিনি।
এর আগে ব্রিফিংয়ের সূচনায় নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বাঁধাগ্রস্ত করতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সম্মিলিতভাবে শহরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার, বাড়ি বাড়ি তল্লাশি, অব্যাহত হুমকি প্রদর্শন করছে। প্রকাশ্যে রামদা হকিষ্টিক সহ অস্ত্রের মহড়া চলছে। তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে, এই সরকার শেষ সরকার নয়। এসব কাজের পরিণতি শুভ হবেনা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ প্রচার সম্পাদক কৃষিবীদ শামীমুর রহমান শামীম, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু,
মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনা, জেলা আহবায়ক আমীর এজাজ খান, জেলা সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী, নগর সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোঃ তারিকুল ইসলাম জহীর ও জেলার আবু হোসেন বাবু।
এদিকে দলীয় সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন থানায় অর্ধশত নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের মধ্যে খুলনা সদর থানায় খন্দকার হাসিনুল ইসলাম নিক, মিজানুর রহমান বাবু, বেল্লাল হোসেন, জসমিউদ্দিন লাবু, শফিকুল ইসলাম, মিজান ও কবির ফরাজি, সোনাডাঙ্গা থানায় নজরুল ইসলাম, ডালিম, ডা. শাহ আলম, মাহমুদ আলম বাবু মোড়ল, জুলু, কাজী সেলিম, খালিশপুর থানায় মেহেদী, সামাদ বিশ^াস, গোলাম মোস্তফা ভূট্টো, মোঃ হাসান, মোল্লা কওসার, দৌলতপুর থানায় হুমায়ুন কবির, রাসেলুজ্জামান, খানজাহান আলী থানায় জসীম ভূইয়া, মামুন ও উজ্জল এবং হরিণটানা থানায় কামাল, হেলাল ও হযরত আলী। এছাড়া বাগেরহাট থেকে আগত ৪জনকে খুলনা থানা পুলিশ এবং মোড়েলগঞ্জ বিএনপি নেতা খায়রুজ্জামান শিপনের বাসা হতে ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে গভীর রাতে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীবাহী  একটি গাড়ি সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। যেখানে যেখানে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক জাহাঙ্গীর মুন্সি, কুষক দল আহবায়ক মুকুল মেম্বার সহ ১১ জন রয়েছেন বলে জানা গেছে।