UsharAlo logo
বুধবার, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে আইনগত ব্যবস্থার পাশাপাশি জনসচেতনতাও জরুরি

usharalodesk
মে ৩, ২০২১ ৫:৪৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো ডেস্ক : রাজধানীতে শব্দদূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে এ কথা সব সময় বলা হয়ে থাকে। কিন্তু কতটা মারাত্মক সেটি বোঝা যায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাবউদ্দিনের এক বক্তব্য থেকে।

আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উপলক্ষ্যে একটি অনলাইন কর্মশালায় তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে সহনীয় মাত্রার থেকেও প্রায় তিনগুণ শব্দদূষণ হয়। এর ফলে নগরীর অর্ধকোটি মানুষ আছে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে।’

বিশেষজ্ঞরা বলেন, তীব্র শব্দ মানবদেহের স্নায়ুতন্ত্রের ওপর বিভিন্ন ভাবে প্রভাব ফেলে। যেমন; উচ্চমাত্রার শব্দ উচ্চরক্তচাপ কিংবা হৃদরোগ ইত্যাদি রোগের কারণ হতে পারে। এমন উচ্চমাত্রার শব্দ মস্তিষ্কের কোষের ওপর অক্সিজেনের অভাবজনিত সমস্যারও সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি উচ্চমাত্রার শব্দ আংশিক কিংবা পূর্ণ বধিরতারও কারণ হয়ে দাড়াতে পারে। তাছাড়া শব্দদূষণ মানবদেহের রক্তের শর্করার পরিমাণের ওপর প্রভাব ফেলে। এর বাইরেও শব্দদূষণের আরও বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। পরিতাপের বিষয় এই যে এত কিছু সত্ত্বেও শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছে খুব কমই গুরুত্ব পেয়ে থাকে।

যদিও পরিবেশ অধিদপ্তর ২০০৬ সালে শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা প্রণয়ন করে। এতে করে রাতে শব্দের মানমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সাথে কয়েকটি সড়ককে নীরব এলাকা হিসাবে ঘোষণা করা হয়। শুধু এ পর্যন্তই। এগুলোর তেমন কোনও কার্যকারিতা আসলে লক্ষ করা যায় না। কাজেই শব্দদূষণ পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি, বরং অবনতিই হচ্ছে দিনের পর দিন।

দেশে শব্দদূষণের প্রধান উৎসটি হল যান্ত্রিক যানবাহন। বাস, ট্রাক, মোটরগাড়ি ও মোটরসাইকেলের হর্ন এগুলো অনবরত শব্দদূষণ ঘটিয়ে থাকে। হাসপাতাল কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো স্পর্শকাতর স্থানেও শব্দদূষণ ঘটছে প্রতিনিয়ত। এছাড়া নানা যন্ত্র বা মাইক ব্যবহারেও শব্দদূষণ হয়। বিশেষ বিশেষ সময়ে আতশবাজির শব্দেও তীব্র শব্দদূষণ হয়। কিন্তু শহরে শব্দদূষণের ক্ষেত্রে যান্ত্রিক যানবাহনই বেশি দায়ী।

বস্তুত বড় বড় শহরগুলোয় চলাচলকারী যানবাহনগুলো যে উচ্চমাত্রায় ও ঘন ঘন হর্ন বাজিয়ে থাকে, বিশ্বের কোনও শহরেই তেমনটি আসলে দেখা যায় না। এর জন্য শুধু নগরীর পরিবহণ ব্যবস্থাই দায়ী নয়, সাথে জনসচেতনতার অভাবও এজন্য দায়ী। শব্দদূষণের মাত্রা কমিয়ে আনতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির বিষয়টিও তাই খুবই জরুরি।

শব্দদূষণ রোধে সমষ্টিগত উদ্যোগের কোনও বিকল্প নেই। বিজ্ঞানসম্মতভাবে আধুনিক নগরায়ণের পাশাপাশি কলকারখানার উৎপাদনের ক্ষেত্রে কম শব্দ সৃষ্টিকারী যন্ত্রের ব্যবহার, যানবাহন চলাচলে উচ্চমাত্রার শব্দ নিয়ন্ত্রণ ও সার্বিক পরিবেশসম্মত পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে শব্দদূষণ অনেকটাই রোধ করা সম্ভব।

(ঊষার আলো-এফএসপি)