ঊষার আলো ডেস্ক : করোনা (কোভিড-১৯) পরিস্থিতির কারণে দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। যদি সময়মতো যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তাহলে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে।
সবচেয়ে সংকটে পড়েছেন মধ্যবিত্ত এবং স্বল্প আয়ের মানুষেরা। লকডাউনের কারণে কাজের ক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে গিয়েছে। ফলে অনেকের আয় কমেছে, অনেকে হারিয়েছেন তাদের কাজ। এমন অবস্থায় মানুষের চিকিৎসা ও পরিবহণসহ বিভিন্ন ব্যয় দিনকে দিন বেড়েই চলেছে।
তারই মধ্যে রমজানকে কেন্দ্র করে নিত্যপণ্যের দামও পৌঁছেছে অসহনীয় পর্যায়ে। কাজেই মধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। আর্থিক চাপ সামাল দিতে গিয়ে অনেকেরই সঞ্চয় অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে। যার ফলে ধারদেনা করেও পরিস্থিতি সামলে উঠতে না পেরে অনেকেই রাজধানীসহ বিভিন্ন শহর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। আবার গ্রামে গিয়েও তারা পড়ছেন নতুন সংকটে। কর্মহীন অবস্থাতেও তাদের ব্যয় প্রতিদিন যেভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে করে কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেবেন তাই ভেবে চোখে অন্ধকার দেখছেন তারা। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে মানুষ।
অন্যদিকে, শহরাঞ্চলের সীমিত এবং নিম্ন আয়ের মানুষের বড় দুশ্চিন্তার বিষয়টি হলো তাদের বাসাভাড়া। এছাড়াও ৫টি মৌলিক চাহিদার ৪টি নিয়েও চিন্তিত রয়েছে তারা। এমন অবস্থায় জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতেই চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষেরা। আসল কথা, এখন মধ্যবিত্ত এবং শ্রমজীবী মানুষের চরম দুর্দিন চলছে। লকডাউনের কারণে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও খাবার ও বাসাভাড়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নিম্নবিত্তরা সরকারি বা বেসরকারি বিভিন্ন ধরণের সাহায্য-সহযোগিতা পেলেও মধ্যবিত্তদের বড় একটি অংশ এখন অসহায়। এমন অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে তারা আরও বিপদে পড়বে।
করোনার এক বছরে দেশে বিপুলসংখ্যক মানুষের জীবনমান নতুন করে আবারও দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গিয়েছে। এ পরিস্থিতি বিশ্ব অর্থনীতিকেও লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। কাজে যেহেতু এই সংকট কাটিয়ে ওঠার সহজ কোনো উপায় নেই, সেহেতু সংকট মোকাবিলা করতে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং সবার প্রতি সহমর্মিতার হাত বাড়াতে হবে। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়াতে হবে ও পাশাপাশি সুষ্ঠু বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের অর্থনীতির গতি আবারও ফেরাতে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির জন্য নিতে হবে বিশেষ পদক্ষেপ। সাথে সকলকেই হতে হবে দায়িত্বশীল ও সহমর্মী।
(ঊষার আলো-এফএসপি)