এম এন আলী শিপলু : সপ্তাহকাল খুলনার হাটে-বাজারে বোরো চাল উঠতে শুরু করেছে, তবে এবারে উৎপাদন কম। বোরো ওঠায় ভারতীয় চাল আমদানি বেশ খানিকটা কমেছে। সরকারি খাদ্য গুদামে মজুদ খানিকটা ফুরিয়ে এসেছে। চালের মূল্যের উর্ধ্বগতিতে বড় ধরণের উদ্বেগের কারণ হয়েছে।
খুলনার ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে এবারে দুই লাখ বোরো উৎপাদন হয়। তপ্ত আবহাওয়ায় বোরোর উৎপাদন বেশ কমেছে। খুলনার সরকারি ১০ গুদামে মজুদ মাত্র আট হাজার পাঁচশ’ ৩৪ মেট্টিক টন। অর্থনীতিবীদদের ভাষ্য, ক্রমাগত চালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বড় অভিঘাত হয়ে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষের ওপর। চালের মূল্য উর্ধ্বগতি নাজুক অবস্থায় ফেলেছে। করোনাকালে নিম্ন আয়ের মানুষ হিমশিমি খাচ্ছে। সরকারের মজুদ কমায়ে ব্যবসায়িরা দাম বাড়ার সুযোগ নিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা র্আও বলেছেন চালের বাজারে উচ্চ মূল্য স্ফিতির কারণ খারাপ সরবরাহ পরিস্থিতি ও অব্যবস্থাপনা। এছাড়া গেল আমন মৌসুম ব্যর্থ হয়েছে। আম্ফানের কারণে আমন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেনি।
সংশ্লিষ্টরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে। বোরো উৎপাদন কম হয়েছে। সরকারের শর্তানুযায়ী বোরো চাল দিতে মিল মালিকরা অনিহা প্রকাশ করছে। চালের বাজারে মূল্য উর্ধ্বগতি উদ্বেগের বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে হুমকীতে ফেলে দিয়েছে দেশের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তাকে। জেলার মহেশ^রপাশা, খুলনা সিএসডি, রূপসা উপজেলার আলাইপুর, কয়রা উপজেলার ঘুগরাকাটি, ফুলতলা, বটিয়াঘাটা, তেরখাদা, পাইকগাছা ও ডুমুরিয়া খাদ্য গুদামে ২০১৯ সালের ৩০ জুন ৬৩ হাজার নয়শ’ ৬৭ মেট্টিক টন চাল মজুদ ছিল। গেল বছরের ১ মে মজুদরে পরিমান দাঁড়ায় ৪২ হাজার চারশ’ ২৭ মেট্টিক টন। আজ বুধবারের মজুদ আট হাজার পাঁচশ’ ৩৪ মেট্টিক টন। প্রতি মাসে পুলিশ, আনসার, ফায়ার ব্রিগেড, বিজিবি ও জেলখানা কর্তৃপক্ষকে পাঁচ হাজার মেট্টিক টন করে চাল দিতে হচ্ছে। ফলে চালের মজুদ তলানীতে এসে দাঁড়িয়েছে।
খুলনার সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক প্রিয় কমল চাকমা এ প্রতিবেদককে জানান, ১৭ হাজার পাঁচশ’ মেট্টিক টন চাল ও আট হাজার নয়শ’ ৫৭ মেট্টিক টন বোরো ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাছাড়া ভারত থেকে চাল আমদানির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যে সংকট কেটে যাবে।
খুলনা রাইস মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল বলেন, সরকারের চালের ক্রয়মূল্য ৪০ টাকার পরিবর্তে ৪৫ টাকা এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা অবধি বিদ্যুতের পিক আওয়ার পদ্ধতির বাতিলের দাবি করেছেন। পিক আওয়ারে তিনগুণ বিদ্যুৎ বিল হয়। ফলে উৎপাদন খরচ বাড়ে। এ সময় বরিশাল, গোপালগঞ্জ, যশোর ও সাতক্ষীরা থেকে বোরো আসছে। ধানের দাম মন প্রতি প্রকার ভেদে ৯২০-৯৩০ টাকা। ধানের দাম স্থিতি থাকলে চালের মূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ হবে।
(ঊষার আলো-এমএনএস)