নতুন আয়কর আইনে একজন করদাতার সাতটি খাতের আয়ের ওপর কর নির্ধারণ করা হবে। খাতগুলো হলো চাকরি থেকে আয়; ভাড়া থেকে আয়; কৃষি থেকে আয়; ব্যবসা থেকে আয়, মূলধনি আয়, আর্থিক পরিসম্পদ থেকে আয় এবং অন্যান্য উৎস থেকে আয়।
আয়কর অধ্যাদেশেও সব মিলিয়ে সাতটি খাতের আয়ের ওপর কর আরোপ করা হতো। তবে এবার আয়ের খাতগুলো যুগোপযোগী করার পাশাপাশি পরিসর বাড়ানো হয়েছে। যেমন এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অনেকেই বেতন নেন না। ওই প্রতিষ্ঠান ওই পদস্থ কর্মকর্তাকে শেয়ার এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেয়। এখন থেকে ওই শেয়ারের মুনাফার অংশ চাকরি থেকে আয় হিসেবে বিবেচিত হবে। সেভাবেই কর নির্ধারণ করা হবে। এত দিন এই ধরনের আয়কে বেতন খাতের হিসাবে ধরা হতো না।
আয় খাতে যা আছে
‘চাকরি থেকে আয়’ খাতে চার ধরনের আয় যুক্ত করা হয়েছে। এগুলো হলো—চাকরি থেকে প্রাপ্য যে কোনো প্রকার আর্থিক প্রাপ্তি, বেতন ও সুযোগ-সুবিধা; কর্মচারীর শেয়ার স্কিম থেকে অর্জিত আয়; কর অনারোপিত বকেয়া বেতন এবং অতীত বা নিকট ভবিষ্যতের কোনো নিয়োগকর্তার কাছ থেকে প্রাপ্ত যেকোনো অঙ্ক বা সুবিধা।
তবে দুই ধরনের আয় বা আর্থিক প্রাপ্তি এই খাতে যুক্ত হবে না। যেমন শেয়ারহোল্ডার পরিচালক না এমন অন্য কোনো কর্মচারীর চিকিৎসার জন্য প্রাপ্ত অর্থ এবং দায়িত্ব পালনে যাতায়াত, ভাতা, ভ্রমণ ভাতা এবং দৈনিক ভাতা।‘ভাড়া থেকে আয়’ খাতে কোনো ব্যক্তির কোনো সম্পত্তির মোট ভাড়া মূল্য থেকে নিয়ম অনুযায়ী অনুমোদনযোগ্য খরচ বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকে, সেটি ভাড়া থেকে আয় হিসেবে বিবেচিত হবে। স্থাপনা সংস্কার, রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচালনসহ বিভিন্ন খাতে খরচ করলে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বাদ দেওয়া হয়। সেটিই অনুমোদনযোগ্য খরচ।
‘কৃষি থেকে আয়’ খাতে কোনো ব্যক্তির যে কোনো উদ্যান পালন, পশুপাখি পালন, ভূমির প্রাকৃতিক ব্যবহার, হাঁস-মুরগি ও মাছের খামার, সরীসৃপ–জাতীয় প্রাণীর খামার, নার্সারি, ভূমি বা জলে যেকোনো ধরনের চাষাবাদ, ডিম-দুধ উৎপাদন, কাঠ, ফলমূল, মধু ও বীজ উৎপাদনের মাধ্যমে অর্জিত আয়কে বোঝানো হয়েছে।
‘ব্যবসা থেকে আয়’ বলতে আইনে করদাতা পরিচালিত ব্যবসায় লাভ বা মুনাফাকে মোটাদাগে বোঝানো হয়েছে। ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে কোনো সম্পদ লিজ দিলেও তা ব্যবসার আয় হিসেবে বিবেচিত হবে। এ ছাড়া সম্পদ বিক্রি বা হস্তান্তরের মাধ্যমে উদ্ভূত মুনাফা বা লাভকে মূলধনি আয় ধরা হবে। এ জন্য কর বসবে। অন্যদিকে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রক্ষিত আমানতের বিপরীতে মুনাফার পাশাপাশি সরকারি সিকিউরিটিজ, ডিবেঞ্চারের লাভ বা মুনাফাকে এখন থেকে আর্থিক পরিসম্পদ থেকে আয় হিসেবে ধরা হবে।