ঊষার আলো ডেস্ক :জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের রাজনীতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে বিপরীত মেরুতে অবস্থান করছে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এ সংকট নিরসনে দুই দলের মধ্যে আলোচনা বা সমঝোতা জরুরি হলেও এর কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না; বরং নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, দল দুটির মধ্যে দূরত্ব ততই বাড়ছে। বাড়ছে সহিংসতার আশঙ্কা। আগামীকাল ১২ জুলাই ঢাকায় সমাবেশ করবে বিএনপি।
অতীতে বিভিন্ন কারণে এবং ক্ষমতার পালাবদলের প্রেক্ষাপটে দেশে সহিংস রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। মাসের পর মাস হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালনকালে সহিংসতায় বহু প্রাণহানি হয়েছে। সেসময় দেশজুড়ে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে যে ব্যাপক ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় সম্পদহানি হয়েছিল, তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল অর্থনীতিতে। সাম্প্রতিক সময়ে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার মধ্যেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ায় বিশ্বব্যাপী যে অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা দেশের অর্থনীতিতেও বড় ধাক্কা দিয়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য এই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি হলো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। কাজেই বিদ্যমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক নেতাদের সহিংসতা এড়ানোর গুরুত্ব অনুধাবন করে সমঝোতার পথে অগ্রসর হওয়া উচিত।
আমরা মনে করি, যে কোনো সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব। সেক্ষেত্রে সংলাপ বা আলোচনার বিকল্প নেই। বস্তুত পরস্পরের মধ্যে বিদ্যমান সমস্যাগুলো যদি আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসা যায় এবং সেখানে সমাধানের পথ খোঁজা হয়, তাহলে দেশের রাজনীতিতে সংঘাত-সংঘর্ষ হ্রাস পাবে। এ বিষয়ে সব দলের রাজনীতিকদের শুভবুদ্ধির উদয় হওয়া জরুরি। তবে সংলাপ বা আলোচনা যাই হোক, তা হতে হবে অর্থবহ। অতীতে দেখা গেছে, জাতিসংঘের মধ্যস্থতাসহ বিভিন্নভাবে যেসব রাজনৈতিক সংলাপ হয়েছে, তা কোনো ফল বয়ে আনেনি। এর কারণ, সংলাপে অংশ নেওয়া পক্ষগুলোর যার যার প্রস্তাবে অটল থাকা। কাজেই ‘বিচার মানি, কিন্তু তালগাছটি আমার’-এমন মনোভাব নিয়ে সংলাপে বসে লাভ নেই। সংলাপে বসতে হবে সত্যিকারের আন্তরিকতা নিয়ে, যাতে এক পক্ষের যৌক্তিক প্রস্তাব অন্য পক্ষ মেনে নিতে প্রস্তুত থাকে। তা না হলে সংলাপ হবে অর্থহীন। আর তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে দেশের দুই বড় রাজনৈতিক দলের মধ্যে যে বৈরী সম্পর্ক চলছে, তা দেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে। দেশে সমঝোতার রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হলে এ অবস্থার অবসান ঘটবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। রাজনৈতিক দলগুলো যদি প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধপরায়ণতার রাজনীতি পরিহার করে পরস্পরের প্রতি সহনশীল হয়, তাহলে দেশের উন্নয়ন আরও বেগবান হবে।
ঊষার আলো-এসএ