ঊষার আলো রিপোর্ট : গত ৫ আগস্ট গণ-আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। তিনি প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। তার দলের নেতাকর্মীরা অনেকেই পালিয়ে বিভিন্ন দেশে চলে যান; আবার অনেকেই গা ঢাকা দেন। অনেকেই সীমান্তে ধরাও পড়েছেন। সীমান্ত পার হতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ধরা হয়।
সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলীর কয়েকজন সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী-এমপিসহ মাঝারি পর্যায়ের অনেক নেতা ভারতে পালিয়েছেন। তাদের কয়েকজন জানিয়েছেন, ওবায়দুল কাদের ভারতের কলকাতায় পৌঁছেছেন বলে তারা শুনেছেন। তবে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়নি। টেলিফোনেও কথা হয়নি।
তবে এবার গুঞ্জন ছড়িয়েছে অবৈধভাবে সীমান্ত পার হয়ে ভারতের আসাম রাজ্যের রাজধানী গৌহাটির একটি হোটেলে অবস্থান করছেন তিনি।
একটি বাংলাদেশি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সিলেট সীমান্ত দিয়ে একটি প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ে পাড়ি জমান। তিনি সেখানে ২-১ দিন অবস্থান করেন। পরে আসামের গৌহাটিতে আশ্রয় নিয়েছেন।
গণঅভ্যুত্থানের পর দিল্লির লুটিনস বাংলো জোনের একটি সুরক্ষিত বাড়িতে থাকছেন শেখ হাসিনা। ভারত সরকারই ওই বাড়িতে তার থাকার বন্দোবস্ত করেছে। বিশালাকার সেই বাংলোতে সাধারণত ভারতের মন্ত্রী, জ্যেষ্ঠ এমপি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থাকেন। মর্যাদা অনুসারে শেখ হাসিনাকে সেখানেই থাকতে দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছিল।
কাদের শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জর রয়েছে। গোহাটি থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ সহজ বলে তিনি সেখানে থাকার ব্যবস্থা করেছেন। ভারত ও বাংলাদেশের কয়েকজন ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের সঙ্গে আলাপ করে এ তথ্য জানা গেছে।
সিলেট সীমান্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলা সংলগ্ন সীমান্ত দিয়ে চলতি নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে গভীর রাতে কাদের ভারতে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। পালিয়ে যাওয়ার আগে প্রায় মাসখানেক সিলেট শহরের ইসলামপুর (মেজরটিলা) পুরবী আবাসিক এলাকায় অবস্থিত ‘৫শ কোটি’র বাসা নামে পরিচিত আলিশান বাড়িতে অবস্থান করে প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে এখান থেকেই অবৈধভাবে সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন।
কয়েকটি সূত্র জানায়, কাদের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পৌঁছে প্রথমে মেঘালয়ের শিলংয়ে অবস্থানরত সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের পলাতক কয়েকজন নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে আলাপ-আলোচনা শেষে গোহাটিতে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সেখানে থাকার কারণ হিসেবে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলে জানায় একটি সূত্র। অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে শিলং, গৌহাটিসহ বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন খান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বিসিবির পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলসহ সিলেটের শতাধিক নেতাকর্মী।
ঊষার আলো-এসএ