ঊষার আলো রিপোর্ট : কিছুদিন পরপর ভোজ্যতেল, চিনিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়। এর ফলে ভোক্তাদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বস্তুত কারসাজির মাধ্যমেই সৃষ্টি করা হয় এসব সংকট। অতীতে আমরা লক্ষ করেছি, অবৈধভাবে ভোজ্যতেল মজুত করায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা সত্ত্বেও বারবার কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে। এতেই স্পষ্ট, যারা কারসাজি করে, তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কাজেই এদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে। এবার হঠাৎই খোলাবাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট তৈরি করা হয়েছে। কোম্পানিগুলো কারসাজি করে এমনটি করেছে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা। শুক্রবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাড়তি দামেও সয়াবিন তেল পাননি অনেক ক্রেতা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি আবার ১৪ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার কারণে গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষের দুর্ভোগ কতটা বেড়েছে, তা সহজেই অনুমেয়। বস্তুত টানা প্রায় তিন বছর ধরে সাধারণ ভোক্তারা চড়া মূল্যস্ফীতির যন্ত্রণায় ভুগছেন। এর জন্য মূলত দায়ী ছিল বিগত সরকারের ভুল নীতি, অর্থ পাচার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে দেশ পরিচালনা ইত্যাদি।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিলে ভোক্তারা আশায় বুক বেঁধেছিলেন, এবার চড়া মূল্যস্ফীতির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলবে। কিন্তু ভোক্তাদের এ আশা পূরণ হয়নি। মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ নিলেও সেসব বাস্তবায়নে নানা প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ীদের অধিক মুনাফার প্রবণতা আগের চেয়ে বেড়েছে। বিভিন্ন স্তরে চাঁদাবাজিও চলছে। বস্তুত যেসব কারণে নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির হয়, তা বহুল আলেচিত। এসব কারণ দূর করতে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
বোঝাই যাচ্ছে, রমজান শুরু হতে এখনো কয়েক মাস বাকি থাকলেও ইতোমধ্যে বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি শুরু হয়ে গেছে। রমজান মাসে ছোলার চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তাই বাড়ানো হয়েছে ছোলার দাম। গত কয়েক বছর ধরেই লক্ষ করা যাচ্ছে, অসাধু ব্যবসায়ীরা রমজান শুরুর কয়েক মাস আগে থেকেই ছোলা, ভোজ্যতেল, চিনি ইত্যাদি পণ্যের দাম বাড়ানো শুরু করে। সিন্ডিকেট করে বাজারকে অস্থিতিশীল করে তোলে। অতীতে আমরা লক্ষ করেছি, অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি রোধের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ অনেক আশ্বাস দিলেও বাস্তবে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল যাতে বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে, সেজন্য কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে তৎপর থাকতে হবে।
ঊষার আলো-এসএ