ঊষার আলো প্রতিবেদক : সম্প্রতি সময়ে নগরী জুড়ে ১৮ বছরের নীচের অপ্রাপ্ত বয়সী তরুনসহ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধূমপানের প্রবণতা দিন-দিন বেড়েই চলেছে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে তরুন চাকরিজীবীরাও এ থেকে বাদ যাচ্ছে না। বর্তমানে বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে ধূমপান একটি ফ্যাশন বা স্মার্টনেসে পরিণত হয়েছে। তরুণরাই আগামী দিনের নির্মাতা। তাই তরুণ সমাজকে ধূমপানমুক্ত করতে হবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে ধূমপায়ীদের অর্ধেক ১৩-১৫ বছর বয়সী। সম্প্রতি সময়ে নগরীর দৌলতপুরে প্রতিদিনই নতুন-নতুন তৈরী হয়ে উঠছে অপ্রাপ্ত বয়সের ধূমপায়ী। বিক্রেতারা অপ্রাপ্তদের নিকট ধূমপান সামগ্রী বিক্রয় নিষিদ্ধ জানা স্বত্বেও ব্যবসায় মুনাফা লাভের আশায় তরুন সমাজের এ অপ্রাপ্ত বয়সের নতুন প্রজন্মকে ঠেলে দিচ্ছে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। মহানগরীর প্রায় সকল পাড়া-মহল্লায়, শহরের গুরুত্বপূর্ন স্থান গুলোতে ব্যাঙ্গের ছাতার মত গড়ে উঠেছে ছাপড়া দেয়া ধূমপানের উপযোগী অসংখ্যক চা, পান ও বিড়ির দোকান। এ সকল দোকানগুলোতে অবাদে প্রকাশ্যে ধূমপান করছে ১৮ বছরের নিচে তরুনেরা। যেন দেখার কেউ নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, ধূমপানের কারণে ফুসফুসের ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্ট্রোকসহ নানা জটিল রোগ হতে পারে। ধূমপান মানুষের আয়ু কমিয়ে দেয়, পরিবেশ দূষণ করে এবং ধীরে ধীরে মৃত্যু ঘটায়। ধূমপায়ীর কারণে আশপাশের অধূমপায়ীরাও ধূমপানজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গোলাম রব্বানী টিপু বলেন, চোখের সামনে তরুন সমাজের এ অবক্ষয় মেনে নেয়া যায়না। করোনার কারণে দীর্ঘ সময় স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা তরুন সমাজ পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকানে প্রতিনিয়ত আড্ডায় লিপ্ত হচ্ছে এবং প্রকাশ্য দোকান হতে সিগারেট কিনে চিপায় আবার কখনো প্রকাশ্য ধূমপান করছে। এ সামাজিক চরম অবক্ষয় বলে আমি মনে করি। এ বিষয়ে কেসিসি’র ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ধূমপান ত্যাগের জন্য দরকার যুবসমাজের প্রবল ইচ্ছাশক্তি। ধূমপান প্রতিরোধে ধূমপানের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে তরুণ সমাজকে সচেতন করা, রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে ধূমপানের ক্ষতিকর দিকগুলো মিডিয়ায় তুলে ধরা, পরিবারে অভিভাবক ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সচেতনতা, যাতে ছেলেমেয়েদের মধ্যে এ ধরনের অভ্যাস গড়ে না উঠতে পারে, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এলাকায় সিগারেট ক্রয়-বিক্রয় ও ধূমপান নিষিদ্ধ করা এবং তা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ উচিত।
এ ব্যাপারে খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেড দেবশীষ বশাক জানান, প্রকাশ্যে জনসম্মুখে তথা পাবলিক প্যালেসে ধুমপান তথা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ যার জন্য জরিমানা তিনশত টাকা, এবং ১৮ বছরের নীচে অপ্রাপ্তদের নিকট ধুমপান বিক্রয় ও দন্ডনীয় বলে জানান এ কর্মকর্তা। এমন পরিস্থিতিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বিক্রেতা ও প্রাপ্ত বয়সের ধূমপান করার অপরাধে আইনের আওতায় আনা উচিত বলে মনে করছেন সুধী সমাজ। যদিও আইনে ১৮ বছরের নিচে কারও কাছে তামাক পণ্য বিক্রি দন্ডনীয় হলেও এ ক্ষেত্রে কোনো মনিটরিং নেই।
(ঊষার আলো-এমএনএস)