ঊষার আলো ডেস্ক : এখন আসলে যাকে ভারতীয় ধরন বলা হচ্ছে। এখন আমি তাকে বলব করোনাভাইরাসের ৪ নম্বর উদ্বেগজনক ধরন।
প্রথমটি যুক্তরাজ্যে, দ্বিতীয়টি দক্ষিণ আফ্রিকায় ও তৃতীয়টি ব্রাজিলে এবং চতুর্থটি ভারতে শনাক্ত হয়েছে। এগুলো সারা বিশ্বের অধিকাংশ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতে এ ধরন যেভাবে সংক্রমণকে একটি শীর্ষবিন্দুতে নিয়ে যায় ও সেখান থেকে এখন ধীরে ধীরে কমছে। এ ধরন আমাদের এখানেও নেপালের মতো ছড়িয়ে পড়ার একটা আশঙ্কা ছিল। তবে খুব দ্রুততার সাথে সীমান্তে যে ব্যবস্থাপনা নেওয়া হয়েছে তার ফলে ঢেউটা ধীর গতিতে প্রবেশ করছে। আসলে মহামারি কখনোই ঠেকানো যায় না কিন্তু এর গতি কমানো যায়। আমাদের সীমান্তে নেওয়া ব্যবস্থাকে মোটামুটি কার্যকরই বলা যায। তবে এ ব্যবস্থায় কোনো প্রকারের ঢিলেঢালা ভাব যেন না আসে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
এখন দেশের ভেতরেও অনুরূপ ব্যবস্থা নেওয়া খুবই প্রয়োজন। তার কারণ ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ১ নম্বর (যুক্তরাজ্য) এবং ২ নম্বর ধরন (দক্ষিণ আফ্রিকা) রয়েছে। দেশের ভেতরে ৪ নম্বর ধরন (ভারতীয়) ছড়িয়ে পড়া বিচিত্র কোনো ঘটনা না। ইতিমধ্যেই চাঁপাইনবাবগঞ্জে যাঁরা সীমান্তের ওপারে যাননি, তাঁদের মধ্যেও এ ধরন শনাক্ত করা হয়েছে। সীমান্তে যেমন ব্যবস্থাপনা নেয়া হচ্ছে, ঠিক তেমন দেশের ভেতরেও নিতে হবে। দেশের ভেতরে শনাক্তদের অধিকাংশই মৃদু লক্ষণযুক্ত ফলে সকলকে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে না। তবে তাঁদের জন্যও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। কারণ অনেকেরই আর্থিক সমস্যা রয়েছে। তাদেরকে সামাজিক সহায়তা দিয়ে আইসোলেশন এবং পরিবারের সদস্যদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে। কাউকে সামাজিক বৈষমম্যের জালে বা হেয়প্রতিপন্ন করা যাবে না। সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে যাঁরা অস্থায়ীভাবে কাজ করেন তাঁরা যেন তাদের কাজ না হারান। শনাক্ত রোগী ভাসমান কোনো মানুষ হলে তাঁদের হাসপাতালের বিশেষ কোনো ওয়ার্ডে রাখা যেতে পারে।
সীমান্তে এমনও পরিবার রয়েছে যাদের অর্ধেক সদস্য এপারে এবং অর্ধেক ওপারে থাকে। তাঁদের অনেকেই চলে এসেছেন এখন তাঁদেরকে আইনশৃঙ্খলার ভয়ভীতি না দেখিয়ে স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টিন থাকার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে তাঁদের করানো পরীক্ষাসহ অন্যান্য প্রয়োজনও মেটাতে হবে। তাঁদেরকে ভয় দিলে তারা অন্য জায়গায় চলে গিয়ে বরং সংক্রমণ ছড়াবেন।
এখন দেশের ভেতরে ও সীমান্তে শনাক্ত রোগীদের ব্যবস্থাপনা, সকলের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করা ও টিকা দেওয়া- এই ৩টি বিষয় এ মূহুর্তে সবচেয়ে বেশি দরকার। এখন প্রয়োজন সংক্রমণের জানা উৎস, অজানা উৎস ও ভবিষ্যৎ উৎস- এ তিনটির ক্ষেত্রেই প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করা ও সূক্ষ দৃষ্টি রাখা।
(সূত্র: প্রথম আলো)
(ঊষার আলো-এফএসপি)