মোঃ আব্দুল আজিজ, পাইকগাছা : প্রশাসনের অকুতোভয় এক সৈনিকের নাম এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী। যিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত ছুটে চলেছেন সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও এলাকার মানুষের কল্যাণে। মহামারী করোনায় সবকিছু যখন স্থবির করে দিচ্ছে করোনাকে ভয় না করে নিজের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে করোনা সংক্রমন প্রতিরোধসহ এলাকার কর্মহীন ও শ্রমজীবী মানুষের কাছে মানবিক সহায়তা নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন ইউএনও এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী।
তিনি কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এলাকার মানুষের জন্য কাজ করছেন। কাজের গতি এবং কর্ম ব্যস্ততার জন্য ইতোমধ্যে তিনি এলাকার সর্বস্তরের মানুষের কাছে একজন কর্মব্যস্ত ইউএনও হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। সম্প্রতি করোনার প্রদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় সবাই সংক্রমিত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন। ইতোমধ্যে এলাকার অসংখ্য মানুষের কোভিড-১৯ পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। প্রতিদিন যারা নমুনা পরীক্ষা করছে তাদের অর্ধেকেরও বেশি মানুষের পজেটিভ সনাক্ত হচ্ছে। প্রতিদিন কেউ না কেউ পজেটিভ অথবা কেউ না কেউ করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করছে। প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিলে সামিল হচ্ছে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন মানুষের মৃত্যু হওয়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে এক ধরণের ভীতি কাজ করছে। এর মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পজেটিভ সনাক্ত হওয়ায় তারা হোম কোয়ারেয়ান্টাইনে রয়েছেন। যার ফলে সীমিত জনবল নিয়ে করোনা সংক্রমন প্রতিরোধসহ প্রশাসনিক সকল কাজ করতে হচ্ছে ইউএনও এবিএম খালিদ হোসেনকে। এর মধ্যে ব্যক্তিগত গাড়ীর ড্রাইভার গত এক সপ্তাহ যাবত করোনা পজেটিভ নিয়ে কোয়ারায়ান্টাইনে রয়েছে। যার ফলে নিজেকে ড্রাইভ করে চলতে হচ্ছে ইউএনও খালিদ হোসেনকে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে এলাকায় টানা কয়েক সপ্তাহের লকডাউন চলছে। লকডাউনের ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন, মধ্যবিত্ত ও কর্মজীবী শ্রমজীবী মানুষেরা। এলাকার একটি মানুষেরও যেন দুর্ভোগ না হয় এবং কোন মানুষকে যাতে না খেয়ে থাকতে হয় তার জন্য মানবিক সহায়তার ব্যবস্থা করেছেন ইউএনও খালিদ হোসেন। তিনি প্রতিদিন যেখানেই যান পিকআপ ভর্তি খাদ্য সামগ্রী সাথে রাখেন। প্রতিদিন তিনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে চাল, ডাল, তেল, লবণসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী দিয়ে এসব খাবারের প্যাকেটজাত করেন। তারপর তা পিকআপে কিংবা পাজারো’তে লোড করা হয়। এরপর নিজেই ড্রাইভ করে বিভিন্ন এলাকায় ছুটে যান। কখনো তিনি কোন অসহায় ভ্যান চালক, নছিমন চালক কিংবা ইজিবাইক চালককে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে করোনা সংক্রমণ থেকে নিজ এবং নিজ পরিবারকে সুরক্ষিত রাখার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন। কখনো কোন দরিদ্র কিংবা দিনমজুর অথবা যে কোন শ্রমজীবী কর্মহীন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে পৌছে দিচ্ছেন মানবিক সহায়তা।
বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) এলাকায় দিনভর প্রচুর বৃষ্টি হয়। এদিনও বৃষ্টির মধ্যে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় যান খালিদ হোসেন। বৃষ্টি উপেক্ষা করে অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণ করেন খাদ্য সামগ্রী। নিজ এবং পরিবারের সুরক্ষার কথা চিন্তা না করে অনেকটাই ফেরি করার মতো এলাকায় এলাকায় গিয়ে মানবিক সহায়তা প্রদান করায় অনেকেই মানবিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকীকে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ইউএনও খালিদ হোসেনের এমন মানবিক কার্যক্রম করোনাকালীন সময়ে অব্যাহত থাকুক এমন প্রত্যাশা করেছেন এলাকাবাসী।
(ঊষার আলো-এমএনএস)