রাহাদ সুমন,বানারীপাড়া(বরিশাল)প্রতিনি ধি: বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের করপাড়া গ্রামের আল-আমিন আকনের ৩ বছর ১০ মাস বয়সের শিশু সন্তান শাহ্ জালালের পা পিছলে পায়ের গোড়ালির হাড় ফাক হয়ে যায়। সোমবার ১২ জুলাই সকালে তাকে তার পিতা বানারীপাড়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। জরুরী বিভাগ থেকে শিশুটিকে এক্স-রে করতে বলা হয়। হাসপাতালের এক্স-রে বিভাগেই এক্স-রে হয় শিশু শাহ্ জালালের। তবে সেখানে শিশুটির হতদরিদ্র দিনমজুর পিতাকে গুনতে হয় ২ শত ৫০ টাকা। পরে পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে জরুরী বিভাগে আসলে বলা হয় ব্যান্ডেজ করতে ৭ শত টাকা লাগবে। করোনাকালীন এ সর্বাত্মক লকডাউনে কর্মহীন দিনমজুর পিতার পক্ষে এতো টাকা দেওয়া সম্ভব না। তাই সে দারস্থ হয় বানারীপাড়ার মিডিয়াকর্মীদের কাছে।
বিষয়টি জেনে বানারীপাড়া প্রেসক্লাব সম্পাদক সুজন মোল্লা ওই শিশুটির পিতার ফোন দিয়ে কথা বলেন জরুরী বিভাগে থাকা এক স্টাফের সাথে। তবে পরিচয় পেয়ে তিনি ব্যান্ডেজ সাপ্লাই নাই বলে ফোন কেটে দেন। পরে অমানবিক এ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোষ্ট দেওয়া হয়। সেই পোষ্ট দেখে বরিশাল পুলিশের রেঞ্জ ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান শিশুটির চিকিৎসার প্রয়োজনীয় অর্থ পাঠিয়ে দিয়ে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিনকে শিশুটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বলেন। তাৎক্ষনিক ওসি হেলাল উদ্দিন ছুটে যান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তিনি ডিআইজির পক্ষে অসহায় পিতার কোলে থাকা অবুঝ শিশুটির চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করেন এবং ব্যবস্থাপত্রে লেখা যাবতীয় ঔষধও ডিআইজির অর্থে ক্রয় করে দেওয়ার পাশাপাশি শিশুটির বাবার হাতে ২ হাজার টাকা তুলে দেন। এসময় অসহায় পিতার অবয়বে স্বস্তি ও কৃতজ্ঞতার চিত্র ফুটে ওঠে। টাকার অভাবে ১ঘন্টারও বেশি সময় হাসপাতালে বসে থেকেও কলিজার টুকরা সন্তানের চিকিৎসা করাতে না পেরে যখন চোখের পানিতে বুক ভিজতে ছিলো তার তখনই মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দিলেন বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান। তার এই মহতী ও মানবিক উদ্যোগকে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ সাধুবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মন্তব্যও লিখেছেন। হতদরিদ্র আল-আমিন আকন তার শিশূ পুত্রের চিকিৎসার ব্যবস্থা করায় ডিআইজির প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন,ওই শিশুর চিকিৎসায় তার বাবার কাছে টাকা চাওয়ার বিষয়টি তার নলেজে নেই। জানা গেছে জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত এক সেকমো ও কম্পাউন্ডার ওই টাকা দাবি করেছিল। পরে ওসি হাসপাতালে গেলে সেই সেকমোই শিশুটির চিকিৎসাসেবা দেন।