ঊষার আলো ডেস্ক : ভারতের মহারাষ্ট্রের পালঘরের কয়েকজন মৎস্যজীবীরা সম্প্রতি সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। আর তাদের জালে বেশ কিছু ঘোল মাছ ওঠে। এবং তা দিয়েই ভাগ্য বদলে যায় তাদের। কোটি টাকায় নিলামে উঠে সেই মাছ।
অন্যান্য মাছের মতোই দেখতে, তবে মুখের দিকে সোনালি আভার এই মাছ কেন এত দামি?
কারণ দামের জন্যই ‘সমুদ্রের স্বর্ণ’ বলা হয় এই মাছকে।
ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়-এই সব দেশে এ মাছের চাহিদা খুব বেশি।
এই মাছে আছে ঔষধি গুণ। আর এর কারণেই এটির মূল্য এত বেশি। মাছ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ওষুধ উৎপাদন সংস্থাগুলো এ মাছ কিনে নেয়। এর দেহের প্রায় প্রতিটি অংশ দিয়েই তৈরি হয় ওষুধ।
এই মাছের বায়ু পটকা দিয়ে বৃক্কের বিভিন্ন রোগ নিরাময়ের ওষুধ তৈরি হয়। বিশেষ করে বৃক্কে (কিডনি) পাথর জমলে, তা দূর করতে নাকি দারুণ উপকারী ঘোল মাছের এই পটকা থেকে উৎপন্ন ওষুধ।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে ওই মাছের হৃদয় (হার্ট)। যার কারণে এর হৃদয়কে ‘স্বর্ণের হৃদয়’ও বলা হয়।
এই মাছের পাখনাও ফেলে দেওয়া যায় না। পাখনা দিয়েও বিভিন্ন ওষুধ তৈরি হয় ও দামি মদ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।
এছাড়া প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ, ভিটামিন আছে এই সামুদ্রিক মাছে। অস্ত্রপচারের পর দেহের সাথে মিশে যাওয়া সেলাইয়ের সুতো তৈরিতেও ব্যবহার করা হয় এই মাছের শরীরের অংশ।
এ মাছের দাম নির্ভর করে এর ওজন ও মাছটি পুরুষ না স্ত্রী তার ওপর। একটি ৩০ কেজির পুরুষ ঘোলের দাম অন্তত চার থেকে পাঁচ লাখ টাকার মধ্যে।
অপরদিকে ওই ওজনের একটি স্ত্রী ঘোলের দাম অনেকটাই কম হয়। এক থেকে দুই লাখ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করে।
দেহের ভিতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের আকার ও কতটা পুরু তার ওপরও নির্ভর করে দাম।
ভারতের উড়িষ্যায় সাড়ে ১৯ কেজির একটি ঘোল মাছ ধরা পড়েছিল। এক ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা সেটি ৮ হাজার টাকা কেজিতে কিনেছিল। এরপর ২০১৯ সালে ১০ কেজি ওজনের মাছ ধরা পড়েছিল জালে। তা বিক্রি হয়েছিল কেজি প্রতি ১০ হাজার টাকায়। ১৯ কেজির ওই মাছটিই এখনও পর্যন্ত ভারতে ধরা পড়া সবচেয়ে বড় কোনো ঘোল মাছ।
সম্প্রতি ভারতের মহারাষ্ট্রের পালঘরের সেই মৎস্যজীবীরা ১৫৭টি ঘোল মাছ পেয়েছেন। যা বিক্রি হয় ১ কোটি ৩৩ লাখ রুপিতে।
(ঊষার আলো-এফএসপি)