UsharAlo logo
বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিরতিহীন বৃষ্টিতে বিষন্ন নগরজীবন

koushikkln
ডিসেম্বর ৬, ২০২১ ১১:১৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : শীত ইতিমধ্যে সমাগত। তবে অবিরাম বর্ষার কারণে নগরবাসী ভুলতে বসেছে শীত বার্তা। সকলেই যেন মনে করেছে বর্ষাকাল চলছে। ঠিক বর্তমান সময়টা ঠিক যেন বর্ষার প্রকৃতি রূপ ধারণ করেছে। কখনো হালকা আর কখনো হালকা থেকে মাঝারী বর্ষা অব্যাহত রয়েছে। টানা বিরতিহীন এই বর্ষায় জনজীবনকে অনেকটাই বিষন্ন হয়ে উঠেছে। গত রবিবার (০৫ ডিসেম্বর) ভোর হতে রাত হতে শুরু হওয়া অবিরাম বর্ষায় নগরীর অধিকাংশ এলাকার অলিÑগলির রাস্তাগুলোতে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতার। টানা বর্ষায় ঘরবন্দি হয়ে পড়ে অধিকাংশ মানুষ। নগরবাসীকে চলাচলে পোহাতে হয়েছে চরম দুভোর্গ।
দিনভর এই বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে ছুটে চলা নগরীর কর্মব্যস্ত মানুষগুলো চরম ভাগান্তির বিপাকে পড়েছে।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, উত্তর-পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলঘœ পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নি¤œচাপটি ক্রমশ দুর্বল হয়ে লঘুচাপে রূপান্তিত হয়েছে। সমুদ্রে সৃষ্ট লঘুচাপের ফলে কারণে এই বৈরী আবহাওয়া তথা হালকা হতে মাঝারী বা ভারী বৃষ্টিপাত অব্যহত রয়েছে। নগর জুড়ে এই নি¤œচাপের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে।

নগরীর খুলনা ডাকবাংলা, শিববাড়ী, নিউমার্কেট, সোনাডাঙ্গা, শান্তিধাম, রয়েলমোড়, পিকচার প্যালেস, ময়লাপোতা, নিরালা, গল্লামারী , রুপসা, খালিপুর, দৌলতপুর, বৈকালী ফুলবাড়ী, শিরোমনিসহ নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অফিস-আদালত ছুটে চলা কর্মব্যস্ত মানুষ , বিভিন্ন বাজার, পাড়া-মহল্লার অলিতে গলিতে সকল বয়সের মানুষেরা চলাচলে ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছে। বিশেষ করে বিশেষ করে নগরীর দৌলতপুরের আঞ্জুমান রোড, আমতলা মোড়, ঋষিপাড়া মোড়, সরদার লেন, দৌলতপুর খান রোড, মুহসীন মোড়, কল্পতরু মাঠ চত্বর ,কৃষি কলেজ কবরখান সংলঘœ রোড়, হোসেন শাহ রোড, দেয়ানা উত্তরপাড়া মাঠ চত্বর, গাজীবাড়ি মোড়, পাখির মোড়, আসাদের মোড়, যশোর মোড়, চুন্নুর বটতলা, পাবলা তিন দোকানের মোড়, ডে নাইট কলেজ মোড়, সবুজ সংঘ মাঠ চত্বর, পাবলা বনিকপাড়া, ট্যাংকলরী মোড়, কুলিবাগান মোড়, মধ্যডাঙ্গা নগর, পালপাড়া মোড়, রেলিগেট মোড়, পালপাড়া বৌ বাজার, কালিবাড়ী বাজার মোড়, সেনপাড়া, গাজীর মোড়, মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়া এলাকায় বিরতিহীন বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাট, ছোট বড় জলাশয়ে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে ঘরবন্দি হয়ে পড়ে অধিকাংশ মানুষ। এ ছাড়া বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হয়নি। যদিও বাইরে বের হয়েছে তবে গায়ে রেইনকোর্ট বা মাথার উপর বাধ্যতামূলক ছাতা রয়েছে। দিনভর বৃষ্টিতে পড়ে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো চলাচলরত যানবহনের সংখ্যা ছিল সীমিত। রাস্তায় যাত্রীও ছিল কম। তবে রিক্সার আনাগোনা ছিল নগরী জুড়ে। এমন বৈরী আবহাওয়ার সবচেয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে নি¤œ আয়ের মানুষের বৃষ্টি উপক্ষো করেও তাদের নামতে হয়েছে কর্মে।

সৌরভ নামের চাকুরীজীবী জানান, টানা বর্ষনে জনজীবন অনেকটাই বিষন্ন হয়ে উঠেছে। রাস্তায় চলাফেরা করা অনেক কষ্ট হচ্ছে, চারিদিকে স্যাত স্যাতে কাদা আর পানি।
দৌলতপুর খান রোডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী আজাদ খান বলেন, আমরা দৌলতপুর ৫নং ওয়ার্ডের খান রোডের বাসিন্দা। কোন রকম একটু ভারী বর্ষন হলেই রাস্তায় হাটু সমান পানি জমা হয়। আমাদের এখানে সেই অনেক আগেরকার চিকনসরু ড্রেন ছিল। তার প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। আধুনিক বা নতুন কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার কারনে এই অবস্থা। টানা দিনরাত বৃষ্টির কারণে রাস্তার মোড়ে মোড়ে পানি জমে গেছে।

তার মতো বেশ কয়েকজন পথচারী জানান, বৃষ্টির কারণে অনেকই প্রয়োজন ছাড়া ঘর হতে বের হয়নি। দৌলতপুর বাজারে সৃষ্টি হয়ে স্যাতস্যাতে পরিবেশের যার দরুন ক্রেতা বিক্রেতা এই বৃষ্টির কারণ চরম ভোগান্তিতে পড়ে।
সবজি বিক্রেতা মোঃ মামুন শেখ জানান, লঘুচাপে পড়ে টানা এই বৃষ্টির কারনে বাজার প্রায় ক্রেতা শূন্য। বেচাকেনা খুবই কম। কাদার ভয়ে অনেকে বাজারে আসেনি।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ জানান, কেন্দ্রীয় আবহাওয়া অফিসের চৌদ্দ নং বিজ্ঞপ্তিনুসারে, উত্তর-পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলঘœ পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নি¤œচাপটি আরো উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলঘœ পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় করছে। সুস্পষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালন মেঘমালা সৃষ্টি অব্যহত রয়েছে এবং বায়ূর তারতম্যের আধিক্যে বিরাজ করছে। এরই প্রভাবে উত্তরবঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় অস্থায়ী দমকা/ঝড়ো হাওয়া সহ বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টি অব্যহত আছে। সুস্পষ্ট লঘু চাপের কারণে চট্টগ্রাম,কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ (তিন) নং স্থানীয় সর্তক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তিনি আরো জানান, গতকাল খুলনায় সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত গড় ৩১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। লঘুচাপটি কেটে গেলে রাত্রের তাপমাত্রা কমবে আর শীতের তীব্রতা বাড়বে।