UsharAlo logo
বৃহস্পতিবার, ২৮শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিত্যপণ্যের মূল্যের উর্দ্ধগতিতে দিশেহারা ক্রেতা

koushikkln
এপ্রিল ৫, ২০২২ ১১:০৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মোঃ আশিকুর রহমান : রোজার মাস চলছে। প্রতিবছরই রমজানে বাজারের নিত্যপণ্যের দাম হুহু করে বেড়ে যায়। মাছ-মাংস, সবজি, তেল, চিনি, ছোলা, ডাল, আটা, ময়দা, বেশন, ভাজ্য তেল থেকে শুরু করে প্রতিটি পণ্যের দাম যেন অনেকটাই উর্দ্ধগতি বলে জানিয়েছেন বাজারে আসা সাধারণ ক্রেতাগন।

বিশেষ করে মাছ, মাংস, আর সবজির দাম অনেকটাই আকাশ ছোয়া। সবজির গড় দর ৬০ টাকার নিচে নামছে না। সবজিতে হাত দিলেই দাম ৬০ টাকা। বহুমুখি সংকটে সল্প আয়ের মানুষ। বাড়ছেনা নিম্ন-আয়ের সাধরণ কর্মজীবী মানুষের আয়। আয়ের বিপরীতে পরিবারের সদস্যদের ভরণপোষন আর আহার যোগাতে খেতে হচ্ছে হিমশিম। ডিাল, ডাল, ভোজ্য তেল, মাছ-মাংস সহ নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম লম্বা ট্রেনের মতো বিরতিহীন হয়ে ছুটে চলছে, যে কারণে এসকল পণ্য ক্রয়ে সাধারণ নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে।
সরেজমিনে, নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে দেখা গেছে, বোতলজাত ভোজ্য সয়াবিন বসুন্ধারা ৫ লিঃ ৭৯৫ টাকা, তীর ৫ লিঃ ৭৬০ টাকা। ভোজ্য সয়াবিন খুচরা প্রতি কেজি ১৭০ টাকা, সুপার ১৭০ টাকা, পাম্প তেল প্রতি কেজি ১৫৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলেন জানান ব্যবসায়ীরা।

নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে চাল প্রতিকেজি ২৮ বালাম ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা, মিনিকেট মানভেরদে ৫২ থেকে ৫৮ টাকা, বাসমতি ৬২ থেকে ৬৪ টাকা ও স্বর্ণা মোটা ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
চাল ব্যবসায়ী সাদ্দাম জানান, ইতিমধ্যে বাজারে নতুন চাল আসা শুরু হয়েছে। বর্তমানে যে দামে চাল বিক্রি হচ্ছে তা পূর্বের তুলনায় কম। সাধারণত ধানের দাম বেশি বাড়লে চালের দাম বেড়ে যায়।

নগরীর খুচরা বাজারে সবজির দামও অনেকটা নাগালের বাইরে শষা ৬০ টাকা, খিরাই ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, বটবটি ৬০ টাকা, উচ্ছে ৬০ টাকা, ঢেড়শ ৬০ টাকা, ঝিঙে ৬০ টাকা, টমোটো ৩০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, পুইশাক ৩০ টাকা, পালংশাক ৩০ টাকা, লালশাক ৩০, ঘি-কাঞ্চন শাক ৩০ টাকা, লাউ প্রতি পিচ ৩০ টাকা, পেপে ৩০ টাকা, কলা হালি ৩০ টাকা, কাচাঝাল এলসি ৮০, ধনে পাতা ২০০ টাকা, কুমড়া ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর মাছ বাজারেও বিভিন্ন দেশি ও সামুদ্রিক মাছের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ইলিশ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১ হাজার হতে ১২’শ টাকায়, ৫/৬ গ্রামের মাছ বিক্রি হয়েছে ৬০০-৭০০ টাকায়। আর ঝাটকা ইলিশ কেজি বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকায়।
একই সাথে কয়েকদিনের ব্যবধানে গরু ও মুরগীর মাংশের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। নগরীর বাজার গুলো গরুর মাংস একলাফে ৫৫০ টাকা হতে ৬০০ টাকা হয়েছে। মুরগী বয়লার প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, কক ২৭০ টাকা, লেয়ার সাদা ২৪০ টাকা, লেয়ার লাল ২৬০, সোনালী ২৬০ টাকা, দেশি ৪০০ টাকা ও দেশি হাস ৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ী আজাদ জানান, ভোজ্য সয়াবিন তেলের বাজার দীর্ঘদিন ধরে অস্থিতিশীল অবস্থায় আছে। আর্ন্তজাতিক বাজারে তেল দাম বৃদ্ধিও কারণে তেলের দাম বেশি বলে জানান ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া বাজারে বর্তমানে তেলের কৃত্রিম সংকট দেখা দিয়েছে।
খুলনা বড় বাজারে আসা ক্রেতা ফয়সাল জানান, ‘সয়াবিন তেলের দাম কমছে না। প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। আর্ন্তজাতিক বাজারে তেলের দাম বৃদ্ধি অজুহাতে চলছে সিন্ডিকেট। যার মাশুল দিতে হচ্ছে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের। আবার টিসিবি’র লাইনে দাড়িয়ে তেল পাওয়া যায়।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) খুলনার সূত্রে জানা যায়, খোলা বাজারে তেল, ডাল চিনি ও পেয়াজের দাম বেশি হওয়ার কারণে টিসিবি ট্রাকসেলের জেলাপ্রশাসন ও কেসিসি’র মাধ্যমে ফ্যামিলি প্যাকেজে নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্য নায্য মূল্য বিক্রি করছে। খোলা বাজারের বিপরীতে টিসিবি তেল প্রতি লিটার ১১০ টাকা, চিনি ৫৫ টাকা, ডাল ৬০ টাকায় বিক্রি করছে। উর্ধ্বগতির বাজারে টিসিবি’র দেওয়া তেল, ডাল ও চিনি ও পেয়াজ পেয়ে সাধারণ মানুষ বেশ স্বস্তিতে।

অপরদিকে রমজান শুরু হওয়া মাত্র মাছে দাম নানা অজুহাত দেখিয়ে বাড়তি দামে বিক্রি করে বিক্রেতারা।  সরেজমিনে মঙ্গলবার সকালে নগরীর বিভিন্ন মাছ বাজার ঘুরে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
মাছ বাজারগুলোতে প্রচুর পরিমানে দেশি ও সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ দেখা গেছে, তবে বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন ক্রমশই যেন বাজার চড়াও আর দামও যেন লাগামহীন।

বাজারে ইলিশ, রুই, পাবদা, গলদা চিংড়ি, কই, তেলাপিয়া, গ্লাসকার্প, মিনারকার্প, ভেটকি, সামুদ্রিক কংকন, মৃগেল, সিলভারকার্প, কাতলা, পোয়া, বাইলে, দাতনে, পাঙ্গাস, বাইন, ট্যাংড়া, সরপুটি, বোয়াল,সহ বিভিন্ন প্রকারের মাছ বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন , বাজারে প্রচুর দেশি ও সামুদ্রিক মাছের সমাহার থাকলে বিক্রেতারা একটু বেশি দাম নিচ্ছেন। ইলিশ ৬/৬ গ্রাম ওজনের কেজি ৭০০ টাকা, ৩ পিসে কেজি ৫০০ টাকা, দেড় কেজি ১৫০০ টাকা, ১ কেজি ৮০০ গ্রাম ১৮০০ টাকা, ঝাটকা ইলিশ ৫০০ টাকা, রুই মানভেদে ২০০ হতে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ হতে ৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৭০০ হতে ১২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১০০-১২০ টাকা, লাইলোটিকা বড় ১৫০-২৫০ টাকা, ভেটকি মানভেদে ৫০০ হতে ৭০০ টাকা, বোয়াল মানভেদে ৫০০ হতে ১০০০ টাকা, পারসে ৬০০ টাকা, সিলভার ২০০ টাকা, কংকন মানভেদে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, কাতলা ২৫০-৫০০ টাকা, পাঙ্গাস ১৩০-২০০ টাকা, বাইন ৩০০-৬০০ টাকা, ট্যাংড়া ৪০০-৬০০ টাকা, সরপুটি ৪০০ টাকা, সামুুদ্রিক ভাঙ্গন ৪০০ টাকা, সামুুদ্রিক ট্যাংরা ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।