বাজারে ইলিশের সরবরাহ থাকলেও নেই বৈশাখী আমেজ
এম এন আলী শিপলু : রাত পোহালেই বাঙালি জাতির এক আনন্দ উৎসব পহেলা বৈশাখ। ওই দিন থেকেই করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। সেই সাথে পহেলা বৈশাখ পালনে সরকারের পক্ষ থেকে প্রজ্ঞাপন জারী হয়েছে। ফলে পহেলা বৈশাখের কোনও প্রভাব নেই ইলিশের বাজারে। প্রতি বছর স্বাভাবিকভাবে বৈশাখ বরণের যে আয়োজন চলে তা এবার নেই। পান্তা ইলিশের আয়োজনও বলতে গেলে ম্লান করে দিয়েছে করোনা।
বিভিন্ন বাজারের ইলিশ মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, কবে পহেলা বৈশাখ তা বাজারের অবস্থা দেখে বুঝতে পারছেন না তারা। কেউ পহেলা বৈশাখের জন্য মাছ কিনতে আসছে কিনা তাও জানি না। পহেলা বৈশাখের সময় আসতে না আসতেই মাছ কেনার ক্রেতার অভাব হতো না। এবার তা নেই।
মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) খুলনার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ইলিশের সরবরাহ থাকলেও নেই ক্রেতার সমাগম, নেই বৈশাখী কোনও আমেজ ও উত্তেজনা। সে জন্য ইলিশ মাছের দোকানগুলোতে নিত্যদিনের বাজারের চিত্রই পরিলক্ষিত হচ্ছে।
নগরীর মিস্ত্রিপাড়া কাঁচা বাজার, টুটপাড়ার জোড়াকল বাজার, ময়লাপোতার সান্ধ্যবাজারসহ আশপাশের মাছ বাজারে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়।
মিস্ত্রিপাড়ার ইলিশ বিক্রেতা গোপাল বলেন, এক কেজি ইলিশ মাছের দাম আকার ভেদে সাতশ’ থেকে এক হাজার টাকা। নয়শ’ গ্রামের ইলিশ এক হাজার টাকা ও তার বেশি। এর চেয়ে কম ওজনের ইলিশের ক্ষেত্রে পাঁচশ’ গ্রামের দাম আটশ’ টাকা। দুইশ’ গ্রাম থেকে আড়াইশ’ গ্রাম ইলিশ (জাটকা টাইপ) দাম পাঁচশ’ টাকা।
একই বাজারের অপর বিক্রেতা জানান, আড়তে সরবরাহ কম থাকায় শুধুমাত্র ছোট সাইজের মাছ কিনে বিক্রি করছি। আমার কাছে দুইশ’ গ্রাম সাইজের মাছ। এই সাইজের মাছ বিক্রি করছি পাঁচশ’ টাকা কেজি। বেচা-বিক্রি টুকটাক হচ্ছে। তবে গতবারের তুলনায় অনেক কম। তাই বাধ্য হয়ে সাথে অন্য মাছ বিক্রি করছি। বৈশাখের কারণে বাজারে ইলিশ বিক্রিতে কোনও প্রভাব পড়েনি।
টুটপাড়ার জোড়াকল বাজারের ইলিশ মাছ ব্যবসায়ী মোঃ রসুল বলেন, করোনার জন্য লোকজনের কাছে টাকা নেই। তাছাড়া লকডাউন ও রোযার কারণে ইলিশের ক্রেতাও নেই। গত বছর পহেলা বৈশাখের এই দিনেও মাছ বিক্রি করেছি অনেক। এখন একঝুড়ি ইলিশ দু’দিনেও বিক্রি করতে পারছি না। তার কাছে পাঁচশ’ গ্রামের ইলিশের দাম তিনশ’ টাকা কেজি। আর ছোট জাটকা ইলিশ (৭/৮ পিসে কেজি) এর কেজি একশ’ টাকা। তাও কিনছে না কেউ। এবার কবে পহেলা বৈশাখ তা বুঝতেই পারছি না।
(ঊষার আলো-এমএনএস)