পলাশ কর্মকার, কপিলমুনি : কপিলমুনিসহ এর আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকায় জনস্বাস্থ্য হুমকির আরেক নাম প্লাস্টিক দূষণ। পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রী অবলিলায় ব্যবহারে জনস্বাস্থ্য হুমকি ও বিপদজনক দিকে যাচ্ছে। এখনই পদক্ষেপ না নিলে সহসাই মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়বে এ জনপদের লাখ লাখ মানুষ।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে পলিথিন ও প্লাস্টিক জাতীয় পণ্যের প্রচলন মানব জীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। কাঠ ও পাটের তৈরি দ্রব্যসামগ্রী দীর্ঘস্থায়ী কম এবং দাম বেশি হওয়ায় মানুষ পলিথিন ও প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহার করছে। কিন্তু পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্য কখনও দ্রবীভূত হয়না বলে এর দূষণ জন্ম দিয়েছে গভীর উদ্বেগের। করোনা কালীন এবং বড় বড় উৎসব উপলক্ষে অনলাইন শপিং ও অনলাইন ফুড ডেলিভারিতে ব্যবহৃত নানা রকম প্লাস্টিকের মোড়ক, অনটাইম চামচ ও নানা সামাজিক, মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত অনটাইম প্লেট প্লাস্টিক দূষণের গতিতে নুতন মাত্রা যোগ করেছে। আর এই দূষণ এ জনপদে পরিবেশ, জীববৈচিত্র, অর্থনীতি ও মানবস্বাস্থ্যের জন্য এক বিরাট হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এই অঞ্চল পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচিয়ে বাসযোগ্য করে তুলতে এক্ষনি প্লাস্টিক দূষণের লাগাম টেনে ধরার আহবান জানিয়েছেন বিজ্ঞজনরা।
পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্যের বহুল ব্যবহারে এ অঞ্চলের নদী-নালা, খাল, পুকুর সহ অন্যান্য জলাশয় ও মাটি প্লাস্টিক দূষণে দূষিত হচ্ছে। প্রতিদিন হাজার হাজার পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্য কপোতাক্ষ নদসহ বিভিন্ন জলাশয়ে ফেলা হচ্ছে। ফলে অদ্রবীভূত এ সব পণ্য নদ নদী খালে পড়ে এর তলদেশ ক্রমশ উঁচু হয়ে ধীরে ধীরে নাব্যতা হারাচ্ছে। বহু জলাশয়ের পানি বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এর বিরুপ প্রতিক্রিয়ায় জলজ প্রাণী ধংসের দিকে যাচ্ছে। মাটিতে মিশে মাটির উর্বরতা হ্রাস পাওয়ায় ফসল উৎপাদন কমে যাচ্ছে। যেহারে পলিথিন-প্লাস্টিকের ব্যবহার ও যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে পরিবেশ বিপর্যস্থ হয়ে প্রাণী কূলের টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে পরিবেশ সচেতনরা আশংকা প্রকাশ করেছেন।