মোঃ আশিকুর রহমান : বর্ষা মানেই আষাঢ়। আষাঢ়ের মাঝামাঝি চললেও কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমের অনুভূতি বিষন্ন করে তুলছে মানুষের স্বাভাবিক জীবযাত্রাকে । বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) দুপুরে ভারী বর্ষণ খুলনার বাসীকে স্বস্তি দিয়েও সাময়িক দূর্ভোগেও ফেলেছে। ভারী বর্ষণের কারনে নগরীর অধিকাংশ নিচু সড়কে সড়কে সাময়িক জলাবন্ধতায় দেখা যায় হাঁটুজল। এমন হাঁটুজল জলবদ্ধতায় পরে সড়কে চলাচলরত যানবহনসহ পথচারী, শহরে ছুটে চলা কর্মব্যস্ত মানুষকে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
খুলনা আবহাওয়া অফিস জানায়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষ বিহার, পশ্চিম বঙ্গ এবং বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সংক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। যার প্রভাবে অস্থায়ীভাবে দমকা হওয়ার সাথে বিজলী চমকানোসহ হালকা হতে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টি, কোথাও কোথাও ভারী বর্ষনের সম্ভবনা হয়েছে।
কয়েক ঘন্টার ভারী বর্ষা চলে অবিরাম, কখনো ভারী আবার কখনো হালকা। অঝড়ে ঝড়ে মুসলধারার বৃষ্টি। যার প্রভাবে নগরীর অধিকাংশ খানাখন্দ, সড়ক, মহাসড়কে পাশে দেখা দেয় সাময়িক জলবন্ধতার। বর্ষার কবল হতে পরিত্রান পেতে অনেকে ছাতি, রেইনকোর্ট পড়ে বাইরে বের হয়েছে।
সরেজমিনে, নগরীর ডাকবাংলা, শিববাড়ী, ফেরীঘাট, নিউমার্কেট, ময়লাপোতা, সাতরাস্তার মোড়, গল্লামারী, নিরালা, জিরোপয়েন্ট, রুপসা, সোনাডাঙ্গা, খালিশপুর (বিআরডিসি রোড), দৌলতপুর, রেলিগেট, মানিকতলা, ফুলবাড়ীগেট, শিরোমনি এলাকায় বৃষ্টির কবলে পড়ে স্থানীয় এলাকার বাসিন্দাসহ পথচারী সাময়িক দূর্ভোগ পড়ে। তাছাড়া নগরীর বিভিন্ন সড়কসহ খুলনা-যশোর মহাসড়কে স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হয়েছে এই বর্ষার কারণে। তবে রিক্সাওয়ালাদের ছিল বেশ কদর।
বিক্রয় প্রতিনিধি জাকির জানান, গ্রীষ্মের উত্তাপ শেষে বর্ষাকাল শুরু হলেও কমেনি গরমের তীব্রতা। দিনের বেলায় বেশ গরম লাগছে, মার্কেটে কাজ করতে গরমে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। তবে গতকাল দুপুরে ভারী বর্ষনের কারনে সাময়িক স্বস্তি অনুভূত হলেও দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। কারণ রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে হাওয়ার দরুন সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার আর অবস্থা ছিল না। মাকেটিংয়ের চাকুরী করি। শহরের এক প্রান্ত হতে অন্যপ্রান্তে যেতে হয়। বর্ষার কারণে দীর্ঘ সময় আটকে ছিলাম। অবশেষে ভিজে কাজে নামতে হয়েছে।
আটো চালক কাশেম জানায়, গতকালের হঠাৎ করে নামা ভারী বৃষ্টির কারণে রাস্তায় যাত্রী কম ছিল। এমনিতেই রাস্তায় গাড়ি প্রচুর পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছে, অপর দিকে বৃষ্টিতে নামমাত্র রাস্তায় যাত্রী ছিল। বর্তমানে গাড়ী ভাড়া ৪৫০ টাকা, এরপর রাস্তায় খরচ প্রায় ১০০ টাকা। সকল টাকা পরিশোধ বাড়ীতে ৪/৫’শ টাকা নিয়ে ফিরতে টানাটানি বাধে। তারপর দ্রব্যমূল্যর যে উর্ধ্বগতি, বাচার আর উপায় নেই।
নগরীর বিভিন্ন মাছ মাংশের বাজারেও এই বর্ষায় দূর্ভোগ বাড়িয়েছে। ক্রেতা বিক্রিতা উভয় পড়ে চরম বিপাকে। বাজার সমুহে স্যাত স্যাতে কাদায় চলাচল দুস্কর। একই সাথে বর্ষার কারনে বেশ ক্রেতা শূন্য হয়ে পওে নগরীর বাজারগুলো।
আম বিক্রেতা মামুন জানান, বর্ষাকাল শুরু হলেও গরমের ভাব যায়নি। কয়েকদিন পরে টানা বড় একটা বৃষ্টি হলো, এতে পরিবেশ শীতল হলেও কিছুটা দূর্ভোগ নেমে এসেছে। বর্ষার কারনে বাজাওে তুলনামূলক ক্রেতা কম ছিল। তাই কেনাবেচা তেমন ভালো হয়নি।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোঃ আমিরুল আজাদ জানান, মৌসুমি বায়ুর অক্ষ বিহার, পশ্চিম বঙ্গ এবং বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সংক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। যার প্রভাবে অস্থায়ীভাবে দমকা হওয়ার সাথে বিজলী চমকানোসহ হালকা হতে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টি, কোথাও কোথাও ভারী বর্ষনের সম্ভবনা হয়েছে। তিনি আরো জানান, তাছাড়া যেহেতু এখন বর্ষাকাল তাই সাধারনত বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভবণা থাকবে।