মোঃ আশিকুর রহমান : মহানগরীর ব্যস্ততম উপশহর দৌলতপুরের মুহসীন মোড়, আজ্ঞুমান ঈদগাহ্ মোড় ও ট্রাফিক মোড় (আকাংখা টাওয়ার এর সম্মুখে) এই তিনটি মোড়ে মাহেন্দ্রা, সিএনজি, ইজিবাইক ও অটোরিক্সার জটে এলোপপাতাড়ি রাস্তা দখলের উৎসব চলছে। যে কারণে পথচারীসহ সাধারন মানুষের চলাচলে চরম বেগ পেতে হচ্ছে। জনভোগান্তিতে পড়া বিষয়টি নিয়ে যাদের মাথা ব্যাথা থাকার কথা তাদের নিরবতার কারনেই দৌলতপুরে তিনটি মোড়ে দেখা দিয়ে চরম ভাগান্তি।
দৌলতপুর উপশহরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্ববহন করা তিনটি মোড়ের সড়কগুলো একেইতো সংকীর্ন, তারপর আবার চালকেরা ইচ্ছা-স্বাধীন এলোপাতাড়ি রাখছে ওই সকল যানবাহণ গুলো। যার ফলে দিনের অধিকাংশ সময়জুড়ে স্বাভাবিক চলাচলে ব্যাহত হচ্ছে, বিশেষ করে বেশি দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দিন শেষে কর্মস্থল হতে ফেরা ঘরমুখি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছে, দৌলতপুরে উঠার গুরুত্বপূর্ন লিংক রোড হলো, মুহসীন মোড়, আজ্ঞুমান রোড ও ট্রাফিক মোড় ( আকাংখা টাওয়ার এর সামনের) লিংক রোড। যা এখন মাহেদ্রা, সিএনজি, ইজিবাইকসহ অটোরিক্সার দখলে। মুহসীন মোড়ের এলোপাতারী দাড়িয়ে থাকা ইজিবাইক, মাহেন্দ্রা সরাসরি শাহ্পুর গিয়ে থামে। মোড়টিতে কেএমপি ট্রাফিক বিভাগের পার্কিংয়ের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কে শোনে, কার কথা! নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে একদিনে চলছে পার্কিং, অপরদিকে নির্ধারিত রুটে যাত্রী ওঠানামার জন্য চলে প্রতিযোগীতা। গুরুত্বপূর্ন মোড় ধরেই প্রতিদিন শতশত শিক্ষার্থী সরকারি মুহসীন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বালিকা বিদ্যালয়, কৃষি প্রশিক্ষন ইনষ্টিটিউটসহ সরকারী প্রাইমারী স্কুলে যাতায়াত করে, একই সড়কে গুরুত্বপূর্ন কর্মস্থলের লোকেরা, ব্যবসায়ীসহ সাধারণ পথচারীরা সৃষ্ট জটলার কারনে চলাচলে চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। তারা দ্রæত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সৃষ্ট সমস্যার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
অপরদিকে, গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি মোড় হলো আজ্ঞুমান ঈদগাহ্ সংলগ্ন (মিনাক্ষীর মোড়)। সড়কটি আহামরি প্রশাস্ত নয়, বেশ সংর্কীন। তথাপী সড়কটি স্থানীয় এলাকার বাসিন্দাদের নিকট চলাচলে অত্যন্ত গুরুত্ববহণ করে আসছে দুদীর্ঘ কাল হতে। আজ্ঞুমান ঈদগাহ্ সংলগ্ন মিনাক্ষীর মোড়টি দিয়ে দেয়ানা ঋষিপাড়া, মুকুলভান্ডার, হাসপাতাল মোড়, উত্তরপাড়ামাঠ, পাখির মোড়, বালুর মাঠ, যশোর মোড় পর্যন্ত যাত্রীবহন করে চালকেরা, দারুন উপকৃত হয়ে সাধারন যাত্রীরা তাদের গন্তব্য স্থানের পৌছনোর জন্য। তবে দুঃখের বিষয় সংর্কীন সড়কটিতে ইজিবাইক যেভাবে সারিবদ্ধভাবে হুটহাট এলোপাতাড়ি রাখা শুরু করেছে তাতে করে চলাচলে উপকারের চেয়ে যেন অনেকটাই দূর্ভো পাহাচ্ছে পথচারীসহ কর্মব্যস্ত স্থানীয় বাসিন্দাদের বলে মন্তুব্য। একইসাথে অটোচালিত রিক্সার এলোপাতাড়ি লম্বা লাইন তো আছেই, সবমিলিয়ে জগা খেঁচুরি। সৃষ্ট সমস্যার প্রতিকারে কোনো নিয়মনীতি মানার প্রবনতাই নেই চলাচলকারী যানবাহনের চালকদের, সকলেই ইচ্ছা-স্বাধীন চলাচল করছে।
একই অবস্থা দেখা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক মোড় ( আকাংখা টাওয়ার উত্তরপার্শ্বের) স্থানটিও। মহাসড়কের সম্মুখে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি অটোরিক্সা, আর হেঁটে দু’পা সামনে গেলেই ইজিবাইকের বিশৃঙ্খল সারি। ওই রুটটিতে ইজিবাইক, অটোরিক্সা মোল্লার মোড়, চুন্নুর বটতলা, যশোর মোড় পর্যন্ত যাত্রী নিয়ে ছোটে। কোনো নিয়মনীতি মানার প্রবনতা না থাকার কারনেই স্থানীয় বাসিন্দাদের গুরুত্বপূর্ন মোড়টি দিয়ে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করাটা যেন অনেকটাই গলারকাটা হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য তাদের, তারা জটলাহীন ভাবে চলাচলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন। সর্বপরি, দৌলতপুরের ওই গুরুত্বপূর্ন তিনটি মোড় ইজিবাইক, মাহেন্দ্রা ও অটোরিক্সা দখলে থাকার কারনে পথচারীসহ স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থী কর্মব্যস্ত সাধারন মানুষকে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
চাকুরিজীবি অনুপ জানান, বাইরে প্রচুর গরম পড়া শুরু করছে, ভাদ্রর মাস বলে কথা। কর্মস্থল থেকে ক্লান্ত শরীরে বাড়ীতে ফিরতে গেলেই ট্রাফিক মোড়ের লিংক রোডের সম্মুখে বিশাল জটলার মুখে পড়তে হয়। অটোরিক্সা, ইজিবাইকের জটলা লেগেই থাকে। চলাচলে দিন দিন ভোগান্তি বাড়ছে ছাড়া কমছেনা।
মোটরসাইকেল আরোহী ফাহিম জানান, আজ্ঞুমান রাস্তা এমনিতেই সংর্কীন, তারপর আবার যে পরিমানে গতিরোধক তাতে মোটরসাইকেল চালানো দুস্কর। ক্লাস করতে করতে সারা রাস্তা শেষে মিনাক্ষী হলের সম্মুখে এলে আর রেহাই নেই দীর্ঘ জটলার হাত হতে। সারি সারি ইজিবাইক আর অটোরিক্সার জটলা। সড়কটি দিয়ে এই এলাকার মানুষ ইজিবাইকে করে সহজে গন্তব্যস্থলে পৌছতে পারে কিন্তু দূর্ভোগ বা মানুষের চলাচলে অসুবিধা সৃষ্টি করে এলোপাতারী গাড়ি রাখা ঠিক নয়। ইজিবাইক ও অটোরিক্সার ইচ্ছা স্বাধীনভাবে পাকির্ং করার কারণে এ দূর্ভোগ।
কেএমপি ট্রাফিক বিভাগের ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) মনিরা সুলতানা জানান, ট্রাফিক বিভাগ ইতিমধ্যে দৌলতপুরে অবৈধ ফুটপাতকে অমুক্ত করছে, যেহেতু দৌলতপুরের গুরুত্বপূর্ন তিনটি মোড়ে জন সাধারনের চলাচলে দুর্ভোগের বিষয়ে জানানো হয়ে, দ্রæত সৃষ্ট সমস্যার সমাধানের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।