UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কুয়েট শিক্ষার্থীসহ দুজনের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা আইনে মামলা, গ্রেফতার ১

koushikkln
সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২ ২:২১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের (কুয়েট) সিএসই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমান (২২)সহ দুইজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল ডিভাইজ দিয়ে সরকারি বিরোধী আক্রমণাত্মক ও মানহানিকর তথ্য প্রকাশ করে কুয়েট ছাত্রদের মধ্যে অস্থিরতা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলার অবনতি চেষ্টার অভিযোগ করা রয়েছে।

।। তিন ঘন্টা আটকে রেখে মারধরের অভিযোগ ।। 

গত সোমবার রাতে কুয়েটের সিকিউরিটি অফিসার মো. সাদেক হোসেন প্রামাণিক নগরীর খানজাহান আলী থানায় এ মামলা করেন। মামলার অপর আসামি রেজওয়ান স্যাম (২১) ভোলার বোরহানউদ্দিন মুশিরহাট গ্রামের বাসিন্দা।

এদিকে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, মোবাইল অ্যাপে সরকারবিরোধী মিথ্যা মন্তব্য করার মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা তাকে মারপিট করেছে। পরে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। জাহিদুর রহমান কুয়েটের সিসিই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি ড. এম এ রশিদ হলের ১১৭ নম্বর আবাসিক ছাত্র । ঐ হলের গেস্ট রুমেই তাকে মারধর করা হয়েছে। তিনি ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের ইন্দ্র নারায়ণপুর গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে।

কুয়েট সূত্র জানায়, শিক্ষার্থী জাহিদুর রহমানকে আটকের সময় রবিবার রাতে ড. এম এ রশিদ হলে ছাত্রলীগ কর্মীরা দীর্ঘ তিনঘন্টা ধরে মারধর করে। ঐ রাতেই পুলিশ তাকে বিশ^বিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

কুয়েটের সিকিউরিটি অফিসার সাদেক হোসেন প্রামাণিক জানান, ঐ শিক্ষার্থীসহ ব্র্যাক বিশ^বিদ্যালয় এবং গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের আরো দুই শিক্ষার্থী ‘টেলিগ্রাম’ অ্যাপসের মাধ্যমে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রচার ও দেশ বিরোধী সমালোচনা করতো। তারা সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়েও আপত্তিকর সমালোচনা করেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা গত রবিবার রাত ৯টার দিকে ড. এমএ রশিদ হলের ১১৭ নম্বর রুম থেকে তাকে ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোনসহ আটক করে। পরে হলের প্রভোস্টসহ কুয়েটের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে তাকে পুলিশে সোপর্দ করেন।

ড. এম এ রশিদ হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রভোস্ট এম ডি হামিদুল ইসলাম জানান, ঐ শিক্ষার্থীর কাছে দেশ বিরোধী কিছু ম্যসেজ ও কিছু খেলাফত টাইপের বই পাওয়া যায়। বিভিন্ন গ্রæপের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, কিছু চ্যাটিং করেছে। সন্দেহ হওয়ায় বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, তাকে আটকের সময় শিক্ষার্থীরা চড়-থাপ্পড় দেয়।
এদিকে শিক্ষার্থী জাহিদুরের বড় ভাই নাঈম অভিযোগ করে বলেন, আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে যেসব কথা বলা হচ্ছে তা সত্য নয়। ও কোনো সংগঠনের সঙ্গে জড়িত না। তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। তাকে কুয়েটের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বেদম প্রহর করেছে, ফলে সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

নগরীর খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন জানান, কুয়েটের সিকিউরিটি অফিসার মো. সাদেক হোসেন প্রামাণিক বাদী হয়ে জাহিদুর রহমান এবং রেজওয়ান স্যামের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। বর্তমানে জাহিদুর রহমান খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ একইভাবে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তিন শিক্ষার্থীকে ফজলুল হক হলের একটি কক্ষে আটকে রেখে ব্যাপক মারধর করা হয় এবং ২০১৮ সালের ফেব্রæয়ারিতে দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করে পুলিুশে দেয়া হয়।