UsharAlo logo
শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাল কার্ড থাকলেও হতদরিদ্র মায়েদের মিলছে না ফ্রি স্বাস্থ্য সেবা

koushikkln
সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২ ১১:৪৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : গর্ভবতী মায়ের যতœ নিন-সুস্থ শিশু উপহার দিন—এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আরবান প্রাইমারী হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারী প্রজেক্ট দ্বিতীয় পর্যায়ের আওতায় খুলনা নগরীর ৮টি ওয়ার্ডে মা ও শিশুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার দায়িত্ব নিয়েছে স্যাটেলাইট ক্লিনিকের ব্যানারে বাপসা নামের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। এ দায়িত্ব নিয়ে সংস্থা ঘোষণা দিয়েছে রংধনু চিহ্নিত নগর মাতৃসদন ও নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে আছে আপনার পাশে। ২০০০ সালের ১৯ আগস্ট শুরু হওয়া এ প্রকল্পটি আগামী ২০২৩ সালের ৩১ মার্চ শেষ হবে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে বাকী আছে প্রায় ছয় মাস। খুলনা সিটি কর্পোরেশন এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগিতা করছে।

হত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বেশী বসবাস করছে ২১নং ওয়ার্ডের ঘাট ও বস্তি এলাকাগুলোতে। সেই ২১নং ওয়ার্ডে এ সংস্থার ১০টি অস্থায়ী অফিস রয়েছে। লক্ষিত এ জনগোষ্ঠীর সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য তারা প্রতিশ্রæতিবদ্ধ হলেও মাঠ পর্যায়ে সম্পূর্ণ বিপরীত। টাকা ছাড়া তাদের কোন সেবাই হয় না। ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পটি নগরীর ৮টি ওয়ার্ডে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ওয়ার্ডগুলো হচ্ছে- ১৬, ১৭, ১৮, ২১, ২২,২৩, ২৫ ও ২৬নং ওয়ার্ড। এ এরিয়ায় জনগোষ্ঠী হচ্ছে ২লাখ ৫ হাজার ১শত ৫৩ জন। পরিবার হচ্ছে ৩৮ হাজার ২শত ৭৬টি। মোট লাল কার্ড ৮ হাজার ২শত ৫০টি। সুবিধাভোগী মা হচ্ছেন ১২ হাজার ৩শত ৮ জন। ১২টি নাগরিক কমিটি। এ প্রকল্পে জন শক্তি হচ্ছে ১৩৩ জন। এর মধ্যে ৯৫ জন মহিলা ও ৩৮ জন পুরুষ। এ বিশাল প্রজেক্টের প্রচার-প্রচারণার অভাবে এ সংস্থার সেবা দরিদ্রজনগোষ্ঠী সেভাবে পাচ্ছে না। সংস্থার সেবার মান, কমিটি গঠন, টাকার বিনিময়ে সেবা নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ সেবাগ্রহীতারা চরম ক্ষুব্দ।

নগরীর ২১নং ওয়ার্ড জোড়াগেট রেললাইনের পাশের বাসিন্দা কেয়া আপা। তিনি এলাকায় নেত্রী হিসেবে পরিচিত হলেও স্যাটেলাইট ক্লিনিক চেনেন না। তবে তার এলাকায় ব্রাকের দু’আপা গর্ভবতী মায়েদের খোঁজখবর নিতে আসেন। তার ঘরের সাথেই ৬ মাসের গর্ভবতী স্বাধীন হাওলাদারের স্ত্রী চান বাণু। তাকে ব্রাকের আপার এসে খোঁজখবর নেয় বলে জানান চান বাণু। পাশেই মুদি দোকানদার মোঃ আজিম। তিনিও একই কথা বলেন। তিনি দীর্ঘ দিন এখানে দোকানদারী করলেও এমন নামে এলাকায় ক্লিনিক আছে তা তার জানা নেই বলে জানান।

মন্টুর কলোনীর বাসিন্দা হাফিজের স্ত্রী তাসলিমা বেগম জানান, দু’জন মহিলা আসেন। তারা কোন এনজিও থেকে আসেন তা জানেন না। তবে তিন মাসের জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন (ডিপো) বাবদ নেয় ৫০ টাকা, গর্ভবতী চেক আপ বাবদ নেন ৬০-৭০ টাকা, আয়রণ ট্যালেটের পাতা ৫০-৬০ টাকা, মায়া বড়ি ২০ টাকা নেয়। একই অভিযোগ করলেন ওই এলাকার হাসান শিকদারের স্ত্রী ইয়াসমিন। তবে কোন রশিদ দেন না। ইদ্রিস শেখের স্ত্রী নুরজাহান জানান, এখানে স্যাটেলাইট ক্লিনিক আছে তা জানি না। বেবী বেগম বলেন, পরীর ঘরে স্বাস্থ্য আপারা আসেন। তারা গর্ভবতী মায়েদের পরামর্শ দেন, চিকিৎসা দেন না।
মন্টুর কলোনীর কয়লা ডিপোর মহিলা নেত্রী ডালিম বেগম জানান, তার ঘরে বসেই চিকিৎসা চলে। তার বাড়ির সাথে সাইনবোর্ড আছে ইপিআই টিকা কেন্দ্রের। প্রতি সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দু’জন আপা আসেন। গর্ভবতী মায়েদের পরামর্শ দিয়ে দুপুর দেড়টার দিকে চলে যান। তারা মায়ের চেক আপের জন্য ২০টাকা, ডায়াবেটিক টেস্টের জন্য ৩০ টাকা নেন। এক্স, আল্ট্রাসোনো করার দরকার হলে ২৩নং ওয়ার্ডে আরবানে পাঠায়ে দেন। এখানে খরচের অর্ধেক টাকা নেন। তবে টাকা নেয়ার কোন রশিদ দেন না তারা। এ কলোনীতে ১২-১৩শত লোকের বসবাস। সবাই দরিদ্র জনগোষ্ঠী। তার ঘরের পাশেই পুষ্টি কেন্দ্র নামে একটি সাইন বোর্ড রয়েছে। ওইখানে স্যাটেলাই ক্লিনিকের অস্থায়ী স্পট হলেও পাশের কেউই চেনে না। স্পটের পাশের বাসিন্দা রোকেয়া বেগম ও নাসিমা বেগম জানান, সুই বাবদ ৫০ টাকা, চেক আপ বাবদ-২০ টাকা, আয়রণ ট্যাবলেটের পাতা-৩০ টাকা, ওজন মাপার জন্য ১০টাকা নেয়। কোন টাকারই রশিদ দেয় না। কোন সেবাই তাদের ফ্রি দেয়া হয় বলে তারা জানান। একই কথা বললেন তিন মাসের গর্ভবতী আখি বেগম। তিনি বলেন, লাল কার্ডধারীদের সব সেবাই অর্ধেক টাকা দিতে হয়। ঘাট শ্রমিক হুমায়ুন কবিরের স্ত্রী তানিয়া জানান, এখানে স্যাটেলাইট ক্লিনিক নেই। দু’জন মহিলা আসেন। তারা ইনজেকশন বাবদ ৫০ টাকা, মায়া বড়ি বাবদ ২০-৩০ টাকা নেন। তারা কোন সেবাই ফ্রি দেন না। স্যাটেলাইট ক্লিনিকের লাল কার্ডধারী (৩৯৪) জুয়েল আমিনের স্ত্রী বৃষ্টি মন্টুর কলোনীতে বাস করেন। তিনি বলেন, লাল কার্ড থাকলেও কোন সেবা ফ্রি দেয় না। সুই (ডিপো) দেয়া বাবদ ৫০ টাকা রাখছে।

ওই কলোনীর বাসিন্দা রিক্সা চালক সোহেলের স্ত্রী কোহিনুর জানান, প্রায় তিন বছর আগে লাল কার্ড দেয়ার জন্য নাম নেয় আপারা। কিন্তু আজও তিনি লাল কার্ড পাননি। স্যাটেলাইটের আপার চেক আপ বাবদ ৫০ টাকা ও আয়রণ ট্যাবলেট বাবদ ৫০ টাকা রাখে। তবে কোন রশিদ দেয় না। লাল কার্ডধারী (৪৯২) ইদ্রিসের স্ত্রী সালমা বেগম। তিনি বলেন, চার মাস আগে তিনি কার্ড পেয়েছেন। কার্ড বাবদ ২০ টাকা নেয়। সুই (ডিপো) বাবদ ৫০ টাকা, চেক আপ বাবদ ২০ টাকা, আয়রণ ট্যাবলেট বাবদ ৩০/৪০ টাকা নেন আপারা। আর গর্ভবতী মায়েদের সিজার করতে অর্ধেক টাকা নেয় তারা। টাকা ছাড়া তাদের কোন সেবাই পান না। মন্টুর কলোনীতে যার বাসায় স্যাটেলাইট ক্লিনিকের অস্থায়ী কেন্দ্র সেই পরী বেগম জানান, তার ঘরে বসে প্রায় ২৬ বছর ধরে চলছে মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা। সবুজ ছাতা দিয়ে শুরু, এরপর আসে সূর্যের হাসি, আরবান, আর এখন চলছে বাপসার স্যাটেলাইট ক্লিনিক। এসব সংস্থার আগে স্বাস্থ্য সেবা ছিল ফ্রি। এখন সব কিছুই টাকা লাগে। স্বাস্থ্য আপার প্রতি রবিবার তার বাসায় আসেন। চেক আপের জন্য ৩০ থেকে ৫০ টাকা নেন। গর্ভবতী মায়ের অপারেশন করতে লাগে ৮ হাজার টাকা। তার অর্ধেকই দিতে হয় রোগীকে। অপারেশন থিয়েটারেরর (ওটির) ওষুধ রোগীকেই কিনে দিতে হয়। সন্তান প্রসব শেষে মাকে নিজের টাকাই বাকী ওষুধ কিনে খেতে হয়। সব মিলিয়ে মাতৃসদনে পাঠানো রোগীর খরচ হয় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। তবে খরচের কোন রশিদ তারা রোগীকে দেন না। এমন কি ধর্মসভা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গেলে স্বাস্থ্য কর্মীরা রোগীদের সাথে খারাপ আচরণ করে। যার জন্য ধর্মসভা আরবান ক্লিনিকে এখন আর রোগী পাঠানো হয় না। এখন রোগী পাঠানো হয় খুমেক হাসপাতালে। মন্টুর কলোনীর বাসিন্দা ঘাট শ্রমিক হাসানের স্ত্রী সুমী গত দু’ মাস আগে লাল কার্ড পেয়েছেন। রক্ত পরীক্ষা, প্রসাব পরীক্ষাসহ পাঁচটি পরীক্ষা বাবদ তার কাছ থেকে সাতশত টাকা নিয়েছে বলে তিনি জানান। লাল কার্ডধারী(৫৫) চামেলী বলেন, তার বাচ্চা প্রসবে কোন টাকা খরচ হয়নি। তবে রক্তের জন্য দু’ হাজার টাকা লাগে।

বাপসার প্রজেক্ট ম্যানেজার গোলাম রসুল জানান, ২১ ও ২৩নং ওয়ার্ডে স্যাটেলাইট স্পট আছে ১২টি। ছয় দিন পর পর ছয় স্পটে ২জন করে কর্মী যান। একজন প্যারামেটিক অপরজন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকারী (প্রোভাইটার)। এ রকমভাবে নগরীতে ৭২টি স্পট রয়েছে। ৬টি নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। ২টি মাতৃসদন রয়েছে। একটি ১২নং ওয়ার্ডে অপরটি ২২নং ওয়ার্ডে। ২৫ হাজার জনগোষ্ঠীর বিপরিতে ১টি নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। প্রতিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিপরিতে ১৬জন জনশক্তি কাজ করেন। তার মধ্যে ১জন এমবিবিএস চিকিৎসক, ১জন ল্যাবটেকনিশিয়ান, ১জন এফডাবিøউভি, ৩জন প্যারামেটিক, ২ জন এফডাবিøউএ, ২ জন সার্ভিস প্রোপাইটার, ১জন ফিল্ড সুপার ভাইজার, ১ জন এডমিন, ১জন কাউন্সিলর, ১জন গার্ড, ১জন ক্লিনার, ১জন রিসিপস্টিস্ট। তার সংস্থা নগরীর ৮টি ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকে। ওয়ার্ডগুলো হচ্ছে- ১৬,১৭, ১৮, ২১, ২২, ২৩, ২৫ ও ২৬নং ওয়ার্ড। ৮টি ওয়ার্ডে জনগোষ্ঠী ২ লাখ ৫ হাজার ১শত ৫৩ জন। ২১ ও ২৩ ওয়ার্ডের সেবা একস্থান থেকে হয়। ২১নং ওয়ার্ডে জনগোষ্ঠী ২০২২০ জন ও ২৩নং ওয়ার্ডে জনগোষ্ঠী ১৩ হাজার ৭শত ৯৩ জন। ২১নং ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ওটি অবস্থান বয়রা কলেজ মোড়ের বিপরীত পাশে। তারা ২৩নং ওয়ার্ডের গোলকমণি পার্কের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন। লাল কার্ডধারীদের ওষুদের ক্ষেত্রে ১০% ছাড় আর বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। সেবা দিতে গিয়ে মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা কিছু টাকা গ্রহণ করেন। তবে তার রশিদ দেয়া হয় বলে তিনি দাবি করেন।

২১ ও ২৩নং ওয়ার্ডে সুপারভাইজার মাহবুব বলেন, এ দু’টি ওয়ার্ডে লাল কার্ড তালিকাভুক্ত রয়েছে ১৪শত জন। কিছু কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। বাকী কার্ড বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। লাল কার্ডধারী রোগীদের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সেবা বাবদ টাকা নেয়া হয় না। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতে গেল কেন এত দিনেও কার্ড বিতরণ করেননি-এমনই প্রশ্নে মাহবুব বলেন, করোনার কারণে ওই সময় কার্যক্রম পুরো স্থবির হয়ে যায়। যার জন্য তালিকা করা হলেও কার্ড বিতরণ শেষ হয়নি।
২১নং ওয়ার্ড সচিব মামুন জানান, বাপসার পরিচালনায় এ ওয়ার্ডে ১০টি অস্থায়ী স্যাটেলাই (ক্লিনিক) কেন্দ্র রয়েছে। কেন্দ্রগুলো হচ্ছে-বড় রেললাইন আনসার আলীর বাড়ির সামনে, সূর্যের বাড়ি, জোড়াগেট পুষ্টি কেন্দ্র, গ্রীনল্যান্ড ডি বøক, নতুন বস্তি, এরশাদ আলী প্রাইমারী স্কুল, প্রভাতী প্রাইমারী স্কুল, রেলওয়ে হাসপাতাল, শিশু হাসপাতাল ও জেনারেল হাসপাতাল। এ ওয়ার্ডে চারশ’র মত লাল কার্ডধারী রোগী আছে। তবে তাদের কাছে এসব রোগীর কোন তালিকা নেই বলে জানান।

খুলনা মহানগর নাগরিক ফোরামের যুগ্ম আহবায়ক হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, এত বড় সেবার স্ব স্ব এলাকায় চার্ট ঝুলানো উচিত। কোন সেবায় কত খরচ আর কারা এ সেবা পাবে তা সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে লক্ষিত জনগোষ্ঠীকে জানানো উচিত। প্রচার প্রচারণা ব্যাপকভাবে করতে হবে। তা না করে গোপন করার প্রাক্টিস থেকে সবাইকে বের হতে হবে। তবেই দরিদ্র মানুষ স্বাস্থ্য সেবা সঠিকভাবে পাবে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ পর্যায়ে এসেও লাল কার্ড বিতরণ কোনভাবেই আইন কভার করে না। কমিটি গঠন ও কাউন্সিলরের সাথে সমন্বয় না করাও নীতিমালা বর্হিভূত। এ জন্য তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এই নাগরিক নেতা।

২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আরবান হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারী প্রজেক্টের ২য় পর্যায়ের ২১নং ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি সামসুজ্জামান মিয়া স্বপন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত তিন বছর আগে লাল কার্ড বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এরপর আর কোন সমন্বয় তার সাথে করা হয়নি। এছাড়া কমিটি গঠন বা তার সভা সেমিনার ও প্রশিক্ষণ কোন কিছুই গত তিন বছরে দেখা যায়নি। লাল কার্ডধারী রোগীদের বিনামূল্যে সেবা দেয়ার কথা থাকলেও এমন রেকর্ড তার জানা নেই। প্রসূতি গেলেই ডেলিভারীর জন্য ৭ থেকে ১২ হাজার খরচ নেয় রোগীদের কাছ থেকে। যারা তার পর্যন্ত আসতে পারে তাদের ব্যাপারে তদ্বির করলে তাদের ক্ষেত্রে ডেলিভারী খরচ বাবদ ৫-৭হাজার টাকা নিয়ে থাকে।

এনেস্থেতেসিয়া, অপারেশন সার্জন, এ্যাম্বুলেন্সসহ আনুসাঙ্গিক সব কিছু প্রজেক্টে থাকার কথা থাকলেও বাইরে থেকে চিকিৎসক আনার কথা বলে রোগীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এ সংস্থা।

তিনি বলেন, জনগণ সঠিক সেবা পাক-এটা তার চাওয়া। টেন্ডারের মাধ্যমে এসব অযোগ্য এনজিও দায়িত্ব পায়। পরে নগরবাসীর সেবা দিতে পারে না। নানা অজুহাতে টাকা কেটে নেয়। টেন্ডার না দিয়ে কেসিসির মাধ্যমে এ সেবা দিলে আরো সুফল বেশী পেত নগরবাসী বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হতদরিদ্র জনগণের চিকিৎসার জন্য যে মহতি উদ্যোগ নিয়েছেন তার সুফল মাঠ পর্যায়ের জনগন পাচ্ছে না বলে তিনি দাবি করেন। কারণ এসব অযোগ্য ও দুনীর্তিবাজ এনজিওদের কারণে জনগণ সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

কেসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও বাপসা প্রকল্পের সুপারভিশন অফিসার ডাঃ স্বপন কুমার হালদার বলেন, করোনার কারণে প্রকল্পের কাজের ধারাবাহিকতা কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এ প্রকল্পের কাজ ঠিক মত হচ্ছে কি না সে ব্যাপারে মেয়র তালুকদার আঃ খালেক নিয়মিত খোঁজ নেন।। তবে যেমনটি বলছেন তেমনটি হওয়ার সুযোগ নেই। দরিদ্র মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে হবে সংস্থাকে। তারপরও যদি কোন ত্রæটি পাওয়া যায় তবে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ কার হবে বলে তিনি জানান।