UsharAlo logo
শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দ্রুত পানি নিষ্কাসন হওয়ায় আমন চাষে ব্যস্ত পাইকগাছার কৃষকরা

koushikkln
সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২ ৯:৩৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মোঃ আব্দুল আজিজ, পাইকগাছা (খুলনা) : পানি নিষ্কাসনে দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করায় স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে পাইকগাছার প্রায় প্রতিটি এলাকা। ইতোমধ্যে পানি সরে যাওয়ায় শুক্রবার থেকে আমন চাষ শুরু করেছে গড়ইখালী ইউনিয়নের কৃষকরা। টানা ৪ দিনের বৃষ্টিপাত এবং বৃহস্পতিবারের ভারী বর্ষণে উপজেলার অন্যান্য এলাকার ন্যায় গড়ইখালী ইউনিয়নের গোটা এলাকা তলিয়ে যায়। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে কৃষি সমৃদ্ধ ইউনিয়ন গড়ইখালী। এ ইউনিয়নে একদিকে যেমন রবি মৌসুমে তরমুজসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ হয়, তেমনি বর্ষা মৌসুমে ইউনিয়নের প্রতিটি কৃষক আমন চাষ করে থাকে। ৩০ হাজার মানুষের বসবাস অত্র ইউনিয়নে। চলতি মৌসুমে বৃষ্টির অভাবে অন্যান্য এলাকার কৃষকরা যখন দিশেহারা তখন এই ইউনিয়নের কৃষকরা ঘোষখালী নদীর পানি দিয়ে বীজতলা তৈরি এবং স্বল্প পরিসরে আমন চাষ শুরু করে। গত রোববার থেকে টানা বৃষ্টিপাত শুরু হলে ইউনিয়নের কৃষকরা পুরোদমে ধান রোপণের কাজ শুরু করে।

এদিকে বৃহস্পতিবার ভোররাতে কয়েক ঘন্টার ভারী বর্ষণের অন্যান্য এলাকার ন্যায় অত্র ইউনিয়নের গড়ইখালী, ফকিরাবাদ, শান্তা, কুমখালী, গাংরখী, বাইনবাড়িয়া, উত্তর বাইনবাড়িয়া, দক্ষিণ বাইনবাড়িয়া, আমিরপুর, উত্তর আমিরপুর, দক্ষিণ আমিরপুর, পাতড়াবুনিয়া, বগুলার চক, কানাখালী, বাসাখালী ও হোগলার চক সহ ইউনিয়নের গোটা এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। ফসলি জমি, পুকুর ও জলাশয় পানিতে একাকার হয়ে যায়।

প্লাবিত ইউনিয়নের পানি নিষ্কাসনে পূর্ব থেকেই প্রস্তুত ছিলেন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিএম আব্দুস সালাম কেরু। ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনেরও ছিল বিভিন্ন দিক নির্দেশনা। চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম কেরু লোকজন নিয়ে বৃষ্টির মধ্যে খুব দ্রæত সময়ের মধ্যে পানি নিষ্কাসনে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেন। বিশেষ করে ইউনিয়নের ঘোষখালী, গাংরখী ও নাপতিখালী প্রধান যে ৩টি ¯øুইচ গেট রয়েছে সবগুলো গেটের জোয়ার তোলা বন্ধ করে সার্বক্ষণিক ভাটা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। এছাড়া বাইনবাড়িয়া, পাটকেলখালী, শান্তা, গাংরখী ও শালুকখালী খালের অবৈধ নেট-পাটা অপসারণ করার পাশাপাশি শান্তা ও কুমখালীসহ বিভিন্ন এলাকার বাঁধ কেঁটে দ্রæত পানি নিষ্কাসনের ব্যবস্থা নেন। যার ফলে বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে ফসলি জমি ও পুকুর জলাশয় সহ গোটা এলাকার পানি সরে যায়। পানি সরে যাওয়ার সাথে সাথে ফসলি জমি জেগে যাওয়ায় শুক্রবার থেকে আবারও কৃষকরা আমন ধান রোপণ কাজ শুরু করেছে। বাইনবাড়িয়ার সোনা ময়রার ছেলে কৃষক বিশ^জিৎ জানান ভারী বর্ষণে আমাদের ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে যায়, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পানি নিষ্কাসনে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে অনেক ক্ষতি হতো। বর্তমানে ফসলি জমি জেগে যাওয়ায় শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে আমরা আবার আমন ধান রোপণ কাজ শুরু করতে পেরেছি। ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আব্দুস সালাম কেরু জানান আমার ইউনিয়নের বেশিরভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। বৃহস্পতিবার ভারী বর্ষণে ইউনিয়নের প্রতিটি এলাকা তলিয়ে যায়। পানি নিষ্কাসনে ¯øুইচ গেট গুলোতে ভাটার ব্যবস্থা করা এবং খালের বাঁধ ও নেট-পাটা অপসারণ করায় দ্রæত পানি নিষ্কাসন করা সম্ভব হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে ইউনিয়নের প্রতিটি এলাকায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে বলে গড়ইখালী ইউপি চেয়ারম্যান জানান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজা বেগম জানান, জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কায় ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের আগে থেকেই প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া ছিল। নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করায় অনেক এলাকা দ্রæত স্বাভাবিক হয়েছে আবার অনেক এলাকা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। দুই এক দিনের মধ্যে সব এলাকা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়ে যাবে এমনটাই জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী এ কর্মকর্তা।