UsharAlo logo
বুধবার, ১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বিদ্যুৎপোল না সরিয়েই বিএল কলেজ সড়কের ড্রেন নির্মাণ

koushikkln
সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২ ১০:০১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : খুলনার ঐতিহাসিক বিদ্যাপীঠ সরকারি ব্রজলাল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ (বিএল) কলেজ। এ সড়কের ড্রেন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে বিদ্যুৎ পোল। পোল অপসারণ না করেই ড্রেনের কাজ করছে। এতে করে আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। পানি প্রবাহ সঠিকভাবে করতে হলে বিদ্যুৎ পোল অপসারণের কোন বিকল্প নেই ।

।। ব্যয় ধরা হয়েছে সোয়া ৩ কোটি টাকা ।।

ঐতিহ্যবাহী বিএল কলেজের সামনের সড়কটি দীর্ঘদিন বেহাল দশায় রয়েছে, একই সাথে বর্ষাকালে পানি নিষ্কাশনের জন্য উন্নত কোনো ড্রেনেজ সিস্টেম ছিল না। যে কারণে কলেজে আগত শিক্ষকবৃন্দ, শিক্ষার্থীসহ আশপাশের অঞ্চলের মানুষের চলাচলের জন্য অনেক দূর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। বড় বড় খানাখন্দ, উঁচু-নিঁচু গর্তে আর সামান্য বৃষ্টিতে জমা থাকা জলাবদ্ধতায়ও। পুরাতন যশোর মহাসড়কের দৌলতপুরস্থ ট্রাফিক মোড় হতে পূর্বে এ লিংক রোডটি নতুনরাস্তার ট্যাংকলরী মোড়ের উত্তরপার্শ¦ পর্যন্ত বিস্তৃত। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে রয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানসহ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, আবাসিক ভবন। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের হস্তক্ষেপে অবশেষে সরকারি বিএল কলেজ সম্মুখ ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নতিকরণের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ৯০% কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকী কাজ শেষ করতে বাধার মুখে পড়েছে ঠিকাদার। বৈদ্যুতিক পোল এ বাধার অন্যতম কারণ বলে ঠিকাদার জানান।

কেসিসি সূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যে জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতিকরণে বিএল কলেজ রোডে আরসিসি ড্রেন নির্মাণ প্রকল্প খাতে ৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ের কাজ চলমান, ইতিমধ্যে যার ৯০% কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তারা আশাবাদী দ্রæত সময়ের মধ্যে বাকি কাজ সম্পন্ন শেষে ৩ কোটি ১৫ টাকা প্রকল্প ব্যয়ে বিএল কলেজ সম্মুখ নতুন সড়কের কাজ শুরু হবে। ইতিমধ্যেই ওই সড়কের টেন্ডার ও কার্যাদেশ সম্পন্ন হয়েছে। তবে যেহেতু ড্রেনেজ সিস্টেমের কিছু আংশিক কাজ বাকি আছে যার দরুন রাস্তার কাজ শুরু হতে একটু সময় লাগছে।

কেসিসি’র অর্ন্তভূক্ত ৬নং ওয়ার্ডস্থ বিএল কলেজ সম্মুখ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে খানাখন্দে বেহাল দশায় পড়ে থাকার পর অতিদ্রæত সময়ে ড্রেনসহ সড়ক নির্মাণ কাজে একদিকে যেমন কলেজের শিক্ষার্থীরা আনন্দিত। অন্যদিকে আনন্দিত দীর্ঘদিন বেহাল সড়কের দুর্ভোগে পড়া চলাচলকালী পথচারীসহ চালকবৃন্দসহ স্থানীয় এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা।

ওই কাজের ঠিকাদার মোঃ জাকির হোসেন বলেন, এই বিদ্যুৎ পোল অপসারণের জন্য কাজ শুরুর সাথে সাথে বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দেয়া হয়। কিন্তু তারা তেমন গুরুত্ব না দেয়ায় আজ ড্রেন নির্মাণ কাজে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কাজের ধারাবাহিকতা নস্ট হচ্ছে এই বিদ্যুৎ পোলের জন্য। তবে ইতোমধ্যে এসব পোল ও ট্রান্সমিটার অপসারণের জন্য চিঠি অনুমোদন হয়েছে। এখন ঠিকাদার মাঠ পর্যায়ে এসে পোল অপসারণ করলেই ড্রেনের কাজ আবারো পুরোদমে শুরু করা যাবে। তবে ইতোমধ্যে ড্রেনের কাজ ৯০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এক কিলোমিটার লম্বা ড্রেনের বাকী কাজ বিদ্যুৎ পোল অপসারনের মাধ্যমে শিগগিরই সম্পন্ন করা হবে বলে তিনি জানান।

৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, এসব বিদ্যুৎ পোল কেসিসির ড্রেন উন্নয়ন কাজে বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে। তবে ড্রেন করার আগে পোল অপসারণ জরুরী। তা না হলে নির্মিতব্য ড্রেন পোল অপসারনের সময় আবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যা কারোরই কাম্য নয় বলে এই নাগরিক নেতা মনে করেন।

কেসিসির তত্ত্বাবধায় প্রকৌশলী মোঃ মশিউজ্জামান খান বলেন, ড্রেনের ভিতরে বিদ্যুৎ পোল থাকার কারণে অনেক ড্রেনের কাজ করতে পারছে না ঠিকাদার। এ জন্য ওজোপাডিকোকে একাধীকবার চিঠি দেয়া হলেও কাজের কাজ তেমন হচ্ছে না বলে তার অভিযোগ। এ সমস্যা শুধু বিএল কলেজ রোড নয়, নগরী জুড়েই শতাধিক পোল তাদের ড্রেনের কাজে বাঁধা হয়ে আছে।

৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ শামসুদ্দিন আহম্মেদ প্রিন্স জানান, ড্রেনের মাঝে বিদ্যুৎ পোল (খাম্বা) রেখে ড্রেনের কাজ শেষ করলে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। যদি ঠিকাদার এমনটি করে ফেলেন তাহলে ঠিক হয়নি। আগে বিদ্যুৎ পোল অপসারণ করতে হবে, পরে ড্রেনের কাজ করতে হবে। বিষয়টি তিনি খোঁজখবর নিয়ে দেখছেন বলে জানান। তিনি বলেন, জনগণের দুঃখ-দুর্দশা, দূর্ভোগ দূর করাই কাউন্সিলরের প্রধান কাজ। খুলনার সার্বিক উন্নয়নে মেয়রের সুদৃষ্টি রয়েছে। তারই অংশ হিসাবে ইতিমধ্যে বিএল কলেজের দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতা নিরসনে উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা কাজ চলমান, সেই সাথে ড্রেনের কাজ শেখ হওয়া মাত্রই শুরু হবে রাস্তার কাজও। দীর্ঘদিন পরে হলেও ড্রেন ও রাস্তার কাজের মধ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এলাকাবাসী চরম উপকৃত হবে বলে তিনি মনে করেন।

কেসিসি’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) মোঃ মিজানুর রহমান জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নতিকরণে বিএল কলেজ রাডে আরসিসি ড্রেনে নির্মান প্রকল্প খাতে ৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ের কাজ চলমান রয়েছে, শিগগিরই ড্রেনের কাজ সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশাবাদী। ড্রেনের কাজর শেষ হওয়া মাত্রই ৩ কোটি ১৫ টাকা প্রকল্প ব্যয়ে বিএল কলেজ সম্মুখ নতুন সড়কের কাজ শুরু হবে। ইতিমধ্যেই সড়কের টেন্ডার ও ওয়ার্ক অর্ডার সম্পন্ন হয়েছে। তবে ড্রেনের মধ্যে বিদ্যুৎ পোল সরানোর জন্য ওজোপাডিকোকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে পোল সরানোর জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। শিগগিরই তারা পোল অপসারণের কাজ শুরু করবেন বলে তিনি জানান। তবে পোল সরানোর সময় নতুন করে আবারো ড্রেন ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা ঠিকাদার মেরামত করে দিবেন বলে তিনি জানান।

ওজোপাডিকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের-২ নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিএল কলেজ রোডের নির্মানাধীন ড্রেনের মাঝে পড়া বিদ্যুৎ পোল অপসারণে কেসিসির সাথে কথা হয়েছে। তবে তারা পোল অপসারণের করতে খরচ দিতে চায় না। খরচ দিয়ে পোল অপসারণ করে নিতে বলা হয়েছে।