কপিলমুনি(খুলনা) প্রতিনিধি : দো-মাটি শেষে চলছে তুলির আচড়, বেশ ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে টানা ৩২ দিন ধরে সহকর্মী দীপ্ত সিংহকে নিয়ে মহাদেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরী করে চলেছেন ঘোষনগর গ্রামের ভাস্কর সুধাংশু মন্ডল। ভাস্কর তার সু নিপুন হাতে নিখুত ভাবে শিল্পকর্মটি ফুটিয়ে তোলার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনার কপিলমুনির কাশিমনগরের একটি মন্ডপে তথ্য সংগ্রহে গেলে এমন চিত্র দেখা যায়।
সমস্ত দূর্গতী নাশ করেন যিনি তিনিই দুর্গতীনাশিনী, তিনিই হচ্ছেন দেবী দুর্গা। আর সেই দেবী দুর্গা প্রতি বছর একবার শরতের শুরুতেই ব্যাপক আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে ধরণীতে আসেন। সনাতনধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পূজাকে সামনে রেখে কপিলমুনি ও হরিঢালীর বিভিন্ন পূজা মন্ডপে অত্যন্ত ব্যাস্ততার সাথে চলছে প্রতিমা তৈরীর কাজ। প্রতিমা ভাস্করদের নিপুন হাতের ছোঁয়ায় প্রতিটি বিগ্রহ দেবতার রুপ পাচ্ছে। মন্ডপগুলো যেন ভাস্করদের সাধনাস্থলে রুপ নিয়েছে।
জানা গেছে, প্রতিটি মন্ডপেই প্রতিমা শিল্পীরা দুর্গা প্রতিমা তৈরী ও মন্দির সাজানো কাজ করে চলেছেন। এলাকার উল্লেখযোগ্য মন্ডপগুলোর মধ্যে রয়েছে কপিলমুনির মিলন মন্দির (কালীবাড়ী) পূজা মন্ডপ, নাছিরপুর মিতালী যুব সংঘ (সিংহবাড়ী) পূজা মন্ডপ, কপিলমুনি পূর্বপাড়া পূজা মন্ডপ, কাশিমনগর সার্বজনীন পূজা মন্ডপ, কাশিমনগর সাধুপাড়া পূজা মন্ডপ, কাশিমনগর দাসপাড়া পূজা মন্ডপ, নাবা পূজা মন্ডপ, গোয়ালবাথান পূজা মন্ডপ, চিনেমলা পূজা মন্ডপ, হাউলী সার্বজনীন পূজা মন্ডপ, নাবা হরিতলা পূজা মন্ডপ, আগরা পূজা মন্ডপ, কাশিমনগর হরিসভা পূজা মন্ডপ, নাছিরপুর বাবুলাল হালদার পূজা মন্ডপ, মামুদকাটী পূজা মন্ডপ, হরিদাশকাটী পূজা মন্ডপ, নোয়াকাটী পূজা মন্ডপ, হরিঢালী পোদ্দারপাড়া পূজা মন্ডপ, রামনাথপুর পূজা মন্ডপ। উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদ জানিয়েছে, এবছর কপিলমুনিতে ১৯ ও পার্শ্ববর্তী হরিঢালী ইউনিয়নে ১৮টি পূজা মন্ডপে সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব। আগামী ১ অক্টোবর শনিবার ষষ্ঠী পূজা’র মধ্যদিয়ে দূর্গতীনাশিনী দেবী দুর্গা পূজার সুচনা ঘটবে।
কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক জি এম ইমদাদুল হক বলেন, ‘বর্তমানে আমরা পুলিশের টহল অব্যাহত রেখেছি। প্রতি দিন গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশ মন্ডপে গিয়ে দেখাশুনা করছে, পূজা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সরকার ঘোষিত নিরাপত্তা জোরদার রাখবো ’।
কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ কওছার আলী জোয়ার্দার বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এলাকা কপিলমুনি, এখানে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে আমি আশা রাখি। প্রতি মন্ডপে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে চৌকিদার ও আনছার সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন’। দুর্গোৎসব সফল করতে আমি ইউনিয়নবাসীর সহযোগীতা চাই।
উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আনন্দ মোহন বিশ্বাস বলেন, ‘পূজা উৎসব সকলের জন্য। প্রশাসনসহ সর্বস্তরের নের্তৃবৃন্দের সহযোগিতায় বিগত বছরের ন্যায় এবারের পূজাও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে বলে আমি আশাবাদী। স্ব-স্ব পূজা মন্ডপে মন্ডপ কমিটির নেতৃবৃন্দকে কড়া নজরদারী রাখতে বলা হয়েছে’।