ঊষার আলো প্রতিবেদক : শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমীতে দুই বছর পর আবারো ফিরে এসেছে চিরচেনা আনন্দ উৎসব। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও নানান আনন্দ আয়োজনের মাধ্যমে দুর্গতিনাশিনী মা দুর্গাকে বিদায় জানিয়েছেন ভক্তকূল। আর মর্ত্যে ‘বাবার বাড়ি’ বেড়ানো শেষে নৌকায় চড়ে ‘কৈলাসে দেবালয়ে’ ফিরেছেন ‘আনন্দময়ী’ দেবী দুর্গা। মায়ের কাছে অশুর শক্তির বিনাশের প্রার্থনা করেছেন ভক্তরা।
বুধবার (০৫ অক্টোবর) বিজয়া দশমীতে সকাল ৮টা ৫০মিনিটে ‘বিহিত পূজা’ ও পরে ‘দর্পণ বিসর্জনের’ মধ্য দিয়ে দুর্গা পূজার শাস্ত্রীয় সমাপ্তি ঘটেছে। দশমী পূজায় প্রতিমার হাতে জরা, পান, শাপলা ডালা দিয়ে আরাধনা করা হয়। পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন ভক্তরা। বিকালে খুলনার ভৈরব নদে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে খুলনায় দেবীকে বিদায় জানানোর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ঢাকের বাদ্য আর গান-বাজনা ছাড়া বিদায়ের করুণ ছায়ায় সারিবদ্ধভাবে একে একে ভৈরব নদে বিসর্জন দেওয়া হয় প্রতিমা। একই সময়ে খুলনার উপজেলাগুলোতেও প্রতিমা বিসর্জন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সড়কে পুলিশের টহল ও নদীতে ছিল নৌপুলিশের টহল। ফায়ার সার্ভিসের টিমও দায়িত্ব পালন করে।
এর আগে সকালে প্রতিমা বিসর্জনের উদ্দেশ্যে নগরীর বিভিন্ন মন্দির মেলাঙ্গন থেকে বিজয়া শোভাযাত্রা বের হয়। করোকালের দুই বছর শেষে বর্ণাঢ্য আয়োজনে দুর্গোৎসব আয়োজনে খুশি ভক্তবৃন্দ।
হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, দশভূজা দেবী দুর্গা অসুর বধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতি শরতে কৈলাস ছেড়ে ‘কাত্যায়নী মুনির কন্যারূপে’ মর্ত্যলোকে আসেন। সন্তানদের নিয়ে পক্ষকাল পিতার গৃহে কাটিয়ে আবার ফিরে যান দেবালয়ে। আশ্বিন শুক্লপক্ষের এই ১৫টি দিন দেবীপক্ষ, মর্ত্যলোকে উৎসব। মহালয়ার দিনে দোলায় চড়ে দেবী মর্ত্যে আসেন। এরপর নবরাত্রির ষষ্ঠ দিন শনিবার মহাষষ্টী পূজার মধ্য দিয়ে দূর্গোৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সেই উৎসবের সমাপ্তি হল।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, সারাদেশে এবছর ৩২ হাজার ১৬৮টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। এসব মন্ডপে শারদীয় উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজা উদযাপন কমিটিও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। প্রতিটি মন্ডপে মন্ডপে লাগানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। এছাড়া মন্ডপ পাহারার জন্য স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি করা হয়।