প্রেস বিজ্ঞপ্তি : অবৈধ নিশিরাতের ভোটের সরকারের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনে গুণগত পরিবর্তন এসেছে দাবি করে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও খুলনা মহানগর আহবায়ক শফিকুল আলম মনা বলেছেন, আন্দোলনে গণমানুষের সম্পৃক্ততা বেড়েই চলেছে। অপশাসন হঠানোর আন্দোলনে সাধারণ মানুষ যখন সম্পৃক্ত হয়, তখন সেই শাসকের পতন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। ফ্যাসিবাদ পতনের চূড়ান্ত লগ্নে উপনীত উল্লেখ করে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদেরকে শেষ পর্যন্ত রাজপথে অবস্থান নেয়ার আহবান জানান।
ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, খুলনা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি এম নুরুল ইসলাম দাদু ভাইয়ের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় কে ডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে মহানগর ও জেলা বিএনপির যৌথ উদ্যোগে কর্মসূচি পালিত হয়।
শফিকুল আলম মনা বলেন, বিভাগীয় গণসমাবেশগুলো বানচালে সরকার নানা অপতৎপরতা চালিয়েছে। যানবাহন বন্ধ থাকায় অনেক রিক্সাচালক, নৌকার মাঝি বিনা পয়সায় নেতাকর্মীদেরকে সমাবেশস্থলে পৌঁছে দিয়েছেন। আগে পুলিশ কিংবা শাসক দলীয় ক্যাডারদের হামলা মুখে অনেকেই ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়তো। এখন প্রতিটি হামলার পাল্টা জবাব দিচ্ছে। সাধারণ মানুষও বিএনপির কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়ে ফ্যাসিবাদের তল্পীবাহকদের মোকাবেলা করছে। এসব ঘটনায় প্রমাণ হয়, সরকারের আয়ু ফুরিয়ে এসেছে।
তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে খুলনার গণসমাবেশে অংশ নিতে এসে হামলার শিকার হওয়া প্রতিটি নেতাকর্মীকে স্বশরীরে দেখতে গিয়ে আর্থিক সহায়তা করা হচ্ছে। খ্দো সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী খুলনায় এসেছেন এবং হাসপাতালে গিয়েছেন। রকিবুল ইসলাম বকুলের পক্ষ থেকে আহতদের ঘরে ঘরে আর্থিক সহায়তা পৌছানো হচ্ছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে যারাই ক্ষতিগ্রস্থ হবেন বিএনপি তাদের পাশে দাঁড়াবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
দৌলতপুর থানার মামলায় আইন আদালতের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মামলার আইও আসামী গ্রেফতার হওয়ার আগেই শ্যোন এ্যারেস্ট দেখানোর আবেদন করলে আদালত তা গ্রহণ করেছে। প্রতিটি অনিয়মের বিচার এই বাংলার মাটিতেই হবে বলে তিনি হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা এম নুরুল ইসলাম দাদু ভাইকে তেজস্বী, সৎ, সাহসী, কর্মীবৎসল, মুক্তমনা, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন একজন রাজনৈতিক অভিভাবক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তারা সারাটা জীবন ছিল বর্ণাঢ্য অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ। বাংলাদেশের অভূদ্যয়ের পূর্ব হতে স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রায় অর্ধশতক পর্যন্ত তিনি খুলনার রাজনীতিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন। ঊনসত্তরের গণঅভ্যূত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং নব্বইয়ের সামরিক স্বৈরশাসক বিরোধী আন্দোলনের বিজয়ের ইতিহাসে দাদু ভাইয়ের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। অনেকের জীবনে দলবদলের নানা কাহিনী থাকলেও দাদু ভাই বিএনপির জন্মলগ্ন থেকে তাঁর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত জাতীয়তাবাদী আদর্শের সাথে নীবিড় ভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। একাধিকবার কারাবরণ করেছেন, হয়রানিমূলক মামলায় আসামী হয়েছেন, নানা ঘাত প্রতিঘাত এসেছে, কিন্ত তিনি কখনো আদর্শচ্যুত হননি। নতুন প্রজন্মকে তার জীবন থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
আলোচনায় অংশ নেন সাবেক এমপি শেখ মুজিবর রহমান, জেলা বিএনপির আহবায়ক আমীর এজাজ খান, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবু হোসেন বাবু, খান জুলফিকার আলী জুলু, স ম আব্দুর রহমান, শামীম কবির, আতাউর রহমান রুনু, ইসতিয়াক আহমেদ ইস্তি ও আক্তারুজ্জামান তালুকদার সজীব। আশরাফুল আলম খান নান্নুর সঞ্চালনায় দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ আবু নাইম।
(ঊষার আলো-এফএসপি)