ঊষার আলো ডেস্ক : করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত জটিল রোগীদের প্রাণ বাঁচাতে সময়মতো অক্সিজেন সরবরাহ কতটা জরুরি সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্তদের বিশেষত অস্ত্রোপচারের রোগীদেরও অক্সিজেন সাপোর্টের প্রয়োজন পড়ে।
বস্তুত অক্সিজেন হাসপাতালের একটি অপরিহার্য উপাদানে সামিল। কাজে এর নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি।
তবে কিছু হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে কিন্তু তা চালু হয়নি। বাংলাদেশে অক্সিজেনের উৎপাদন ক্ষমতা অনেক কম। ফলে হঠাৎ করোনার রোগী বাড়লে অক্সিজেনের প্রাপ্যতা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল হয়ে পড়বে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে দেশে অক্সিজেন মজুত থাকলেও সেটি করোনার সংক্রমণ বাড়ার সাথে সাথে ঘাটতি দেখা দেওয়ার ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে।
পূর্বে ভারত থেকে অক্সিজেন আমদানি করা হতো, কিন্তু বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে। করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের ফলে সেদেশে এখন প্রতিদিন লাখ লাখ মানুষ কোভিড আক্রান্ত হচ্ছেন ও মারা যাচ্ছে হাজারো মানুষ। কাজে আমাদের দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়লে তা সামাল দেওয়া কতটা কঠিন হবে সেটি খুব সহজেই অনুমেয়।
সাথে আমরা লক্ষ করেছি যে, লকডাউনজনিত বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে মানুষ ঈদের আগে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেছে। আর তাদের বেশিরভাগই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে যাতায়েত করে। এখন আবার স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে মানুষ রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে ফিরে এলে একই দৃশ্যের অবতারণা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কাজে এ অবস্থায় যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা না হলে দেশে করোনা পরিস্থিতি যে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে, সেটি বলাই বাহুল্য। বাংলাদেশেও যদি ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ে তবে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে, তা মোকাবিলার সক্ষমতা আমাদের নেই। কোভিড রোগীর সংখ্যা ভারতের মতো অস্বাভাবিক হারে বাড়লে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেবেই।
এছাড়া গ্রামাঞ্চলে যদি করোনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, তবে সামগ্রিক চিকিৎসাব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। ফলে এমন ধরনের সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলায় সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি সরকারি পর্যায়ে মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা খুবই প্রয়োজন। কারণ গ্রামে কোভিড সংক্রমণ বাড়লে বিশেষত ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়লে অক্সিজেনের প্রাপ্যতায় যে ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি হবে তা বোঝায় যাচ্ছে।
দেশে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলে তখন অক্সিজেনের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ না থাকলে চিকিৎসাব্যবস্থা ভেঙে পড়বেই। ফলে যে উপায়েই হোক না কেন অক্সিজেনের সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলার জন্য কর্তৃপক্ষকে তৎপর হতে হবে।
(ঊষার আলো-এফএসপি)