UsharAlo logo
বুধবার, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খুবির অধ্যাপক নিয়োগ অনিয়মের তদন্ত আজ

usharalodesk
ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩ ১২:২২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট : খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের একজন অধ্যাপকের বিধিবহির্ভূত নিয়োগের তদন্তে আসছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।

আজ বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এই কমিটি সরেজমিন তদন্তে খুবিতে আসবেন বলে নিশ্চিত করেছেন রেজিষ্ট্রার রেজিস্ট্রার প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস।

তিনি বলেন, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এর প্রাক্তন অধ্যাপক ড. বাসুদেব চন্দ্র ঘোষের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটির অন্য দু’জন সদস্য হলেন ইউজিসিরি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ ফজলুর রহমান ও ইন্সপেকশন ও মনিটরিং শাখার সিনিয়র সহকারী পরিচালক মোঃ গোলাম দস্তগীর।

সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে কমিটি এ দিন দুপুর ১২টায় প্রয়োজনীয় নথিপত্র পর্যালোচনা করবেন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করবেন।

২০২২ সালের ৫ জুন এই তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তদন্ত শেষে অভিযোগের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রদান করবে এই কমিটি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক ড. মোঃ ওয়ালিউল হাসানাতকে অধ্যাপক পদে বিধিবহির্ভূত বা বেআইনি নিয়োগের বিষয়ে প্রাপ্ত অভিযোগের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি ইউজিসির চেয়ারম্যান বরাবর একটি পত্র প্রেরণ করে। ঐ পত্রে প্রাপ্ত অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়। সে প্রেক্ষিতেই ইউজিসি এই তদন্ত কমিটি গঠন করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায়, ড. মোঃ ওয়ালিউল হাসানাত ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি খুবিতে অধ্যাপক পদে নিয়োগ পান। কিন্তু এই পদের জন্য যে যোগ্যতার প্রয়োজন ছিলো তা তার ছিলো না। অধ্যাপক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যান্য সব যোগ্যতা ও শর্তের সঙ্গে সহযোগী অধ্যাপক পদে কমপক্ষে চার বছরের বাস্তব শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকা বাধ্যতামূলক ছিলো। কিন্তু ড. ওয়ালিউল হাসানাতকে সরাসরি অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেওয়ার সময় তা মানা হয়নি।

তাঁর নিজ হাতে লেখা অধ্যাপক পদের আবেদন পত্রে দেখা যায়, সহযোগী অধ্যাপক পদে তাঁর বাস্তব অভিজ্ঞতা ৩ বছর ৬ মাস ৭ দিন। কিন্তু তার লিয়েন কার্যকাল ১০ মাস ১৪ দিনকে অভিজ্ঞতা হিসাব দেখিয়ে সহযোগী অধ্যাপক পদে অভিজ্ঞতা ৪ বছর ৪ মাস ২১ দিন দেখিয়ে অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এটি সম্পূর্ণ বেআইনি বলে দুদকের ঐ অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

এ ব্যাপারে ইউজিসি থেকে ৭ দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে একটি প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পত্র দেওয়া হয়েছিলো। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেই প্রতিবেদন ইউজিসিতে পাঠায়। বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার দপ্তরের একটি সূত্র থেকে জানা যায়, ইউজিসিতে পাঠানো প্রতিবেদনে ড. মোঃ ওয়ালিউল হাসানাতের নিয়োগকালীন বাস্তব শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা কম থাকার বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়া হয়।

অপর একটি সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগে হাফিজ আহমেদ নামে এক প্রার্থীকে প্রভাষক পদে প্রায় একই সময় নিয়োগ দেওয়া হয়। এই নিয়োগের ক্ষেত্রেও বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি সাবেক উপাচার্য মেয়াদ শেষ হওয়ার বেশ কিছুদিন পর ফাঁস হয়। উক্ত হাফিজ আহমেদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেন। মেধা তালিকায় তিনি ছিলেন ৩০ জনেরও পরে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে নিয়োগের স্ক্রুটিনিংয়ে তাঁর অবস্থান ছিলো ৬৩তম। আবেদনকারীদের মধ্যে ১১জন ছিলেন পিএইডি ডিগ্রিধারী। যার মধ্যে কয়েকজন বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ডিগ্রিধারীও ছিলেন। কিন্তু ঐ প্রভাষক নিয়োগ বোর্ডে এসব মেধাবী শিক্ষার্থীকে বিবেচনায় না নিয়ে কোন বিশেষ কারণে মেধায় এতো পিছিয়ে থাকা একজন আবেদনকারীকে প্রভাষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয় সে বিষয়টিও তদন্ত করে খতিয়ে দেখার দাবি ওঠে। কারণ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে এতো পিছনের সারির কোন আবেদনকারীকে আজ পর্যন্ত শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।