বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা ভারতের কাছে অনুরোধ করেছি, একজন খুনি, গণহত্যাকারীকে জায়গা দেবেন না। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত কিছু বলেনি। আমি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানাব, অবিলম্বে গণহত্যাকারী, রাষ্ট্রবিরোধী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করুন। তাকে ফেরত পাঠানোর জন্য ভারতকে চিঠি দিন। আইনগত যে ব্যবস্থা আছে তা করুন।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গাজীপুরের কোনাবাড়ি ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গার্মেন্টস ও ঔষধ শিল্পসহ প্রতিষ্ঠানে দুষ্কৃতকারীদের বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা এবং শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন নিয়মিত পরিশোধের দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে গাজীপুর জেলা ও মহানগর শ্রমিক দল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়েছে এটা ঠিক কিন্তু তার প্রেতাত্মারা এখনও এদেশে আছে। তারা চুরি-চামারি করে সম্পদের যে সাম্রাজ্য গড়েছিল তা দেশের বাইরে পাচার করেছে। এজন্য তারা হাসিনাকে ভুলতে পারে না। তারাই দেশে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে। বড় ষড়যন্ত্র হয়েছে এই শিল্প এলাকাতে। এখানে পোশাক শিল্পে ৫০ লাখের বেশি মানুষ কাজ করে। এই শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলে কি দেশের অর্থনীতি ঠিক থাকে! বাইরের শক্তির সহায়তায় তারা (আ.লীগ) শিল্প এলাকায় অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে।
মানুষ ভোট দিয়ে তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে চায়, এজন্য দ্রুত সংস্কার সম্পন্ন করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান ফখরুল। এসময় শিল্প কারখানায় যাতে কোনো প্রকার অসন্তোষ তৈরি না হয় সেজন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের পাহারা দেওয়ার পাশাপাশি সরকার মালিক শ্রমিকদের সাথে বসে সংকট নিরসনের দাবি জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ক্ষমতায় থাকার জন্য শেখ হাসিনা দেশের সব রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছিল। বিশেষ করে পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করেছে। তাদের দিয়ে গুলি করে, মিথ্যা মামলা দিয়ে, জেলে নিয়ে নির্যাতন করে, অকথ্য অত্যাচার করে দেশকে ভীতির রাজ্যে পরিণত করেছিল। ছাত্র, শ্রমিক জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা যখন পালিয়ে গেছে তখন এদেশের মানুষ হাফ ছেড়ে বাঁচছে।
শ্রমিক দলের কার্যকরী সভাপতি আলহাজ্ব সালাউদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য অধ্যাপক ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শ্রমিক দল সভাপতি মো. আনোয়ার হোসেন, জেলা বিএনপি সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক মিলন, গাজীপুর মহানগর বিএনপি সভাপতি শওকত হোসেন সরকার, জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ রিয়াজুল হান্নান, মহানগর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক এম মঞ্জুরুল করিম রনি।
সমাবেশ উপলক্ষে দুপুর থেকেই বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন ও প্লে কার্ড সহযোগে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হন। দুপুরের আগেই কলেজ মাঠে লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।