ঊষার আলো প্রতিবেদক : ‘এবার ঈদটা তো পাইকারী বিক্রেতাদের; না খুচরা বিক্রেতা, না ক্রেতাদের। ২০-৪০ পার্সেন্ট বেশী দামে জামাকাপড় কিনেছি। ভেবেছি, গেল দুবছর অনেকেই বাচ্চাদের জামাকাপড় দিতে পারেননি। এবার তারা মার্কেটে আসবেন। শিশুদের জন্য কিনবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত উল্টো চিত্র। মানুষ মার্কেটে আসলেও তাদের বাজেট বাড়েনি। তাই অনেকটা কম লাভে বেচাকেনা চলছে। জানিনা পূঁজি ফিরবে কিনা। তবু ব্যবসাতো করতে হবে।’ ঈদে বিকিকিনি এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন খুলনার ডাকবাংলা সুপার মার্কেটের ‘সুনাম’র স্বত্তাধিকারী জিএম কামরুজ্জামান টুকু।
শুধু ব্যবসায়ী টুটু নন, খুলনার গরীবের মার্কেটখ্যাত রেলওয়ে সুপার মার্কেট, ডাকবাংলো, খানজাহান আলী হকার্স মার্কেট, পিকচার প্যালেস মোডের ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের চিত্র অভিন্ন। তবে ধীরে ধীরে জমে উঠতে শুরু করেছে মধ্যবিত্ত ও অভিজাত বিপনীবিতানগুলো। এসব শপিংমল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা বলেছেন, দুয়েক একদিনের মধ্যে ঈদের কেনাকাটা আরও জমবে। অবশ্য সব পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে অনেকটাই অসন্তুষ্ট ক্রেতারা।
বসুপাড়ার বাসিন্দা রুনা সামাদ বলেন, ‘এবার দাম চড়া। পছন্দ হয়ে যাওয়ায় একটি শাড়ি কিনে ফেললাম। সামনে ভিড় হতে পারে; তাই আগেই বাজার করে ফেলতে চাই।’
এখানকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিউ লেটেস্ট কর্ণারের শেখ রাজীব বলেন, ‘বেচা বিক্রি ভাল। থ্রি-পিস একহাজার দুইশ’ থেকে ৭০০০হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় থ্রিপিসের চাহিদা ভাল।
বিসমিল্লাহ ফেব্রিক্সের মো. আকতার বলেন, এবার গারাল, লেহেঙ্গা, সারাবা, দিল্লি বুটিকসের চাহিদা রয়েছে। এক হাজার আটশত থেকে ২৩ হাজার টাকায় পোষাক বিক্রি হচ্ছে।’ একই তথ্য জানালেন ফ্যাশন হাউজ তেজারার সত্ত্বাধিকারী মেহেদী হাসান সানভি।
ছেলেদের পোশাক বিক্রেতা নিউম্যান ফ্যাশনের মো. সুমন বলেন, এখনও বিক্রি খুব বেশী নয়, তবে সামনে বিক্রি বাড়বে। কিন্তু এবার সব পণ্যের দাম বৃদ্ধিতে ক্রেতাদের কাছে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এবার প্যান্ট এক হাজার থেকে আড়াই হাজার, গেঞ্জি দুশ’টাকা থেকে এক হাজার টাকা ও পাঞ্জাবী সাতশ’ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রেলওয়ে সুপার মার্কেটে স্বপরিবারে কেনাকাটায় ব্যস্ত মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের তো আয় বাড়েনি। কিন্তু সব জিনিসের দাম দেড়গুন বেশী। সাধের সাথে সাধ্য মিলছে না। বাচ্চাদের পোশাক কিনেছি। অন্যগুলো চেষ্টা করছি।
এই মার্কেটের জাহারা এন্টারপ্রাইজের মো. নওশাদ খান জানান, অন্য মার্কেটের তুলনায় আমাদের এখানে দাম কম। অনেকে ক্রেতা আসছেন, দেখছেন। সে অনুযায়ী বিক্রি নেই। এবার পূঁজি ফেরানো কষ্টকর। এই ব্যবসায়ী আড়াইশ’ থেকে দেড় হাজার টাকায় পাঞ্জাবী, তিনশ’ টাকার মধ্যে ফতুয়া, চারশ’ টাকায় পায়জামা বিক্রি করছেন।
নগরীর আলো সুপার মার্কেটের ফ্যাশন হাউজের মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ব্যাপারী বলেন, ‘বিগত দু’বছর খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। এবারও খুব ভাল না। প্রতিটি পোষাকের দাম বেড়েছে। তাই ক্রেতা পেলে বিক্রি করতে নানা কথা বলতে হচ্ছে। আশাকরছি ঈদের ২/১দিন আগে এ অবস্থা ভাল হবে।