UsharAlo logo
রবিবার, ১৭ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

নলপাড়া মুন্ডা বিদ্যাপিঠ আদিবাসীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে

koushikkln
ডিসেম্বর ২৭, ২০২২ ৯:৪৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো প্রতিবেদক : খুলনার জেলার কয়রায় উপজেলার নলপাড়া মুন্ডা বিদ্যাপিঠ আদিবাসীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে। শিক্ষার বাতি ঘর হিসেবে এ বিদ্যালয়টি বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এটি গড়ে তুললেও এলাকাবাসী এখন বেশ খুশি। তারা চায়, যেভাবেই হোক এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বেঁচে থাকুক এবং লেখা পড়া অব্যাহত রাখুক।

ওই বিদ্যাপিঠের শিক্ষিকা শায়ন্তি মুন্ডা তিনি নিজেও মুন্ডা সম্প্রদায়ের সদস্য। তিনি বলেন, কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়নের নলপাড়া গ্রাম। এখানে রয়েছে আদিবাসী সম্প্রদায় মুন্ডাদের বসবাস। ২৬টি পরিবার এখানে বসবাস করেন। তারা সবাই দিন মজুর। নানা সংকটের কারণে এ জনগোষ্ঠী সদস্যরা সমাজে বোঝা হয়ে যাচ্ছে। খাদ্য, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষাসহ নানা অধিকার থেকে তারা হচ্ছে বঞ্চিত। বঞ্চিত এ জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আইআরভি আদিবাসীদের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে নলপাড়া গ্রামে গড়ে তোলা হয় আদিবাসী সন্তানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “নলপাড়া মুন্ডা বিদ্যাপিঠ”। ২২ জন শিশু নিয়ে এখানে শুরু পাঠদান প্রক্রিয়া। শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয় ওই সম্প্রদায়ের সদস্যকে। সকালে ও বিকেলে এই দু’ বেলা আদিবাসী শিশুদের লেখা-পড়া করানো হয়। এখানে শিশু শ্রেনী থেকে পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া শিখানো হয়। সংস্থার পক্ষ থেকে বর্তমানে লেখাপড়ার উপকরণ দেয়া হচ্ছে। বাকী টাকা প্রতি শিশুর কাছ থেকে মাসে একশত টাকা করে নেয়া হচ্ছে। এতে তার বেতন ১৭ থেকে ১৮শত টাকা হয়। তারপর তিনি পিছিয়ে পড়া এ জনগোষ্ঠীকে শিক্ষিত করতে দিন রাত কাজ করে চলেছেন।

ইনিশিয়েটিভ ফর রাইট ভিউ (আইআরভি)’র পরিচালক মেরিনা যুথি বলেন, সরকার স্থায়ীত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার যে টার্গেট নিয়েছে তা সফল বাস্তবায়নের সহযোগিতার জন্য আমরা মনে করি শিক্ষাকে অনাগ্রসর জনগোষ্ঠীর মধ্যে পৌছে দেয়া প্রয়োজন। সেই লক্ষে আমরা এই স্কুল প্রতিষ্ঠাপূর্বক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করি। যা এখন চলমান।

কয়রা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ড মেম্বর সোহরাব হোসেন বলেন, আদিবাসী শিশুদের লেখা পড়া করানোর উদ্দেশ্যে একটি এনজিও এই স্কুলটি করে। স্কুলটির কারণে আদিবাসী সম্প্রদায়ের শিশুদের লেখাপড়া শেখার পথ সুগম হলো। স্কুল পরিচালনার জন্য সংস্থা থেকে খরচ দেয়া হলেও তিনি নিজ উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের জামা দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ তা অনুমোদন দিলে তিনি শিক্ষার্থীদের এ জামার ব্যবস্থা করে দিবেন বলে জানান।

কয়রা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম বাহারুল ইসলাম বলেন, তার ইউনিয়নের ২নং কয়রা ও ৫নং কয়রা এই দু’টি গ্রামে মুন্ডা সম্প্রদায়ের সদস্যরা বসবাস করেন। দু’ পাড়ায় প্রায় দেড়শত পরিবার বসাবাস করে। তবে আদিবাসী সন্তানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “নলপাড়া মুন্ডা বিদ্যাপিঠ” মুন্ডা সম্প্রদায়ের সদস্যদের স্কুলগামী করার একটি পথ হয়েছে। এখানে হাতে খড়ি দেয়ার পরই শিশুরা সদরে গিয়ে লেখাপড়া করার আগ্রহ বাড়ে। স্কুলটি যাতে চালু ও লেখাপড়া অব্যাহত রাখার জন্য তিনি নিজস্ব উদ্যোগে সহযোগিতা করেন বলে জানান।