UsharAlo logo
সোমবার, ১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিষেধাজ্ঞায়ও বন্ধ হচ্ছে না সুন্দরবনে সম্পদ আহরণ

koushikkln
জুন ৩০, ২০২২ ১১:২৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মো. রায়হান মোল্লা : নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও বিশ^ ঐতিহ্য সুন্দরবন থেকে অবৈধভাবে বনজসম্পদ আহরণ বন্ধ হচ্ছে না। বন বিভাগ বিভিন্ন সময়ে এসব কাজে জড়িতদের গ্রেফতার ও মামলা দায়ের করে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বনবিভাগ বলেছে, বনের বিষয়ে সচেতনতা না বাড়লে পুরোপুরি অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। গেল একমাসে (জুন) খুলনা ও সাতক্ষীরা রেঞ্জে এমন অপরাধে অর্ধশতাধিক মামলা হয়েছে।

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সুন্দরবনের বনজসম্পদ আহরণের অপরাধে দুটি রেঞ্জে ৫১ মামলা হয়েছে। এতে আসামী হয়েছেন ৫৯ জন। এদের কাছ থেকে অবৈধভাবে আহরণকৃত বনজসম্পদসহ বিপুল পরিমাণ মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।


তথ্য অনুযায়ী, খুলনা রেঞ্জে ১৩টি পিওআর মামলা, ২৩টি ইউডিওআর মামলা ও ৩টি সিআর মামলাসহ ৩৯টি মামলার বিপরীতে ৪৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। ওইসময় তাদের কাছ থেকে ১টি ট্রলার, ৩৩টি নৌকা, একটি চিংড়ি/কাঠি জাল, ১৭টি ভেসালী জাল, ২টি খেওলা জাল, ২টি খাল পাটা জাল, ২টি রকেট জাল ২টি, ৭০টি গেওয়া কচা, ৪৫ঘনফুট গেওয়া জ্বালানী, ৫৮টি আটন, ৩০৫ মিটার দোন দড়ি, ১৪টি ড্রাম, ১৫টি দা, ১টি সোলার প্লেট, একটি সোলার ব্যাটারি, দুটি গ্রাফি, দুটি জবাইকৃত হরিণ, ১৬২ মিটার হরিণ ধরা ফাঁদ, ৫টি বৈঠা, ২টি ছুরি, ২৪টুকরা সুন্দরী গোলকাঠ (২৬.৬৪ ঘনফুট), ৪৮ ঘনফুট কাকরা জ্বালানি, ৪০টি সুন্দরী কচা, সুন্দরী জ্বালানী ৫০ ঘনফুট, ২২ বস্তা বিষমুক্ত চিংড়ি শুটকি মাছ যার ওজন ৫৫ কেজি, ৬৩৬ কেজি চিংড়ি মাছ, ১৯টি বিষের বোতল, একটি হাতকরাত, ৫টি ককসিট, তিন টুকরা বরফ(ধ্বংস), একটি মোবাইল, ৩৫ কেজি কাকড়া, ৫টি পাশ, একটি মৃত বাদামী পাখ মাছরাঙ্গা, ২০০ গ্রাম সাদা বকের মাংস উদ্ধার করা হয়েছে।

অপরদিকে, সাতক্ষীরা রেঞ্জে ৫টি পিওআর মামলা, ৪টি ইউডিওআর মামলা ও ৩টি সিওয়ার মামলাসহ মোট ১২টি মামলার বিপরীতে ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। ওইসময় তাদের কাছ থেকে ১০টি নৌকা, ৩টি ভেসালী জাল, ২৫০মিটার দোনদড়ি, একটি বেন্দি জাল, ২টি ড্রাম, ৪টি মোবাইল ফোন, ১৫ কেজি কাকড়া, একটি সুন্দরী গোলকাঠ, ৭৫টি গরান, একটি মৃত বন্য শুকর, ২শ মিটার দড়ি বরশি, ১৫শ মিটার কারেন্ট জাল, ৪০মিলিঃ বিষ, ৩টি দা, ১৩টি বৈঠা, ২টি দাড়, একটি ব্যবহৃত বাঁশ, দুই টুকরা নাইলনের রশি (৬ফুট)।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ভোরে (৩০ জুন) কয়রায় বিষ প্রয়োগ করে শিকার করা ৩৭মন চিংড়িসহ ৭জনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় অপদ্রব্য মিশ্রিত চিংড়ি বিনষ্ট ও ৩০ হাজার জরিমানা আদায় করে মৎস্য বিভাগ।

প্রসঙ্গত, প্রত্যেক বছরের জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে সুন্দরবনে পর্যটন ও বন নির্ভর পেশা স্থগিত রয়েছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বনজসম্পদ অবৈধভাবে আহরণ করছে চোরা শিকারিরা।

বন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণ মানুষের সচেতনতা ও বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ছাড়া অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। পাশাপাশি বনবিভাগের লোকবলও বাড়াতে হবে। না হলে নিষেধাজ্ঞায় কোন কাজ হবে না।