ঊষার আলো রিপোর্ট : পেঁয়াজ, আদাসহ বিভিন্ন মসলাজাতীয় পণ্যের অস্বাভাবিক হারে মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি উদ্বেগজনক। দুই মাস আগেও পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা কেজি দরে; এখন তা কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য ভালো মানের পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। জানা যায়, অস্বাভাবিক এ মূল্য নিয়ন্ত্রণে আমদানির অনুমতি চেয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় মন্ত্রী আমদানির আশ্বাস দিলেও এখনো বাজার পর্যবেক্ষণ করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করে অসাধু চক্র এক মাসেই ভোক্তার পকেট থেকে অতিরিক্ত ৮০০ কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নিয়েছে। এদিকে আদা নিয়েও চলছে বড় ধরনের কারসাজি। যে আদার কেজিপ্রতি আমদানি মূল্য ১২৯-১৩০ টাকা; তা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। অবশ্য ভালো মানের আদা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। জিরাসহ অন্যান্য মসলার মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো হয়েছে। কয়েকদিন আগে আদার মূল্য নিয়ন্ত্রণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দিলেও ভোক্তারা এর কোনো সুফল পাচ্ছে না। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, দেশে এ মুহূর্তে পেঁয়াজের সংকট নেই। সুযোগ বুঝে অসাধু চক্র সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়েছে। অসাধুদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। যেহেতু পেঁয়াজের বাজারে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে, সেহেতু ভোক্তাদের স্বার্থে এখনই পেঁয়াজ আমদানির উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
সম্প্রতি শিল্প প্রতিমন্ত্রী এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, আমি অনেককে দেখেছি বাজার করতে গিয়ে কাঁদছেন। গরিব মানুষের প্রতি এমন সহমর্মিতা প্রদর্শনের জন্য আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাই। সিন্ডিকেটের কারণেই যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, এ কথা তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। সিন্ডিকেট ভাঙার আহ্বানও জানিয়েছেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী। এদিকে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রীও। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণেই বাজারে পেঁয়াজের দাম এত বেশি, এ কথা কৃষিমন্ত্রী স্বীকার করেছেন। কৃষিমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী ও শিল্প প্রতিমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জন্য আমরা তাদের সাধুবাদ জানাই। একই সঙ্গে আমরা আশা করব, দেশের ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটগুলো চিহ্নিত করার ক্ষেত্রেও তারা জোরালো ভূমিকা পালন করবেন।
প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়লেও মানুষের আয় বাড়েনি। জীবনযাত্রায় বাড়তি ব্যয়ের কারণে দিশেহারা হয়ে পড়েছে মানুষ; সবচেয়ে বেশি চাপে রয়েছেন সীমিত ও স্বল্প আয়ের মানুষ। বাজার তদারকি সংস্থাগুলোর দুর্বলতার কারণেই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বেপরোয়া মুনাফা করার সুযোগ পায়। অভিযোগ রয়েছে, বাজার পর্যবেক্ষণে জড়িত অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের যোগসাজশের কারণেই অসাধু ব্যবসায়ীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। আমরা মনে করি, সিন্ডিকেট শনাক্তে এখনই জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কেউ যাতে অতিরিক্ত মুনাফা করার সুযোগ না পায়, তা কর্তৃপক্ষকে নিশ্চিত করতে হবে।
ঊষার আলো-এসএ