UsharAlo logo
মঙ্গলবার, ২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনপির বাধাহীন সমাবেশ যেন জনসমুদ্র

usharalodesk
আগস্ট ৮, ২০২৪ ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট : আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে প্রথম সমাবেশ করেছে বিএনপি। দেড় যুগ পর এবার সমাবেশে নেতাকর্মীদের মুখে ছিল না হাজারো নেতাকর্মীর মুক্তির দাবি কিংবা গ্রেফতারের অভিযোগ। সবার চোখেমুখে মুক্ত বাতাসে শ্বাস নেওয়ার স্বাদ। দীর্ঘদিন পর বাধাহীন এই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে লাখো নেতাকর্মী অংশ নেন। সকাল থেকেই জড়ো হতে থাকেন নেতাকর্মীরা। দুপুর গড়াতেই দূর হতে খালি চোখে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত দেখার উপায় নেই। নয়াপল্টন ও এর আশপাশ এলাকা নেতাকর্মীদের পদচারণায় জনসমুদ্রে পরিণত হয়। বিএনপির এ সমাবেশে এবার ভিন্নচিত্র ছিল। অর্ধশতাধিক বাস নিয়ে রাজধানীর আশপাশের জেলা ও মহানগর থেকে এ সমাবেশে যোগ দেন নেতাকর্মীরা। এছাড়া ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। বেলা ১১টা থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তারা জড়ো হন। এ সময় স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। জাতীয় ও দলীয় পতাকা নিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠেন নেতাকর্মীরা। বেলা ১টার আগেই একদিকে আরামবাগ, অন্যদিকে পুরানা পল্টন, শান্তিনগর ও কাকরাইল মসজিদ পর্যন্ত নেতাকর্মীদের পদচারণায় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। এদিন সমাবেশের জন্য প্রয়োজন হয়নি কোনো অনুমতির। ছিল না কোনো পুলিশি বাধা, ভয় কিংবা আতঙ্ক। সতঃস্ফূর্তভাবে যে যেভাবে পেরেছেন সমাবেশে অংশ নিয়েছেন। এতে সাধারণ মানুষেরও অংশগ্রহণ দেখা গেছে।

কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে মঙ্গলবার রাতেই অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়। এক কিলোমিটারজুড়ে টানানো হয় মাইক। পুরো এলাকায় দেখা যায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন। তবে সমাবেশস্থলের চারপাশের সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা, প্রধান বিচারপতির বাসভবন ও পল্টন থানা সুরক্ষা দিতে দেখা গেছে দলটির নেতাদের। এ বিষয়ে সমাবেশের মঞ্চ থেকেও নেতাকর্মীদের বারবার মাইকে সতর্ক করা হয়। দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হয়। প্রধান অতিথি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালে বক্তব্য দেওয়ার সময় নেতাকর্মীদের তুমুল করতালি ও স্লোগানে মুখর ছিল নয়াপল্টন এলাকা। সবশেষে দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার বক্তব্য শুনে সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও বক্তব্য প্রচার করা হয়। বিকাল পৌনে ৫টায় শেষ হয় সমাবেশ। পরে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের নয়াপল্টন, কাকরাইল, ফকিরাপুল এলাকার সড়কে পড়ে থাকা ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে দেখা যায়।

সমাবেশে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের মুখে এবার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি ছিল। গাজীপুর মহানগর থেকে সমাবেশে অংশ নেওয়া বিএনপির কর্মী আসিফুর রহমান বলেন, ‘অনেকদিন পর কোনো বাধা ছাড়াই সমাবেশে অংশ নিয়েছি। দীর্ঘদিন দেশে একটা ফ্যাসিস্ট, স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা ছিল। তারা জগদ্দল পাথরের মতো জাতির বুকে চেপে বসেছিল। জাতি তাদের কাছ থেকে মুক্তি পেয়েছে। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে দ্রুত একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা করছি।’ বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন বলেন, ‘আমরা ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করি না, গণতন্ত্রের জন্য রাজনীতি করি, সুশাসনের জন্য রাজনীতি করি। এত অত্যাচার-নির্যাতন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার, যার প্রতিদান পেয়েছে জনগণের ঘৃণা। এখন স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে এসেছে, দেশের জনগণ আনন্দিত।’

ঊষার আলো-এসএ