বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজের স্বার্থে দেশ ও জনগণের স্বার্থ উপেক্ষা করে স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদের দুর্নীতি ও লুটপাটের সুযোগ দিয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করেছেন এবং ভারত ও আদানি গ্রুপের কাছে দেশের ভবিষ্যৎ বিক্রি করেছেন।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর বনানীতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় অনুষ্ঠিত একটি ‘বিনামূল্যে চক্ষু সেবা ক্যাম্প’ উদ্বোধনকালে রিজভী এসব মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘‘শেখ হাসিনা নিজেই একটি রক্তপিপাসু নরঘাতক, যারা শিশুর রক্ত পান করেছে এবং দেশের স্বাধীনতার জন্য কোনো কাজ করেনি।”
রিজভী আরও বলেন, ‘‘২০০৯ থেকে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত শেখ হাসিনা যে চুক্তিগুলি করেছেন, সেগুলো প্রকাশ করতে হবে। জনগণ জানতে চায় কীভাবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের সম্পদ বিক্রি হয়েছে।
বিশেষ করে আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশকে ক্ষতির সম্মুখীন করা হয়েছে।’’ তিনি অভিযোগ করেন যে, শেখ হাসিনা আদানির সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন এমন একটি উদ্দেশ্যে যাতে তিনি সংকটে পড়লে আদানি তাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করবে।
এছাড়া রিজভী বলেন, ‘‘শেখ হাসিনার একমাত্র প্রেম ছিল ভারত, আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই বলেছিলেন বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মতো। জনগণ এটি জানত এবং বুঝত।’’
তিনি শেখ হাসিনাকে দেশে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা বিনষ্টকারী বলে অভিহিত করেন এবং তার কার্যকলাপে জনগণের ক্ষতির অভিযোগ করেন।
রিজভী বিএনপি’র পক্ষ থেকে সরকারকে সমালোচনা করে আরও বলেন, ‘‘আজও আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট চালিয়ে যাচ্ছে বাজারে, কিন্তু কেউই গ্রেফতার হয়নি। শুল্ক কমানোর পরও বাজারের দাম কমেনি, কারণ সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সব কিছু।’’
তিনি সতর্ক করেন যে, সরকারের যদি এসব বিষয় না দেখা হয়, তাহলে ফ্যাসিস্টরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে।
এদিকে, ‘বিনামূল্যে চক্ষু সেবা ক্যাম্প’-এ চক্ষু বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় গত জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে আহত এবং চোখের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সেবা প্রদান করা হয়। ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রিজভী দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন,
‘‘শেখ হাসিনার শাসন দেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, তাকে বিচারিকভাবে দায়বদ্ধ করতে হবে।’’
এদিন, বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব দাবি করেন, শেখ হাসিনার কর্মকাণ্ড দেশের জনগণের জন্য এক ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে এনেছে এবং তার শাসনকাল দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।