মোঃ আব্দুল আজিজ, পাইকগাছা, খুলনা : খুলনার পাইকগাছায় দ্বিতীয় বছরের মতো পরীক্ষামূলক চাষ হচ্ছে ভেনামী চিংড়ী। মাঠ পর্যায়ে ভেনামী চাষের অনুমোদন দিতে এখনো চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌছায়নি সরকার কিংবা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রাণালয়।
শুক্রবার (০৫ আগস্ট) দুপুরে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট লোনাপানি কেন্দ্র পাইকগাছাতে পরীক্ষামূলক ভেনামী চাষের উৎপাদন দেখতে আসেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী।
এ বছরও ভেনামীর ভালো উৎপাদন হয়েছে বলে দাবী করেছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমইউসি ফুড লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্যামল দাশ। যদিও ভেনামী চাষ ব্যবস্থাপনা ও আহরণ কার্যক্রম পরিদর্শনকালে অনুমোদনের বিষয়টি চলমান একটি প্রক্রিয়া বলে জানান সচিব ইয়ামিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ভেনামী একটি নতুন প্রজাতি। এ জন্য আমরা সরাসরি চাষের অনুমোদন দিতে চাচ্ছি না। এটি পরিবেশ এবং অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পন্ন অন্য প্রজাতির উপর কি ধরণের প্রভাব ফেলে সেটি দেখার জন্য বিগত বছরের ন্যায় এ বছরও পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে দেখা হচ্ছে। ফলাফল পজেটিভ হলে তখন আমরা বিষয়টি ভেবে দেখবো। এ সময় বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান, বাগদা চিংড়ীর ন্যায় ভেনামীও একটি প্রজাতি। এটি আমাদের এখানে একেবারে নতুন। গত বছর থেকে বিএফআরআই এর লোনাপানি কেন্দ্রে এটি পরীক্ষামূলক চাষ হচ্চে। পরীক্ষামূলক চাষও গবেষনার অংশ। তবে বাগদাকে বাদ দিয়ে ভেনামী চাষের কোন পরিকল্পনা বা গবেষণা আমরা করছি না। মূলত ভেনামী আমাদের পরিবেশ এবং উৎপাদনের জন্য কতটা উপযোগী সেটি পরীক্ষামূলক চাষের মাধ্যমে দেখা হচ্ছে। দেখা হচ্ছে ভেনামী কোন জীবানু বহন করে কিনা। গত বছরের ফলাফল এবং এ বছরের ফলাফল নির্নয় করার পর যে কারিগরি কমিটি রয়েছে তাদের মতামতের উপর ভিত্তি করে মূল সিদ্ধান্ত নিবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মৎস্য অধিদপ্তরের মহা পরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হক, মৎস্য অধিদপ্তরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, খুলনার উপ-পরিচালক তোফাজউদ্দীন আহমেদ, লোপাকে’র কেন্দ্র প্রধান ও প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ লতিফুল ইসলাম, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম, সাইটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপ প্রকল্প পরিচালক সরোজ কুমার মিস্ত্রী, সাবেক জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রফুল্ল কুমার, বিএফএফইএ সভাপতি হুমায়ুন কবির, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা টিপু সুলতান, লোপাকে’র উর্দ্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা দেবাশীষ মন্ডল, হাশমি সাকিব, শরিফুল ইসলাম রুবেল, মতিয়ার রহমান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শাওন আহম্মেদ, মোঃ মাসুদুর রহমান, রাফিয়া আফরিন, শাহনাজ পারভীন, রিয়াজ মোর্শেদ রঞ্জু ও মোঃ আবু নাসের।
উল্লেখ্য, ভেনামী চিংড়ি চাষের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট লোনাপানি কেন্দ্রের ২.৪ হেক্টর আয়তনের ৫টি পুকুরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন মৎস্য অধিদপ্তরের অনুমোদন নিয়ে ২০২১ সাল থেকে পরীক্ষামূলক ভেনামী চিংড়ি চাষ করছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এমইউসি ফুড লিঃ।