UsharAlo logo
বুধবার, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানহীন খাদ্যে শিশু স্বাস্থ্যে ঝুঁকি

koushikkln
জুলাই ১৭, ২০২২ ১০:০১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

মো: আশিকুর রহমান : খুলনায় পাইকারি বাজারসহ স্থানীয় এলাকার পাড়া-মহল্লার মনহরি দোকানগুলোতে শিশুদেরকে চরম আসক্তি ও আকর্ষণ বাড়িয়ে তুলতে স্বল্প বিনিয়োগে অধিক লাভের আশায় বিক্রি হচ্ছে বিএসটিআইয়ের প্রতীক ব্যবহার করে বিভিন্ন বেনামী মানহীন শিশুখাদ্য। যার মধ্যে রয়েছে আর্কষনীয় মোড়কে বিভিন্ন ডিজাইনের চকলেট, চিপস, আচার, আইসবার, জুস, টিউবের তরলীকৃত চকলেট। ওইসব শিশুখাদ্যর গায়ে ব্যাচ নং, উৎপাদন, মেয়াদ বা খুচরা মূল্যেও লেখা নেই। পাশাপাশি গরমকে কেন্দ্র করে বিক্রি হচ্ছে বেনামী মোড়কে মানহীন আইসক্রিমও। ওইসব মানহীন আইসক্রিমে স্যাকারিন, নি¤œমানের কালার, সুইটিক্স ও ফ্লেভারসহ নানা রাসায়নিক প্রয়োগে তৈরী করা হয়।

মানহীন নিম্নমানের ও ভেজাল শিশুখাদ্য হাতের নাগালেই পাওয়া ফলে শিশুরা সকাল-সন্ধ্যা দৌঁড়-ঝাপ শুরু করেছে স্থানীয় দোকানগুলোতে। যা শিশুদের স্বাস্থ্য ও খাদ্য প্রতি অনিহা সৃষ্টি করছেঠ বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। নি¤œমানের খাদ্য বন্ধে জেলা প্রশাসন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বিএসটিআইসহ দপ্তরের ভেজালবিরোধী অভিযান চললেও থামছে না বাজারজাতকরণ বা বিক্রি। যে কারণে ওইসব শিশু খাদ্যে উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল। পাশাপাশি মানহীন ভেজাল ও নি¤œমানের শিশু খাদ্যে উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

নগরীর পাইকারী বাজারসহ শহরের স্থানীয় অঞ্চলে বিভিন্ন দোকানগুলোতে দেদারছে দেখা মিলছে, আকর্ষণীয় মোড়কে নানা ধরনের খেলনা ও স্টিকার বা অন্যকোন উপহার দিয়ে এই সকল নি¤œমানের ভেজাল মানহীন শিশুখাদ্যে বুক ফুলিয়ে বিক্রি হচ্ছে। নি¤œমানরে ওইসব খাবার আর উপহারের লোভে শিশুরা আসক্ত হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে খুলনা বড় বাজার, দৌলতপুর পাইকারী বাজার, ফুলবাড়ী পাইকারী বাজার, শিরোমনি পাইকারী বাজার, ফুলতলা পাইকারী বাজারসহ স্থানীয় এলাকা সোনাডাঙ্গা, নিরালা, রুপসা নতুনবাজার, বাস্তহারা কোলনী, খালিশপুর, বৈকালি, জোড়াগেট সিএনবি কোলনী, আলমনগর, পাবলা, ঋষিপাড়া, দেয়ানা, রেলিগেট, আড়ংঘাটা বাজার, শলূয়া বাজার, রংপুর, পাড়াহপুর, তেলিগাতি, কালিবাড়ী, গাজীর মোড়, সোনালীগেট, আটরা সহ বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাইকারী দোকান ও খুচরা দোকানে অতি সহজে পাওয়া যায় এই পণ্যগুলো। অল্প বিনিয়েগে লাভ বেশি তাই যেন ব্যবসায়ী মরিয়া এই শিশু খাদ্যে বিক্রিতে। স্কুল পড়–য়া ছাত্র-ছাত্রীর টিফিনের টাকা দিয়ে অবাদে স্কুল চত্ত্বর সম্মুখের দোকান থেকে কিনছে এসকল খাদ্য। ফলে সহজেই শিশুরা পেটের পীড়া বা ডায়রিয়া জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

৪র্থ শ্রেণির ছাত্র আরিকের বাবা জানান, ছেলেটি সারাক্ষণ দোকানমুখি। ভাত খাওয়ার প্রতি কোনো রুচিই নেই। দোকানের চকলেট, আইসক্রিম ও জুস, মামা, লিচুসহ প্রভৃতি খাবার খায়। হঠাৎ হঠাৎ করে পেটে ব্যাথা আর ও বমি করে।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অনুপ জানান, শিশুদের বাড়তি খাবারের প্রয়োজন আছে। কিন্তু বাজারের মানহীন খোলা খাবার না দিয়ে বাড়িতে তৈরি পুষ্টিকর খাদ্য শিশুদের খাওয়ানোর অভ্যাস করাতে হবে। বিশেষ কর শাক-সবজির প্রতি শিশুদের আগ্রহী করে তুলতে হবে। সে ক্ষেত্রে মায়েদের বেশ যতœশীল হওয়ার দরকার।

পথচারী হাবিব জানান, বাচ্চার জন্য বাজার থেকে গাভীর তরল দুধ কিনি। আমাদের নৈতিকতার এতই অবক্ষয় হয়েছে যে শিশু খাদ্যে ভেজাল দিতে মন কাঁপছে না। বাড়তি লাভের জন্য পানি মেশানোর পাশাপাশি ফ্যাট বাড়ানোর জন্য তেল ও ঘনত্ব বাড়ানোর জন্য পাউডার দুধও ব্যবহার করা হচ্ছে বলে শুনেছি।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এস এম আব্দুল ওহাবের নিকট এ ব্যাপারে জানতে কোনো খাদ্য ক্ষতিকারক কেমিক্যাল মেশানো হলে তা হার্ট, কিডনি, লেভারসহ স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। কেমিক্যাল সর্বদাই স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, অনুমোদনহীন, ভেজাল পণ্য তৈরির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে। ভেজাল ও অনুমোদনহীন ও খাবারের ফ্যাক্টরী বা কারখানার সত্যতা মিললে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।