UsharAlo logo
বুধবার, ৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হোক

usharalodesk
নভেম্বর ৫, ২০২৪ ১:১৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঊষার আলো রিপোর্ট :  কে হবেন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, আজ তা নির্ধারিত হওয়ার দিন। সারা বিশ্বের দৃষ্টি এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে। দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে সবসময়ই বিশ্ববাসীর কৌতূহল ও আগ্রহ থাকে।

তবে এবার কৌতূহল যেন একটু বেশি। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে আবারও একজন নারী-কমলা হ্যারিসের জন্য প্রথমবারের মতো হোয়াইট হাউজে প্রবেশের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত একজন অশ্বেতাঙ্গ। অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্যও আবার নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ এসেছে। বলা যায়, দুজনের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা সমান। সেক্ষেত্রে পপুলার ভোট নয়, ইলেকটোরাল ভোটেই নির্ধারিত হবেন প্রেসিডেন্ট। তাই নির্বাচনি ফলাফল ঘোষিত না হওয়া পর্যন্ত কৌতূহল নিয়ে অপেক্ষা করতে হবে বিশ্ববাসীকে।

রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প সাধারণভাবে অভিবাসনবিরোধী হিসাবে পরিচিত, যার বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও বহির্বিশ্বে। বিশেষত অভিবাসীদের দেশ হিসাবে পরিচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী মুসলমান, কৃষ্ণাঙ্গ ও মেক্সিকানসহ অভিবাসী জনগোষ্ঠী ট্রাম্পের বিজয় আকাঙ্ক্ষা করছে না বলেই প্রতীয়মান হয়। তার নারীবিদ্বেষী কিছু বক্তব্যও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে অতীতে। অন্যদিকে ফিলিস্তিন প্রশ্নে মার্কিন প্রশাসনের ভূমিকা ডেমোক্র্যাটদের ওপর জনমনে, বিশেষত মুসলমানদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে, যার প্রকাশ ঘটেছে দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশের মধ্য দিয়ে। ফিলিস্তিন ইস্যুতে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকানদের নীতি অনেকটা অভিন্ন হওয়ায় মনে করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমান ভোটারদের বড় একটি অংশ এবার ভোটদানে বিরত থাকবেন। নির্বাচনি ফলাফলে এসবের কী প্রভাব পড়ে, তা দেখার অপেক্ষায় আছি আমরা। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মার্কিন নাগরিকরা সাধারণত অভ্যন্তরীণ বিষয়কেই বেশি গুরুত্ব দেয়। নির্বাচনে এর বড় প্রভাব পড়ে। তা সত্ত্বেও এবারের নির্বাচনে ফিলিস্তিন ও অভিবাসী ইস্যুর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।

যিনিই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হোন-আমরা চাইব তার নীতি বিশ্বশান্তির অনুকূলে ভূমিকা রাখবে। বিশ্বব্যাপী মার্কিন নীতির প্রভাব সর্বজনবিদিত। যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার পালাবদলে পররাষ্ট্রনীতিতে কী পরিবর্তন ঘটবে, তা দেখার বিষয়। আমরা জানি, যুক্তরাষ্ট্রে সরকারের পরিবর্তন ঘটলেও মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে রাতারাতি বড় কোনো পরিবর্তন ঘটে না। দেশটির বৈদেশিক নীতি প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি পররাষ্ট্র বিভাগ, পেন্টাগন, ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কাউন্সিল, সর্বোপরি কংগ্রেসের ভূমিকার ওপর নির্ভরশীল। এটি এক মিশ্র প্রক্রিয়া। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে এবার বিশেষত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ক্ষেত্রে মার্কিন নীতিতে বড় পরিবর্তন ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। সেটি যদি এ যুদ্ধ বন্ধে সহায়ক হয়, তাহলে তা বিশ্বশান্তির অনুকূলে কাজ করবে বলা যেতে পারে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিদলীয় প্রেসিডেন্ট ব্যবস্থায় নির্বাচনি প্রচারণায় এক দলের প্রার্থী অপর দলের প্রার্থীর নীতির সমালোচনা করেন। গণমাধ্যমে সরাসরি বিতর্কে অবতীর্ণ হন। এ বিতর্ক যে কখনো ব্যক্তিগত আক্রমণের ঊর্ধ্বে থাকে না, তা নয়। তবে নির্বাচনটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়ে থাকে। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না, এটি আশা করা যায়। এর মাধ্যমে যে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে, তা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে, এটাই কাম্য।

ঊষার আলো-এসএ